দাবার দুনিয়ায় একের পর এক সফলতার পর প্রথম বড় ধাক্কা খেলেন ভারতের উড়তি দাবারু ডি গুকেশ (Gukesh)। টাটা স্টিল চেস মাস্টার্সের ফাইনালে (Tata Steel Chess Masters Final) পরাজিত হন তিনি দেশেরই এক তরুণ প্রতিদ্বন্দ্বী প্রজ্ঞানন্দের (Praggnanandha) কাছে। সাডেন ডেথে শেষ হয় এই জয়ের লড়াই।
এ বছর টাটা স্টিল চেস মাস্টার্সের আসর বসেছিল নেদারল্যান্ডসে। ১৩ রাউন্ডের দাপটের পরে শেষ পর্যন্ত ফাইনালে মুখোমুখি হন দুজন ভারতীয় দাবাড়ু। ২০০৬ সালের বিশ্বনাথন আনন্দের পর তিনি দাবার রাজ্যে দেশের মুখ উজ্জ্বল করেছিলেন। এবারের খেতাব যে ভারতেই ফিরতে চলেছে তা নিশ্চিত হয়ে যায়। তবে প্রশ্ন ছিল শেষ হাসি হাসবেন কে?
ফাইনালে হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের পর ম্যাচ চলে যায় টাইব্রেকারে। প্রজ্ঞানন্দ কালো গুটি দিয়ে খেলতে শুরু করেন। প্রথমদিকে তাঁর খেলা ছিল বেশ সুরেলি। আক্রমণাত্মক ভঙ্গিতে একের পর এক পদক্ষেপ নেন। কিন্তু কিছুক্ষণ পর গুকেশ তাঁর খেলা গুছিয়ে তুলে ফিরেও আসেন। এই সময় গুকেশের প্রত্যাবর্তন ছিল প্রশংসনীয়। দু’পক্ষই সেয়ানে সেয়ানে খেলছিল এবং ম্যাচটি ছিল দারুণ টানটান।
View this post on Instagram
এসময় ১৫ সেকেন্ড বাকি থাকতে গুকেশের সামনে আসে একটি বড় সুযোগ। তিনি ভুল না করে সেই সুযোগটি কাজে লাগান। তবে পরবর্তী সময়ে প্রজ্ঞানন্দ বোর্ডে মারাত্মক ভুল করেন এবং সেই ভুলের ফলস্বরূপ গুকেশ প্রথম টাইব্রেকারটি জিতে নেন।
দ্বিতীয় টাইব্রেকারে প্রজ্ঞানন্দ সাদা গুটি নিয়ে শুরু করেন এবং প্রথম থেকেই গুকেশের ওপর চাপ বাড়িয়ে দেন। প্রথম টাইব্রেকারে ১৫ সেকেন্ডের শেষ মুহূর্তে প্রজ্ঞানন্দ ভুল করলেও দ্বিতীয় টাইব্রেকারে একই পরিস্থিতি ফিরে আসে। ১০ সেকেন্ড বাকি থাকতে প্রজ্ঞানন্দ গুকেশের জন্য একটি ফাঁদ পাতেন এবং গুকেশ তাতে পা দেন। সেই মুহূর্তে গুকেশের ভুলে তিনি পরাস্ত হন।
যেহেতু দুটি ব্রেকে সমতা ছিল তাই ম্যাচ সাডেন ডেথে চলে যায়। তবে শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত খেলা গড়ায়নি। গুকেশ নিজের ভুলের কারণে একপ্রকার ম্যাচটি প্রজ্ঞানন্দের হাতে তুলে দেন। এরপর প্রজ্ঞানন্দ আক্রমণাত্মক মেজাজে খেলে সাদা গুটিতে দান দিয়ে শেষ পর্যন্ত জয়ী হয়ে ওঠেন।
ম্যাচ হেরে গুকেশকে হতাশ দেখাচ্ছিল। তিনি চেয়ারটিতে এলিয়ে পড়েন কিছুক্ষণের জন্য। এরপর ধীরে ধীরে নিজেকে সামলে নিয়ে বিজয়ী প্রজ্ঞানন্দের সঙ্গে করমর্দন করেন এবং টেবিল ছাড়েন।
এই খেলা গুকেশের জন্য ছিল এক বড় শিক্ষা। তা অবশ্যই তার ভবিষ্যতের জন্য একটি মূল্যবান অভিজ্ঞতা হয়ে থাকবে।