ইংল্যান্ডের (England) বিপক্ষে ভারতের (India) টেস্ট সিরিজে প্রথম টেস্টের প্রথম দিনেই লিডসে চাপে পড়েছিল স্টোকস-রুটরা। ভারতীয় ব্যাটাররা দাপট দেখিয়ে তুলে ফেলেছে ৩৫৯ রান। শুভমান গিল এবং যশস্বী জয়সওয়ালের দাপুটে ব্যাটিংয়ের সামনে ইংরেজ পেসাররা ছিলেন প্রভাবহীন। এর মধ্যেই এসেছে আরও এক দুঃসংবাদ। ইংল্যান্ডের তারকা পেসার মার্ক উড ( Mark Wood) জানিয়েছেন, হাঁটুর চোটের কারণে তিনি এই সিরিজের প্রথম চারটি টেস্টে (India vs England) খেলতে পারবেন না। তবে তিনি আশাবাদী, পঞ্চম অর্থাৎ শেষ টেস্টে মাঠে ফিরতে পারবেন।
ইংল্যান্ডের বোলিং আক্রমণ এই সিরিজে ইতিমধ্যেই চোটের কারণে দুর্বল হয়ে পড়েছে। মার্ক উড ছাড়াও গাস অ্যাটকিনসন এবং জোফ্রা আর্চারের মতো প্রথম সারির পেসাররা প্রথম টেস্টে অনুপস্থিত। এই সুযোগ কাজে লাগিয়ে ভারতীয় ব্যাটাররা দলকে শক্ত অবস্থানে নিয়ে গেছে। শুভমান গিল, যিনি এই সিরিজে ভারতের নতুন টেস্ট অধিনায়ক হিসেবে দায়িত্ব নিয়েছেন এবং যশস্বী জয়সওয়াল তাদের দুর্দান্ত ব্যাটিং দিয়ে ইংল্যান্ডের বোলিং লাইনআপকে চাপে ফেলেছেন।
মার্ক উড ২০২৫ চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে আফগানিস্তানের বিরুদ্ধে ম্যাচে হাঁটুর মিডিয়াল লিগামেন্টে চোট পান। এরপর মার্চ মাসে তার অস্ত্রোপচার হয় এবং চিকিৎসকরা তাকে চার মাসের জন্য ক্রিকেট থেকে দূরে থাকার পরামর্শ দেন। এই চোটের কারণে তিনি ইংল্যান্ডের গ্রীষ্মকালীন টেস্ট মৌসুমের শুরুটা মিস করেছেন। তবে, উড এখন পুনর্বাসন প্রক্রিয়ায় রয়েছেন এবং ধীরে ধীরে অনুশীলন শুরু করেছেন। তিনি বিবিসি টেস্ট ম্যাচ স্পেশালে বলেছেন, “রিহ্যাব ভালো চলছে। আমি অল্প অল্প বল করা শুরু করেছি, তবে খুবই হালকাভাবে। আমি এখন আনুষ্ঠানিকভাবে ফেরার পথে। আশা করছি এই সিরিজের শেষ টেস্টে খেলতে পারব। তার আগে ফিরতে পারলে দারুণ হবে, তবে শেষ টেস্টই আমার মূল লক্ষ্য।”
৩৫ বছর বয়সী এই পেসার তার দ্রুতগতির বোলিং এবং উচ্চতর বাউন্সের জন্য পরিচিত। তার অনুপস্থিতি ইংল্যান্ডের জন্য বড় ধাক্কা, বিশেষ করে ভারতের শক্তিশালী ব্যাটিং লাইনআপের বিরুদ্ধে। উডের ৯৫ মাইল প্রতি ঘণ্টার গতি এবং রিভার্স সুইং তাকে ইংল্যান্ডের বোলিং আক্রমণের একটি গুরুত্বপূর্ণ অস্ত্র করে তুলেছে। তিনি ৩৭ টেস্টে ১১৯ উইকেট নিয়েছেন, যার গড় ৩০.৪২। এই সিরিজে তার অনুপস্থিতিতে ব্রাইডন কার্সে, ক্রিস ওকস এবং জশ টঙ্গের মতো তুলনামূলকভাবে কম অভিজ্ঞ পেসারদের উপর নির্ভর করতে হচ্ছে ইংল্যান্ডকে।
ইংল্যান্ডের পেস বোলিং বিভাগের সমস্যা শুধু উডের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়। জোফ্রা আর্চার ইনজুরির কারণে প্রথম টেস্টে খেলতে পারেননি, তবে তিনি দ্বিতীয় টেস্টের জন্য প্রস্তুত হতে পারেন। গাস অ্যাটকিনসনও হ্যামস্ট্রিং ইনজুরির কারণে প্রথম টেস্ট মিস করেছেন। এছাড়া, অলি স্টোনও হাঁটুর চোটে ভারতের বিপক্ষে পুরো টেস্ট সিরিজ থেকে ছিটকে গিয়েছেন। এই পরিস্থিতিতে অধিনায়ক বেন স্টোকসকে নিজেকে বেশি বোলিংয়ের দায়িত্ব নিতে হচ্ছে, যা তার শারীরিক অবস্থার জন্য ঝুঁকিপূর্ণ হতে পারে।
উড তার ফেরার সময় নিয়ে সতর্ক। তিনি বলেছেন, “আমি তাড়াহুড়ো করতে চাই না। শরীরের উপর অতিরিক্ত চাপ দিতে চাই না। ধীরে ধীরে স্বাভাবিক বোলিংয়ে ফিরব।” তিনি ডারহামের হয়ে কাউন্টি চ্যাম্পিয়নশিপে সামারসেটের বিরুদ্ধে ২২ জুলাই থেকে প্রতিযোগিতামূলক ক্রিকেটে ফিরতে পারেন বলে আশা করা হচ্ছে। এই ম্যাচটি কুকাবুরা বলে খেলা হবে, যা তার পুনর্বাসনের জন্য গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হতে পারে।
ইংল্যান্ডের জন্য এই সিরিজ শুধুমাত্র বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের নতুন চক্রের শুরু নয়, বরং আসন্ন অ্যাশেজ সিরিজের প্রস্তুতির জন্যও গুরুত্বপূর্ণ। উডের সম্ভাব্য ফিরতি পঞ্চম টেস্টে (৩১ জুলাই, দ্য ওভাল) দলের জন্য মানসিক বুস্ট হতে পারে। তবে তার আগে, স্টোকসের দলকে ভারতের শক্তিশালী ব্যাটিং লাইনআপের বিরুদ্ধে কম অভিজ্ঞ বোলারদের নিয়ে লড়তে হবে।
মার্ক উডের অনুপস্থিতি ইংল্যান্ডের বোলিং আক্রমণকে দুর্বল করলেও, তার ফেরার আশা দলের জন্য একটি ইতিবাচক সম্ভাবনা। ভারতের শক্তিশালী ব্যাটিং লাইনআপের সামনে ইংল্যান্ডের এই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার জন্য কৌশলগত পরিবর্তন প্রয়োজন। উডের ফিরে আসা শেষ টেস্টে সিরিজের ফলাফল নির্ধারণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে। আপাতত, স্টোকসের দলকে তাদের বর্তমান স্কোয়াড নিয়ে লড়াই চালিয়ে যেতে হবে।
England Bowler Mark Wood could make a comeback during the India vs England series