HomeWest BengalKolkata Cityলন্ডন সফরে বাংলা ফুটবলের উন্নয়নে যুগান্তকারী পদক্ষেপ মুখ্যমন্ত্রীর

লন্ডন সফরে বাংলা ফুটবলের উন্নয়নে যুগান্তকারী পদক্ষেপ মুখ্যমন্ত্রীর

- Advertisement -

পশ্চিমবঙ্গের (West Bengal) মুখ্যমন্ত্রী (Chief minister) মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee) সম্প্রতি লন্ডন (London) সফরে গিয়েছেন। এই সফরে তিনি বাংলার জন্য বিনিয়োগ আকর্ষণের পাশাপাশি ভারতীয় ফুটবলের উন্নয়নে এক যুগান্তকারী পদক্ষেপের সাক্ষী হয়েছেন। লন্ডনে এক শিল্প সম্মেলনের মাঝে ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগের জনপ্রিয় ক্লাব ম্যাঞ্চেস্টার সিটি (Manchester City) এবং টেকনো ইন্ডিয়া গ্রুপের (Techno India) মধ্যে একটি মউ (মেমোর‍্যান্ডাম অব আন্ডারস্ট্যান্ডিং) স্বাক্ষরিত হয়েছে। এই চুক্তির ফলে কলকাতায় শীঘ্রই চালু হবে ‘ম্যান সিটি ফুটবল স্কুল’। মুখ্যমন্ত্রী মমতা এই ঐতিহাসিক মুহূর্তে উপস্থিত ছিলেন এবং এই সাফল্যে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছেন।

জাতীয় ফুটবলে নিজের পরিচয় দেবেন পুরুলিয়ার ছোট্ট সীমা!

মঙ্গলবার লন্ডনের সেন্ট জেমস কোর্ট হোটেলে আয়োজিত শিল্প সম্মেলনে এই মউ স্বাক্ষরিত হয়। টেকনো ইন্ডিয়ার তরফে সত্যম রায়চৌধুরী এবং ম্যান সিটির শীর্ষ আধিকারিকরা উপস্থিত ছিলেন। চুক্তি স্বাক্ষরের পর ম্যান সিটির পক্ষ থেকে মুখ্যমন্ত্রীকে ক্লাবের একটি জার্সি উপহার দেওয়া হয়। এই প্রসঙ্গে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “ইংল্যান্ডের সঙ্গে আমাদের একটি আবেগের সম্পর্ক রয়েছে। বাংলা ফুটবল ও ক্রিকেট কতটা ভালোবাসে, তা সবাই জানেন। আমাদের তিনটি ক্লাব ইস্টবেঙ্গল, মোহনবাগান এবং মহামেডান খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আমি সব ক্লাবের জন্য গর্বিত। সত্যমরা এই চুক্তি করায় আমি খুশি।” এই উদ্যোগ বাংলার ফুটবলকে নতুন উচ্চতায় নিয়ে যাবে বলে তিনি আশাবাদী।

   

ম্যানচেস্টার সিটি, যিনি ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগে ১০ বার চ্যাম্পিয়ন হয়েছেন, তাঁদের প্রথম ফুটবল স্কুল ভারতে প্রতিষ্ঠা করতে যাচ্ছেন। এই ক্লাবের ইতিহাস ১৪৫ বছরের পুরনো। ১৮৮০ সালে ‘সেন্ট মার্কস’ নামে প্রতিষ্ঠিত এই ক্লাব ১৮৯৪ সালে ‘ম্যাঞ্চেস্টার সিটি’ নাম গ্রহণ করে। টানা চারবার প্রিমিয়ার লিগ জয়ের পাশাপাশি ২০২২-২৩ মরসুমে চ্যাম্পিয়ন্স লিগ, ২০২৩ সালে সুপার কাপ এবং ক্লাব বিশ্বকাপ জিতেছে তারা। এই ক্লাব এখন কলকাতায় তাদের বিশ্বমানের কোচিং দিয়ে তরুণ ফুটবলারদের গড়ে তুলবে।

গোল শূন্য ড্র ভুলে গুরপ্রীতের রহস্যময় পোস্ট ঘিরে বাড়ছে জল্পনা, নিশানায় বিশাল কাইথ!

