ইন্ডিয়ান সুপার লিগ (ISL) তরুণ ভারতীয় ফুটবলারদের (Indian Footballer) জন্য এক গুরুত্বপূর্ণ মঞ্চ হয়ে উঠেছে। ২০২৪-২৫ মরসুমে (ISL 2024-25 Session) বেশ কিছু ক্লাব অনূর্ধ্ব ২৩ বছর কম বয়সী ফুটবলারদের মাঠে নামানোর মাধ্যমে ভারতীয় ফুটবলকে নতুন দৃষ্টিতে উপস্থাপন করেছে। তরুণ খেলোয়াড়দের জন্য সুযোগ তৈরি করা যেমন গুরুত্বপূর্ণ, তেমনই এটি দেশের ভবিষ্যত ফুটবলের জন্য অপরিহার্য। তাই কিছু ক্লাব তাদের তরুণ প্রতিভাদেরকে অধিক সময় মাঠে খেলার সুযোগ দিয়েছে। সেখানেই বিশেষভাবে চমক দিয়েছে কলকাতা ময়দানের অন্যতম প্রধান ইস্টবেঙ্গল (East Bengal)।
এখন চলুন, ২০২৪-২৫ ইন্ডিয়ান সুপার লিগের মরসুমে সবচেয়ে বেশি সময় মাঠে কাটানো ভারতীয় অনূর্ধ্ব ২৩ খেলোয়াড়দের নিয়ে বিস্তারিত জানি।
৫. ইস্টবেঙ্গল এফসি – ৫,৪৩২ মিনিট
এই তালিকায় পাঁচ নম্বরে রয়েছে ইস্টবেঙ্গল এফসি। এই ক্লাব অনূর্ধ্ব ২৩ ফুটবলারদের ৫,৪৩২ মিনিট সময় মাঠে খেলার সুযোগ দিয়েছে। যদিও এই সংখ্যা অন্যান্য ক্লাবগুলির তুলনায় কিছুটা কম, তবুও লাল-হলুদ শিবির ফ্যান-ফেভারিট ক্লাব হিসেবে তাদের তরুণ খেলোয়াড়দের উন্নয়নে যথেষ্ট গুরুত্ব দিয়েছে। ক্লাবের ইতিহাসে গুরুপ্রীত সিং সান্ধু, নিকিল পূজারী এবং অন্যান্য অনেক তরুণ খেলোয়াড় ইতিমধ্যেই উজ্জ্বল ক্যারিয়ার শুরু করেছেন। বর্তমানে পিভি বিষ্ণু এবং ডেভিডের মতো নতুন প্রতিভা ক্লাবের ভবিষ্যতের অগ্রযাত্রায় বড় ভূমিকা পালন করতে পারে।
৪. চেন্নাইয়িন এফসি – ৬,২২৫ মিনিট
চেন্নাইয়িন এফসি এই মরসুমে তাদের ২৩ বছর কম বয়সী ফুটবলারদের ৬,২২৫ মিনিট মাঠে খেলতে দিয়েছে। চেন্নাইয়িন প্রায়শই অভিজ্ঞ ভারতীয় এবং আন্তর্জাতিক খেলোয়াড়দের মিশ্রণ নিয়ে থাকে। একই সঙ্গে তরুণ ভারতীয় খেলোয়াড়দেরও সমান গুরুত্ব দিয়ে থাকে। ক্লাবের ইতিহাসে লাল্লিয়ানসাঙ্গা রেনথ্লেই এবং সামিক মিত্রের মতো খ্যাতনামা তরুণ খেলোয়াড়রা নিজেদের দক্ষতা দেখিয়েছে। বর্তমানে, লালরিনলিয়ানা হাংতে এবং ইরফান ইয়াদওয়াদের মতো ফুটবলাররা ক্লাবের জন্য গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে এবং তাদের ভবিষ্যৎ উজ্জ্বল।
৩. হায়দরাবাদ এফসি– ৬,৬৮৮ মিনিট
হায়দরাবাদ এফসি তিন নম্বরে রয়েছে, অনূর্ধ্ব ২৩ খেলোয়াড়দের মোট ৬,৬৮৮ মিনিট সময় মাঠে খেলার সুযোগ দিয়েছে। এই ক্লাবে তরুণ ভারতীয় খেলোয়াড়দের প্রতি তার আস্থা প্রকাশ করেছে এবং সাফল্যের সাথে তাদেরকে মাঠে সুযোগ দেওয়ার জন্য পরিচিত। ক্লাবের তরুণরা যেমন রামহলুঞ্চুঙ্গা এবং মহম্মদ রফি তাদের কোচিং স্টাফের আস্থার প্রতিদান দিয়েছে, তেমনি তারা প্রতিযোগিতামূলক খেলায় বেশ ভালো পারফর্মেন্সও দেখিয়েছে।
২. কেরালা ব্লাস্টার্স এফসি – ৭,০৭২ মিনিট
কেরালা ব্লাস্টার্স এফসি তরুণ ভারতীয় খেলোয়াড়দের উন্নয়নে একধাপ এগিয়ে গেছে। দলের অনূর্ধ্ব ২৩ খেলোয়াড়রা চলতি মরসুমে ৭,০৭২ মিনিট মাঠে খেলার সুযোগ পেয়েছে। কেরালা ব্লাস্টার্সের বিখ্যাত ফ্যান বেস এবং দেশের গুণী ফুটবল খেলোয়াড়দের প্রোডাকশনের জন্য পরিচিত। এখানে অ্যালেক্স সাজি এবং এমিল বেনির মতো খেলোয়াড়রা উঠে এসেছেন, যারা আজকে নিজেদের ক্লাবে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছেন। এছাড়াও, এই মরসুমে তরুণরা যেমন কোরু সিং এবং বিবিন মোহনান তাদের দক্ষতা মাঠে দেখিয়েছে, তেমন ক্লাবের ভবিষ্যত উজ্জ্বল।
১. পাঞ্জাব এফসি – ৭,১০০ মিনিট
এই মরসুমের শীর্ষে রয়েছে পাঞ্জাব এফসি। এই ক্লাব ২৩ বছরের কম বয়সী ফুটবলারদের ৭,১০০ মিনিট মাঠে খেলার সুযোগ দিয়েছে, যা এই তালিকার সবার মধ্যে সবচেয়ে বেশি। পাঞ্জাব এফসি কোচ প্যানাগিওটিস ডিলমপেরিসের অধীনে তরুণ ভারতীয় প্রতিভাদের বিকাশে অগ্রণী ভূমিকা পালন করছে। মহম্মদ সুহাইল ফ এবং তেকচাম অভিষেক সিংয়ের মতো খেলোয়াড়রা ইতিমধ্যেই ক্লাবের প্রধান অংশ হয়ে উঠেছে এবং তাদের এই উন্নতি ক্লাবটির দীর্ঘমেয়াদি লক্ষ্যকে দৃঢ় করেছে।
এই তালিকাটি প্রমাণ করে যে, আইএসএল এই বছর তরুণ ভারতীয় ফুটবলারদের জন্য অনেক বেশি সুযোগ প্রদান করছে। এর মাধ্যমে দেশের ফুটবলের ভবিষ্যত আরও শক্তিশালী হবে। এই ক্লাবগুলির অবদান অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, এবং তারা ভারতীয় ফুটবলের উজ্জ্বল ভবিষ্যত গড়তে সহায়ক ভূমিকা পালন করবে।