আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবের মঞ্চ থেকে বৃহস্পতিবার আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন হয় নবনির্মিত বিবেকানন্দ হকি স্টেডিয়ামের। শুক্রবার সেই অত্যাধুনিক স্টেডিয়াম পরিদর্শনে এলেন রাজ্যের ক্রীড়া মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস (Aroop Biswas)। নতুন মাঠে এসে হকি স্টিক হাতে নিয়ে নিজেই নেমে পড়েন ক্রীড়া মন্ত্রী। শুধু মাঠ পরিদর্শন নয়, কলকাতা লিগের ম্যাচ নিয়েও ফুটবলপ্রেমীদের (Football) সুখবর দিলেন তিনি।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উদ্যোগে তৈরি এই হকি স্টেডিয়ামটি গড়ে উঠেছে আন্তর্জাতিক মানের সিন্থেটিক টার্ফ দিয়ে। স্টেডিয়ামটিতে রয়েছে অস্ট্রেলিয়ান আদলে আধুনিক আর্দেন গ্যালারি, ডেডিকেটেড ওয়ার্ম-আপ জোন, দুটি সম্পূর্ণ সজ্জিত ড্রেসিং রুম, ভিআইপি ও ভিভিআইপি বক্স, ভিআইপি লাউঞ্জ, আম্পায়ার ও ভিডিও আম্পায়ার রুম সহ একাধিক আধুনিক সুবিধা। এছাড়াও রয়েছে ডোপিং কন্ট্রোল ও মেডিক্যাল রুম, মিক্সড জোন, সম্প্রচার ও ভিডিও বিশ্লেষণ কেন্দ্র, ভেন্যু অপারেশন সেন্টার এবং প্রেস কর্নার। মোট ২০,০০০ কোটি টাকার ব্যয়ে তৈরি হয়েছে এই আধুনিক ক্রীড়াঙ্গন।
স্টেডিয়াম ঘুরে দেখে ক্রীড়া মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস বলেন, “মুখ্যমন্ত্রীর উদ্যোগে আমাদের রাজ্যে দুটি হকি মাঠ তৈরি হয়েছে। একটি ডুমুরজলায় এবং অন্যটি যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গনের চত্বরে। আগামী দিনে একটি হকি একাডেমি গড়ে তোলার পরিকল্পনাও রয়েছে। দেশের অন্যতম সেরা স্টেডিয়াম এটি। আমি আশা করছি, ভবিষ্যতে এখানেই ভারতীয় দলের আন্তর্জাতিক ম্যাচ হবে।”
তবে শুধু পরিকাঠামোর গর্ব নয়, বাংলার বঞ্চনার কথাও তুলে ধরলেন তিনি। সুর চড়িয়ে ক্রীড়া মন্ত্রী বলেন, “রাজনৈতিক কারণে এখন বাংলায় ম্যাচ দেওয়া হয় না। বাংলার প্রতি যত বঞ্চনা হবে, ততই বাঙালি আরও শক্তভাবে উঠে দাঁড়াবে।”
শনিবার এই মাঠেই শুরু হতে চলেছে বেটন কাপ। এবছর হকি প্রতিযোগিতায় আর ব্যবহার হবে না ইস্টবেঙ্গল, মোহনবাগান ও মহামেডান মাঠ। ক্রীড়া মন্ত্রী জানান, “এবছর আমরা তিন প্রধানের মাঠ বাদ দিয়েই হকির টুর্নামেন্টগুলো করব। আলোচনা হয়েছে এবং আমাদের লক্ষ্য কলকাতার ফুটবলকে আবার শহরের মাঠে ফিরিয়ে আনা।”
অরূপ বিশ্বাস আরও বলেন, “আগামী মরশুম থেকে কলকাতা লিগের খেলা হবে কলকাতার মাঠেই। জেলা থেকে শহরে ফিরে আসবে খেলার আবহ।” নতুন হকি স্টেডিয়ামের উদ্বোধনের মধ্য দিয়ে পশ্চিমবঙ্গের ক্রীড়া মানচিত্রে যুক্ত হলো আরও এক গৌরবের অধ্যায়। মুখ্যমন্ত্রী ও ক্রীড়া দফতরের উদ্যোগে এই স্টেডিয়াম শুধু আন্তর্জাতিক মানের পরিকাঠামো নয়, বাংলার খেলাধুলায় নবজাগরণের প্রতীক হিসেবেও প্রতিষ্ঠিত হতে চলেছে।