এই ফুটবল স্কুলের মূল লক্ষ্য হল অত্যধুনিক পরিকাঠামো এবং উন্নত প্রশিক্ষণের মাধ্যমে ভারতীয় ফুটবল প্রতিভাদের বিকাশ ঘটানো। স্কুলটি চালু হলে ইংল্যান্ড থেকে অভিজ্ঞ কোচদের আনা হবে। ৩ থেকে ১৭ বছর বয়সী খেলোয়াড়দের জন্য বিশেষ প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা থাকবে। এখানে শুধু ফুটবল দক্ষতাই নয়, শারীরিক ও মানসিক বিকাশের উপরও জোর দেওয়া হবে। বিশেষ প্রতিভাবান ফুটবলারদের ব্রিটেনে ম্যান সিটির নিজস্ব পরিকাঠামোতে অনুশীলনের সুযোগ দেওয়া হবে। এটি ভারতীয় ফুটবলের জন্য একটি নতুন দিগন্ত উন্মোচন করবে।

মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের লন্ডন সফরের উদ্দেশ্য ছিল বাংলায় বিনিয়োগ আনা এবং ব্রিটেনের বাজারে রাজ্যের সম্ভাবনা তুলে ধরা। শিল্প সম্মেলনে তিনি ‘জয় বাংলা’ ধ্বনি দিয়ে বাঙালি সংস্কৃতির প্রতিনিধিত্ব করেন। এই সম্মেলন ব্রিটেন ও বাংলার সম্পর্ককে আরও মজবুত করবে বলে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন। মমতার নেতৃত্বে রাজ্যের আমলা ও শিল্প প্রতিনিধিরা এই সফরে অংশ নিয়েছেন। তিনি বলেন, “বাংলার ফুটবলপ্রেম বিশ্ববিখ্যাত। এই চুক্তি আমাদের তরুণ প্রতিভাদের স্বপ্ন পূরণে সহায়ক হবে।”

টেকনো ইন্ডিয়া গ্রুপের সঙ্গে এই সহযোগিতা বাংলার তৃণমূল স্তরে ফুটবলের উন্নয়নে কাজ করবে। সত্যম রায়চৌধুরী এই উদ্যোগকে বাংলার ফুটবল ঐতিহ্যের সঙ্গে ম্যান সিটির বিশ্বমানের দক্ষতার সংমিশ্রণ হিসেবে দেখছেন। এই ফুটবল স্কুল কলকাতাকে ভারতীয় ফুটবলের একটি কেন্দ্র হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করবে।

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের লন্ডন সফরে ম্যান সিটি ও টেকনো ইন্ডিয়ার মধ্যে এই মউ বাংলার ফুটবলের জন্য একটি নতুন দ্বার উন্মোচন করেছে। এই স্কুল শুধু তরুণ ফুটবলারদের প্রশিক্ষণই দেবে না, বাংলার ক্রীড়া পরিমণ্ডলকেও সমৃদ্ধ করবে। এই ঐতিহাসিক পদক্ষেপ বাংলার ফুটবলপ্রেমীদের জন্য গর্বের এবং ভবিষ্যতের তারকাদের জন্য আশার আলো।

- Advertisement -
Subhasish Ghosh
Subhasish Ghoshhttps://kolkata24x7.in/author/sports-news-desk
শুভাশীষ ঘোষ এক প্রাণবন্ত ক্রীড়া সাংবাদিক, বর্তমানে Kolkata24X7.in ক্রীড়া বিভাগের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ মুখ। ক্রিকেট থেকে ফুটবল, হকি থেকে ব্যাডমিন্টন প্রতিটি খেলাতেই তাঁর দখল প্রশংসনীয়। তিনি নিয়মিত ফিল্ড রিপোর্টিং করেন এবং ISL, I-League, CFL, AFC Cup, Super Cup, Durand Cup কিংবা Kolkata Marathon মতো মর্যাদাসম্পন্ন ইভেন্টে Accreditation Card প্রাপ্ত সাংবাদিক। ২০২০ সালে সাংবাদিকতার জগতে আত্মপ্রকাশ, আর তখন থেকেই বাংলার একাধিক খ্যাতিমান সাংবাদিকের সাহচর্যে তালিম গ্রহণ। সাংবাদিকতার পাশাপাশি ইতিহাস ও রাজনীতির প্রতি রয়েছে অগাধ টান, যার প্রমাণ তাঁর অফবিট যাত্রাপথ ও অনুসন্ধিৎসু মন। পেশাগত প্রয়োজনে কিংবা নিতান্ত নিজস্ব আগ্রহে ছুটে যান অজানার সন্ধানে, হোক পাহাড়ি আঁকাবাঁকা গলি কিংবা নিঃসঙ্গ ধ্বংসাবশেষে ভরা প্রাচীন নিদর্শন। ছবি তোলার নেশা ও লেখার প্রতি দায়বদ্ধতা মিলিয়ে শুভাশীষ হয়ে উঠেছেন সাংবাদিক।
এই সংক্রান্ত আরও খবর
- Advertisment -

Most Popular