সুপার কাপের মঞ্চ ফের উত্তেজনায় টগবগ করছে। রবিবার গোয়ার মাঠে মরশুমের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে মুখোমুখি ইস্টবেঙ্গল (East Bengal) ও এফসি গোয়া। ২০২৪ সালের পর লাল-হলুদের হাতে ট্রফি উঠবে কি? জানার অপেক্ষায় সমর্থকরা। আর সেই লক্ষ্যের দিকেই দৃঢ় পদক্ষেপ নিয়ে এগোতে চাইছে দল। ফাইনালের আগেই স্পষ্ট হুঁশিয়ারি শোনালেন সহকারী কোচ বিনো জর্জ, “আমরা এখানে শুধু অংশ নিতে আসিনি, এসেছি চ্যাম্পিয়ন হতে।”
গোয়ার ঘরের মাঠ, স্টেডিয়াম ভরিয়ে তুলবে স্বাগতিক দর্শকদের গর্জন। তবে তাতে দমে যাওয়ার পাত্র নয় ইস্টবেঙ্গল। সেমিফাইনালে যেমন উপস্থিত ছিলেন লাল-হলুদ সমর্থকরা, ফাইনালেও থাকবে তাঁদের উপস্থিতি। যদিও সংখ্যায় কম থাকতে পারেন, তবু তাঁদের উচ্ছ্বাস ও সমর্থন দলের অন্যতম শক্তি বলে মনে করেন কোচিং স্টাফরা।
বিনো জর্জ জানান, “ওডিশায় শেষ ফাইনালে প্রচুর সমর্থক পেয়েছিলাম। এবার সে তুলনায় কম হবেই। কিন্তু সেসব না ভেবে আমাদের লক্ষ্য একটাই, ফাইনালে নিজেদের সেরাটা উপহার দেওয়া।”
সাংবাদিক বৈঠকে সহকারী কোচের সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন স্প্যানিশ মিডফিল্ডার সাউলক্রেসপোও। বিপক্ষ দলে আছেন তাঁর দেশবাসী বোরহা হেরেরা। দু’জনের ভালো বন্ধুত্ব থাকলেও ফাইনালের লড়াইয়ে বন্ধুত্বের জায়গা নেই, জানিয়ে দিলেন ক্রেসপো। তিনি বলেন, “খেলা শুরু হলে আর কেউ আমার বন্ধু নয়। মাঠে প্রতিটাই লড়াই।”
দলের ভেতরের রসায়ন নিয়েও মুখ খোলেন ক্রেসপো। তিনি যোগ করেন, “রশিদ আর মিগুয়েলের সঙ্গে আমার অসাধারণ সম্পর্ক। মাঠের বাইরে আমরা একসঙ্গে সময় কাটাই, খাবার খাই, ঘুরে বেড়াই। এই বন্ধুত্বই মাঠে আমাদের খেলায় ছাপ ফেলে।”
গোয়ার কোচ মানোলো মার্কুয়েজ ইস্টবেঙ্গলের প্রতি যথেষ্ট শ্রদ্ধা দেখালেও তাঁর দল যে কঠিন চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিতে প্রস্তুত, তা স্পষ্ট। বিশেষ করে ইস্টবেঙ্গলের মাঝমাঠ আটকাতে আলাদা পরিকল্পনা সাজিয়েছেন তিনি। মার্কুয়েজের বলেন, “ছয় বছর ধরে ভারতে আছি। রবি ফাওলারের সময়ে ইস্টবেঙ্গল যে অবস্থায় ছিল, এখন অনেক উন্নতি করেছে। ওদের মাঝমাঠ শক্তিশালী। সেটা ভাঙতেই বিশেষ পরিকল্পনা রয়েছে। আশা করছি দারুণ লড়াই হবে।”
পঞ্জাবের বিরুদ্ধে ইস্টবেঙ্গলের পারফরম্যান্স নিখুঁত না হলেও ফাইনালে ওঠা যে তাঁদের যোগ্যতার প্রমাণ, সেটাও স্বীকার করেন গোয়ার কোচ। দুই মরশুমের চ্যাম্পিয়ন এফসি গোয়া এবার চাইছে ট্রফির হ্যাটট্রিক। অন্যদিকে, দীর্ঘদিনের অপেক্ষা শেষে ইস্টবেঙ্গল চায় ইতিহাস পুনরাবৃত্তি করতে। দু’দলের রণসংকেতই স্পষ্ট ফাইনাল হবে তুল্যমূল্য লড়াই, প্রতিটি মিনিটে থাকবে উত্তেজনার বিস্ফোরণ।
সমর্থকদের মুখে হাসি ফোটাতে, অতীতের গৌরব ফিরিয়ে আনতে এবং আরও একবার নিজেদের প্রমাণ করতে মরিয়া লাল-হলুদ ব্রিগেড। এখন অপেক্ষা কেবল গোয়ার রোববার সন্ধ্যার, যেখানে নির্ধারিত হবে মরশুমের সুপার কাপের নবনির্মিত চ্যাম্পিয়ন কে।
