ইন্ডিয়ান সুপার লিগের (ISL) রবিবাসরীয় লড়াইয়ে এফসি গোয়া (FC Goa) বনাম ইস্টবেঙ্গল এফসি (East Bengal FC)ম্যাচের মধ্যে দ্বৈরথ নিয়ে উত্তেজনা রয়েছে যথেষ্ট। এই ম্যাচে তিন পয়েন্ট সংগ্রহ করে লিগ টেবিলের দ্বিতীয় স্থানে উঠে আসাই লক্ষ্য এফসি গোয়ার। অন্যদিকে ইস্টবেঙ্গল এই মুহূর্তে রয়েছে টেবিলের একাদশতম স্থানে।
মানোলো মার্কুয়েজের দল বর্তমানে ১৫ ম্যাচের মধ্যে ৭টি জিতে এবং ৬টিতে ড্র করে ২৭ পয়েন্ট পেয়ে টেবিলের তৃতীয় স্থানে রয়েছে। তবে, টেবিলের শীর্ষে ওঠার জন্য মরিয়া তারা। একইসঙ্গে প্রতিপক্ষ তথা কলকাতা ময়দানের প্রধান ইস্টবেঙ্গলের গত দুই ম্যাচে পারফরম্যান্স ছিল হতাশাজনক। তারা ১৫ ম্যাচে ১৪ পয়েন্ট নিয়ে তারা টেবিলের ১১ নম্বরে অবস্থান করছে।
এফসি গোয়া গত পাঁচ ম্যাচে তিনটি ড্র করলেও, তারা এখনও প্লে-অফে যাওয়ার সম্ভাবনাকে উজ্জীবিত রাখতে চায়। তাদের কোচ মানোলো মার্কুয়েজ জানিয়েছেন, “প্রতিটি ম্যাচই খুব কঠিন। আমরা এমন এক সময়ে আছি যেখানে পয়েন্ট সংগ্রহ করা কঠিন হয়ে পড়েছে। তবে, এটা ফুটবল। আমাদের নিজেদের প্রতি মনোযোগ দিতে হবে।” ইস্টবেঙ্গলের বিপক্ষে জিততে না পারলে তাদের শীর্ষে উঠতে বেশ বাধা পেতে হতে পারে। সেজন্য তারা নিজেদের সেরা পারফরম্যান্স দেখানোর জন্য প্রস্তুত।
এদিকে, ইস্টবেঙ্গল কোচ অস্কার ব্রুজোর মতে, দলের অবস্থা ধীরে ধীরে উন্নতির দিকে যাচ্ছে। তিনি বলেন, “দল ধীরে ধীরে ভালো হয়ে উঠছে। আমাদের অবশ্যই সেই ভিত্তি খুঁজে বের করতে হবে যা ইস্টবেঙ্গলকে তাদের সেরা অবস্থায় ফিরিয়ে আনতে সাহায্য করবে।” গত কিছু ম্যাচে তাদের পারফরম্যান্স মিশ্রিত হলেও, একাধিক চোট এবং নিষেধাজ্ঞার কারণে দলের খেলোয়াড়রা পূর্ণ শক্তিতে মাঠে নামতে পারছে না। তবে, ব্রুজো আশাবাদী যে দল ঘুরে দাঁড়াতে পারবে।
ইস্টবেঙ্গল এই মরসুমে সবচেয়ে কম গোল করা দলগুলোর মধ্যে একটি। তারা মোট ১২৬টি গোলের সুযোগ তৈরি করেছে, যা অন্য দলগুলোর তুলনায় অনেক কম। এফসি গোয়ার সঙ্গে তুলনা করলে তাদের গোলের সুযোগের সংখ্যা ২৬ কম। এই পরিসংখ্যান বলছে যে ইস্টবেঙ্গল এখনও গোলের ক্ষেত্রে তেমন কোনও ধারাবাহিকতা দেখাতে পারছে না। গত পাঁচ ম্যাচে তাদের দুটি জয় থাকলেও, তাদের শক্তি কখনওই ধারাবাহিক ছিল না।
প্লে-অফের স্বপ্ন বাঁচিয়ে রাখতে গেলে, ইস্টবেঙ্গলের সামনে কঠিন পরীক্ষা। আর সেই পরীক্ষায় তাদের জয় ছাড়া কোনো বিকল্প নেই। এফসি গোয়ার বিরুদ্ধে জয় পেতে গেলে তাদের আক্রমণভাগকে শক্তিশালী করতে হবে এবং রক্ষণভাগে আরও সতর্ক থাকতে হবে। এমন পরিস্থিতিতে কোচ অস্কার ব্রুজো হয়তো নতুন কিছু কৌশল প্রয়োগ করতে পারেন যাতে তারা ম্যাচে কার্যকরী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারে।
এফসি গোয়া অবশ্যই এখন পর্যন্ত সফল একটি দল। তাদের কোচ মানোলো জানান, “আমরা জানি ইস্টবেঙ্গল শক্তিশালী দল। তারা অবশ্যই আমাদের জন্য এক চ্যালেঞ্জ। তবে, আমরা জানি কীভাবে ম্যাচটি জিততে হবে এবং আমরা সেই লক্ষ্য নিয়েই মাঠে নামব।” গত কিছু ম্যাচে তাদের ফলাফল অনিশ্চিত হলেও, তাদের দলগত পারফরম্যান্স তাদের সেরা তিনে থাকা নিয়ে কোনো সন্দেহ নেই।
এফসি গোয়া এবং ইস্টবেঙ্গলের মধ্যে পেছনে ফিরে দেখলে, দেখা যায় যে তারা মোট নটি ম্যাচ খেলেছে। এর মধ্যে এফসি গোয়া ছটি ম্যাচ জিতেছে, এবং দুটি ম্যাচ ড্র হয়েছে। ইস্টবেঙ্গল শুধুমাত্র এক ম্যাচে জয়ী হতে পেরেছে। অতএব, ইতিহাস অনুযায়ী, এফসি গোয়ার পক্ষেই জেতার সম্ভাবনা বেশি। এই ম্যাচটি শুধুমাত্র তিন পয়েন্টের জন্য নয়, বরং এটি ইস্টবেঙ্গলের প্লে-অফের আশা জিইয়ে রাখার লড়াই। এফসি গোয়া অবশ্য শীর্ষ দুইতে ফিরে আসার জন্য প্রতিযোগিতায় থাকবে। এখন প্রশ্ন হচ্ছে, এদিনের ম্যাচে কে হাসবে শেষ হাসি?
ইস্টবেঙ্গল কোচ অস্কার ব্রুজো তার দলের ওপর পূর্ণ আস্থা রেখেছেন, তবে বাস্তবতা হল, গতির অভাব এবং গোলের সুযোগের দুর্বলতা তাদের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। তাই তাদের জন্য এই ম্যাচটি হতে চলেছে এক কঠিন পরীক্ষার। একদিকে এফসি গোয়া, অন্যদিকে ইস্টবেঙ্গল যা নিঃসন্দেহে একটি উত্তেজনাপূর্ণ ম্যাচ হতে চলেছে, যা ফুটবল প্রেমীদের জন্য এক দারুণ লড়াই হতে পারে।