এশিয়ান কাপের বাছাই পর্বে টিকে থাকার লড়াইয়ে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এক ম্যাচে মঙ্গলবার সিঙ্গাপুরের মুখোমুখি হতে চলেছে ভারতীয় দল (India vs Singapore)। তবে এই ম্যাচ শুধুই আর একটা ম্যাচ নয়, বরং অনেক কিছু প্রমাণ করার রয়েছে ভারতের জন্য। কারণ এটি জাতীয় দলের কোচ হিসাবে খালিদ জামিলের প্রথম ঘরের মাঠের ম্যাচ। সেইসঙ্গে এশিয়ান কাপের মূল পর্বে যাওয়ার আশাও অনেকটাই নির্ভর করছে এই লড়াইয়ের উপর।
গত ম্যাচে সিঙ্গাপুরের বিরুদ্ধে ১-১ গোলে ড্র করেই বাছাই পর্বে টিকে থাকার সম্ভাবনা বাঁচিয়ে রেখেছিল ভারত। তবে এই সম্ভাবনাকে বাস্তবে রূপ দিতে হলে মঙ্গলবার গোয়ার মাটিতে জয়ের বিকল্প কিছু ভাবার সুযোগ নেই সুনীল ছেত্রীদের কাছে। সেই উপলব্ধি থেকেই ম্যাচের আগে স্পষ্টভাবে জানিয়ে দিলেন কোচ খালিদ। এদিনের ম্যাচে রক্ষণাত্মক নয়, বরং শুরু থেকেই আক্রমণাত্মক ফুটবল খেলতে চায় তাঁর দল।
জাতীয় দলের দায়িত্ব নেওয়ার পর প্রথমবার দেশের দর্শকদের সামনে খেলতে নামার আগে খালিদ বলেন, “এটা আমাদের কাছে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচ। আমরা ইতিবাচক ফল চাই এবং সেভাবেই পরিকল্পনা করছি। শুরু থেকেই আক্রমণাত্মক মনোভাব নিয়ে নামব।”
খালিদের পরিকল্পনায় এই ম্যাচে দুই নতুন মুখ জায়গা করে নিয়েছেন। মোহনবাগানের অভিজ্ঞ ডিফেন্ডার শুভাশীষ বোস এবং উদীয়মান মিডফিল্ডার আপুইয়া। সন্দেশ ঝিঙ্গান আগের ম্যাচে লাল কার্ড পাওয়ায় তিনি এই ম্যাচে খেলতে পারবেন না। ফলে রক্ষণে অভিজ্ঞতা বাড়াতেই শুভাশীষকে দলে নিয়েছেন খালিদ। তিনি জানান, “আমার দলে কোনও নির্ভরযোগ্য লেফট ব্যাক ছিল না। সেই কারণেই শুভাশীষকে ডাকা হয়েছে। হ্যাঁ, একটু আগে ডাকলে ভালো হত, কিন্তু এখন যা পরিস্থিতি, তাতে ওর প্রয়োজন ছিল।”
প্রতিযোগিতার মঞ্চে যেখানে প্রত্যাশার চাপ থাকে সবসময়, সেখানে অতীতে কাফা নেশনস কাপে তৃতীয় হওয়ার পর দলের উপর প্রত্যাশা আরও বেড়ে গিয়েছে। তবে খালিদের বক্তব্য, এই চাপের মধ্যেই নিজেদের সেরা ফুটবল খেলাই তাঁদের লক্ষ্য। তিনি বলেন, “ফলাফল সবসময় প্রত্যাশার চাপ তৈরি করে। তবে আমাদের মনোযোগ শুধু আগামী ম্যাচেই। আমরা ইতিবাচক মানসিকতা নিয়ে খেলব এবং নিজেদের সেরাটা দেব।”
এদিকে, সুনীল ছেত্রী এখনও গোলের খাতায় নাম লেখাতে না পারলেও তাঁর উপর আস্থা হারাননি খালিদ। বরং দলের এই সিনিয়র খেলোয়াড়কে সিঙ্গাপুর ম্যাচের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ মনে করছেন কোচ। সুনীল প্রসঙ্গে বলেন, “ওকে এখন দরকার। ম্যাচের পর পরবর্তী পরিকল্পনা নেওয়া যাবে। কিন্তু এই ম্যাচে ওর অভিজ্ঞতা এবং উপস্থিতি গুরুত্বপূর্ণ।”
প্রশ্ন উঠেছে, বাকি থাকা তিনটি ম্যাচে কি ভারত পরবর্তী রাউন্ডে পৌঁছাতে পারবে? কোচ খালিদ খুব সচেতনভাবে সেই বিষয়ে এখনই মন্তব্য করতে নারাজ। তাঁর সোজাসাপ্টা উত্তর, “অন্য ম্যাচ নিয়ে এখন ভাবছি না। আপাতত এই ম্যাচে জয়ই আমাদের একমাত্র লক্ষ্য।”
এশিয়ান কাপের মতো টুর্নামেন্টে অংশগ্রহণ করা শুধুমাত্র ফুটবলের মান বাড়ানোর নয়, দেশের ফুটবল সংস্কৃতিকে আন্তর্জাতিক মঞ্চে পৌঁছে দেওয়ারও অন্যতম মাধ্যম। সেই লক্ষ্যেই খালিদ জামিল এবং তাঁর দল মঙ্গলবার ঘরের মাঠে নামবে। সমর্থকদের সামনে জয় তুলে ধরতে পারলে তা হবে শুধু এই দলের নয়, গোটা দেশের ফুটবলপ্রেমীদেরও বড় জবাব।