ভারতীয় ফুটবলের (Indian Football) বর্তমান পরিস্থিতি আরও একবার স্পষ্ট হয়ে গেল মঙ্গলবারের ফেডারেশন-ক্লাব বৈঠকে। ঢাকঢোল পিটিয়ে যে বৈঠকের ডাক দেওয়া হয়েছিল, দিনের শেষে তা কার্যত পরিণত হল ‘নামমাত্র’ আলোচনায়। মূল প্রশ্ন ভারতীয় ফুটবলের ভবিষ্যৎ কি আদালতের নির্দেশের অপেক্ষায় ঝুলে থাকবে?
ফেডারেশনের ডাক সত্ত্বেও বৈঠকে যোগ দেয়নি মোহনবাগান, ইস্টবেঙ্গলের মতো দেশের শীর্ষ ক্লাবগুলি। জানা গিয়েছে, বহু ক্লাব আগেই ফেডারেশনকে জানিয়েছিল যে বর্তমান পরিস্থিতিতে সরাসরি বৈঠকে হাজির থাকা তাদের পক্ষে সম্ভব নয়। অনলাইন যোগদানের ব্যবস্থার অনুরোধও জানানো হয়েছিল।
ফেডারেশন যদিও ভার্চুয়াল ব্যবস্থা করে, কিন্তু সময়মতো সেই তথ্য সব ক্লাবের কাছে পৌঁছয়নি। ফলত বেশ কয়েকটি দল বৈঠকেই অংশ নেয়নি। এ থেকেই স্পষ্ট, প্রস্তুতি ও যোগাযোগ দুটিতেই ঘাটতি থাকছে ফেডারেশনের পক্ষ থেকে।
বৈঠকে আলোচনার পরিমাণ ছিল নিতান্তই সীমিত। ফেডারেশন সভাপতি কল্যাণ চৌবে ক্লাবগুলিকে জানান, আইএসএলের স্বত্ব কেনার জন্য কোনও সংস্থা টেন্ডার জমা দেয়নি। এই তথ্য ইতিমধ্যেই সুপ্রিম কোর্টকে জানানো হয়েছে। আগামী বৃহস্পতিবার মামলার শুনানি। আদালতের নির্দেশ ছাড়া কোনও পদক্ষেপ নেওয়ার ক্ষমতা নেই বলেই স্পষ্ট জানিয়ে দিলেন সভাপতি। অর্থাৎ, ভারতীয় ফুটবলের ভবিষ্যৎ এখন বিচার বিভাগের হাতে।
এর আগের ভার্চুয়াল বৈঠকে হায়দরাবাদ, এফসি গোয়া-সহ কয়েকটি ক্লাব জানিয়েছিল ফেডারেশন যদি নিজের উদ্যোগে লিগ পরিচালনা করতে চায়, তবে সম্প্রচার ব্যয় বাবদ ১৫–২০ কোটি টাকা তারা তুলতে প্রস্তুত। মঙ্গলবারের বৈঠকেও একই প্রস্তাব আবার শোনা গেল বেঙ্গালুরু এফসির পক্ষ থেকে। তারা জানায়, প্রয়োজনে ক্লাবগুলি মিলেই লিগ পরিচালনার ব্যয় বহন করতে রাজি। তবুও সভাপতি কল্যাণ চৌবে স্পষ্ট করে দেন, আদালতীয় প্রক্রিয়া শেষ না-হওয়া পর্যন্ত কোনও সিদ্ধান্তে পৌঁছনোর প্রশ্নই ওঠে না।
আইএসএলের ভবিষ্যৎ, ফেডারেশনের প্রশাসনিক ক্ষমতা, বাণিজ্যিক স্বত্ব সব মিলিয়ে এক জটিল অবস্থার মুখে দাঁড়িয়ে ভারতীয় ফুটবল। ক্লাবগুলির স্পষ্ট মতামত রয়েছে, আর্থিক সহযোগিতার প্রস্তুতিও আছে। তবুও সিদ্ধান্ত আটকে আছে আদালতের নির্দেশে।
সব নজর এখন বৃহস্পতিবারের দিকে। সুপ্রিম কোর্ট কী বলে, সেই দিকেই তাকিয়ে ক্লাব, ফেডারেশন ও গোটা ফুটবল সম্প্রদায়। ফুটবলের মাঠে প্রতিদ্বন্দ্বিতা যতই হোক, প্রশাসনিক গোলযোগের এই ম্যাচে সবাই একই দলে ‘সমাধানের অপেক্ষায়’।
