প্রস্তুতিতে ধাক্কা ভারতের, থাইল্যান্ডের বিরুদ্ধে হারের স্বাদ সুনীলদের

৪ জুন থাইল্যান্ডের থাম্মাসাত স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত ফিফা আন্তর্জাতিক প্রীতি ম্যাচে (FIFA International Friendly) ভারতীয় ফুটবল দল (Indian Football Team) ২-০ গোলে হারিয়ে দিল থাইল্যান্ড (Thailand)।…

Indian Football Team coach Manolo Marquez confirms 28 member Blue Tigers

৪ জুন থাইল্যান্ডের থাম্মাসাত স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত ফিফা আন্তর্জাতিক প্রীতি ম্যাচে (FIFA International Friendly) ভারতীয় ফুটবল দল (Indian Football Team) ২-০ গোলে হারিয়ে দিল থাইল্যান্ড (Thailand)। ম্যাচের দুই অর্ধে থাইল্যান্ডের দুই গোল ভারতের রক্ষণভাগ ও আক্রমণভাগের দুর্বলতা প্রকাশ করে দিল। বেঞ্জামিন ডেভিস ও পরামেত আর্জভিলাইয়ের চোখ ধাঁধানো দুটি গোল মানোলো মার্কুয়েজের (Manolo Marquez) মান দলের জন্য বড় ধাক্কা হয়ে দাঁড়াল।

প্রথমার্ধের হতাশাজনক শুরু

   

ম্যাচের শুরু থেকেই ভারতের রক্ষণভাগ ছিল বেশ অগোছালো। ৮ মিনিটে থাইল্যান্ডের প্রথম গোলটি আসে, ডেভিস বক্সের ভেতর থেকে একটি নিখুঁত শটে গোল করেন। তাকে বল সরবরাহ করেছিলেন তরুণ ফুটবলার কোরাবিচ তাসা। ডেভিস, যিনি ইংল্যান্ডের ফুলহ্যামের হয়ে খেলেন, তাঁর এই গোল ছিল আন্তর্জাতিক ম্যাচে সপ্তম ম্যাচে চতুর্থ গোল, যা তাঁর কার্যকারিতা স্পষ্ট করে।

ভারত প্রথমার্ধে কোনো বড় সুযোগ তৈরি করতে পারেনি, তবে মাঝেমধ্যে আশিকে কুরুনিয়ানের কয়েকটি দৌড় ও লিস্টন কোলাকোর ক্রস কিছুটা প্রাণ ফিরিয়েছিল ভারতের আক্রমণে। ২৪ মিনিটে একটি হেডার থেকে সুযোগ পান সুনীল ছেত্রী, কিন্তু থাইল্যান্ড গোলরক্ষক অনুয়িন সময়মতো সেই বল ধরে ফেলেন। প্রথমার্ধের শেষ মুহূর্তে কোলাকো গোলের একদম সামনে থেকে শট নেন, কিন্তু থাইল্যান্ডের কিপার বড়সড় সেভ করেন।

দ্বিতীয়ার্ধে আশার ঝলক, তবে ফলাফল এক

দ্বিতীয়ার্ধে ভারত কিছুটা আক্রমণাত্মক রূপ নেয়। ৪৮ মিনিটে ছেত্রী পেনাল্টির আবেদন জানান বলিনির চ্যালেঞ্জে পড়ে গিয়ে, কিন্তু রেফারি তা উড়িয়ে দেন। এরপর কোলাকোর একটি ফ্রিকিক ও অনোয়ার আলির হেড থেকে কিছু সুযোগ তৈরি হয়, যদিও অফসাইডের কারণে গোল হয়নি।

৫৯ মিনিটে আসে ম্যাচের দ্বিতীয় ও ফয়সালাকারী গোল। থাইল্যান্ডের একটি দ্রুত কাউন্টার-অ্যাটাক থেকে ডেভিস বল বাড়ান আর্জভিলাইকে। ভারতীয় ডিফেন্ডার অভিষেক তেকচামকে কাটিয়ে তিনি ডান পায়ের একটি দুর্দান্ত কার্লিং শটে বল জড়ান জালে। বল পোস্টে লেগে গোল হওয়ার আগে কাইথের কিছুই করার ছিল না।

পরিস্থিতি আরও জটিল

ভারত দ্বিতীয়ার্ধে বেশ কয়েকটি পরিবর্তন আনে ছাংতে, ব্র্যান্ডন, প্রভু, সুহেলরা মাঠে নামেন। তবে গোলের সামনে স্নায়ুচাপ ও দুর্বল ফিনিশিং তাদের ব্যর্থ করে তোলে। ছাংতে ৮০ মিনিটে একটি সুযোগ মিস করেন, যেখানে বল গোলপোস্টের বাইরে চলে যায়। আশিক কুরুনিয়ানও দ্বিতীয়ার্ধে ভালো দৌড় দিয়েও গোলের জোগান দিতে ব্যর্থ হন।

Advertisements

রক্ষণভাগেও সমন্বয়ের অভাব দেখা যায় অনোয়ার আলি একবার নিশ্চিত গোল রুখলেও বাকি সময়ে ভারতীয় ডিফেন্স থাইল্যান্ডের গতি ও পাসিংয়ের সঙ্গে খাপ খাওয়াতে পারেনি।

এগোতে হবে অনেক দূর

এই হারে ভারতের কোচ মানোলো মার্কুয়েজের দ্বিতীয় ম্যাচেও জয় অধরা রইল। যদিও একটি প্রীতি ম্যাচ, তবুও ২০২৭ সালের এএফসি এশিয়ান কাপের প্রস্তুতির প্রেক্ষাপটে এই হার ভারতীয় ফুটবল দলের জন্য সতর্কবার্তা স্বরূপ।

খেলোয়াড়দের মাঝে অভিষেক তেকচাম ও নিখিল প্রভু তাদের আন্তর্জাতিক অভিষেক ঘটান। তাদের পারফরম্যান্সে আত্মবিশ্বাস দেখা গেলেও, অভিজ্ঞতা ও ধারাবাহিকতার অভাব ছিল চোখে পড়ার মতো।

আগামী ১০ জুন ভারত হংকংয়ের বিরুদ্ধে খেলবে তাদের এশিয়ান কাপ যোগ্যতা অর্জনের ম্যাচ। এই হারের পর দলের মধ্যে একটি আত্মসমীক্ষার প্রয়োজন, বিশেষ করে রক্ষণ ও গোলের সুযোগ কাজে লাগানোর বিষয়ে।

ভারতীয় ফুটবলের জন্য সামনে দীর্ঘ পথ পাড়ি দেওয়ার আছে। তবে তরুণ প্রতিভা ও নতুন কোচের অধীনে যদি ধারাবাহিকতা আনা যায়, তাহলে আগামীদিনে আরও প্রতিযোগিতামূলক পারফরম্যান্স আশা করা যেতেই পারে।