ফুটবলকে বিদায় জানিয়েছেন অরিন্দম, সোশ্যাল সাইটে বিশেষ পোস্ট এই তারকার

arindam-bhattacharya-announces-retirement-emotional-post-on-social-media

গত শনিবার নিজের ফুটবল ক্যারিয়ারের শেষ ম্যাচ খেলে ফেলেছেন অরিন্দম ভট্টাচার্য (Arindam Bhattacharya)। প্রায় দেড় যুগের ও বেশি সময় ধরে তাঁর দক্ষতার সাক্ষী হয়ে উঠেছিল দেশের ক্লাব ফুটবল। অবশেষে ইন্টার কাশীর হয়ে আইলিগ জয়ের পর এবারের সুপার কাপে দলের হয়ে গ্ৰুপ পর্বের শেষ ম্যাচ খেলে ফুটবলকে বিদায় জানিয়ে দিলেন দুই প্রধানে খেলা এই বাঙালি গোলরক্ষক। একটা সময় টাটা ফুটবল অ্যাকাডেমি থেকে হাতেখড়ি হয়েছিল এই ফুটবলারের। তারপর সাইয়ের হয়ে নিজেকে তৈরি করেছেন যথেষ্ট নৈপুণ্যের সাথে। তারপর গোয়ান ক্লাব চার্চিল ব্রাদার্সের হয়ে পেশাদার ফুটবলে আত্মপ্রকাশ।

Advertisements

পরবর্তীতে যোগদান করেছিলেন শক্তিশালী ফুটবল দল মোহনবাগান সুপার জায়ান্টে। সেখান থেকেই সকলের নজরে আসা।‌ পরের মরসুমে যদিও ফিরে গিয়েছিলেন চার্চিলে। সেখান থেকে এফসি পুনে সিটিতে যোগদানের মধ্য দিয়ে প্রথমবারের মতো আইএসএলে আত্মপ্রকাশ ঘটেছিল এই গোলরক্ষকের (Arindam Bhattacharya)। পরের সিজনেই ভারত এফসির পাশাপাশি স্পোর্টিং ক্লাব গোয়ার হয়ে আইলিগে দাপুটে পারফরম্যান্স করার পর পুনরায় ফিরে এসেছিলেন পুনে শিবিরে। সেখানে খুব একটা সুযোগ না পাওয়ায় যোগ দিয়েছিলেন সুনীল ছেত্রীদের বেঙ্গালুরু এফসিতে। পরবর্তীতে তাঁকে দলে টেনে নেয় রনবীর কাপুরের মুম্বাই সিটি এফসি। এরপর থেকেই প্রথম ডিভিশন লিগে বজায় থেকেছে তাঁর ছন্দ। মুম্বাই থেকে তাঁকে দলে এনেছিল এটিকে। সেখানে থেকেই নর্থইস্ট ও ইস্টবেঙ্গল ঘুরে বছর তিনেক আগে যোগ দিয়েছিলেন ইন্টার কাশীতে।

   

ফুটবল থেকে অবসর নেওয়ার পর সোশ্যাল সাইটে নিজের ক্যারিয়ারের গল্প শোনান এই গোলরক্ষক।যেখানে উঠে আসে দুই প্রধানে খেলার পাশাপাশি বাইচুং ভুটিয়ার মতো নক্ষত্রের সাথে দেখা করার মত‌ একাধিক বিষয়। তিনি লেখেন, ‘ ১৩ বছর বয়সে, আমি কেবল মোহনবাগান, ইস্টবেঙ্গলের হয়ে খেলতে চেয়েছিলাম এবং একদিন ভাইচুং ভুটিয়ার মুখোমুখি হতে চেয়েছিলাম। এটাই ছিল স্বপ্ন। তখন আমি যা জানতাম না তা হল ফুটবল আমাকে কতদূর নিয়ে যাবে। দুই দশক পরে, আমি ট্রফি, যুদ্ধ এবং গল্প বলার বিষয়গুলির দিকে ফিরে তাকাই। কিন্তু সবকিছুর চেয়েও বেশি আমি স্মৃতি, শিক্ষা, বন্ধুত্ব এবং কৃতজ্ঞতা দেখতে পাই যা চিরকাল আমার সাথে থাকবে।’

Advertisements

আরও বলেন, ‘ সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল আমার শরীর আমাকে বলে যে অবশেষে থামার সময় এসেছে, কিন্তু আমার হৃদয় সর্বদা সেই গোলপোস্টের ভিতরে বেঁচে থাকবে। বেশকিছু চেনা শব্দ ও চিৎকার মিস করব যেগুলি মা তাঁর বোনদের সাথে বসে দেখার সময় শুনে বিরক্ত হতেন, সম্ভবত কিছুটা প্রদর্শন করতেন। কিন্তু বাবা শুধু হেসে বলতেন, “ম্যাচ জেতার জন্য যা প্রয়োজন তাই করো।” যদি তারা এখন এখানে থাকতো, তাহলে যথেষ্ট গর্বিত হতেন। আমার সতীর্থরা যারা বর্তমানে বিভিন্ন দলে খেলছে, কোচরা যারা আমাকে গড়ে তুলেছেন, সমর্থকরা যারা আমাকে সমর্থন করেছেন এবং আমার পরিবার যারা আমার পাশে দাঁড়িয়েছে, তাঁদের সকলের জন্য ধন্যবাদ। আর আমার স্ত্রী, ব্লসম, তোমার ভালোবাসা এবং বিশ্বাস আমার সবচেয়ে বড় শক্তি। আমি ১৪ বছর বয়সে কলকাতা ময়দানে প্রবেশ করেছিলাম, শুধু একরাশ স্বপ্ন নিয়ে। আজ, আমি একই হাসি, কৃতজ্ঞতায় ভরা হৃদয়,আর গল্প নিয়ে বিদায় নিচ্ছি যা সারা জীবন থাকবে। ধন্যবাদের সাথে বিদায় জানাচ্ছি।’