২৯ নভেম্বর সল্টলেকের যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গনে নর্থইস্ট ইউনাইটেডের বিরুদ্ধে মশাল ব্রিগেডের লড়াইয়ে নামবে ইস্টবেঙ্গল। এই ম্যাচটি শুধু এক খেলাধুলার প্রতিযোগিতা নয়, বরং ইস্টবেঙ্গলের জন্য মরিয়া এক সুযোগ হয়ে দাঁড়িয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে কঠিন সময় পার করা লাল-হলুদ শিবিরের জন্য এটি একটা পুণ্যস্মরণ হওয়ার সুযোগ। পুরনো সব ভুলে নতুন করে ঘুরে দাঁড়াতে চাইছেন ইস্টবেঙ্গলের নব নিযুক্ত কোচ অস্কার ব্রুজন। কোচ ব্রুজনের অধীনে দল নতুন ভাবে সাজানোর প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। তাই পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী গত শনিবার থেকেই দলের অনুশীলন শুরু হয়েছে, তবে সেখানেও উপস্থিত ছিলেন না ব্রাজিলিয়ান তারকা ক্লেটন সিলভা ছাড়া অন্য কোনো বিদেশি ফুটবলার।
এছাড়াও, সম্প্রতি জানা গেছে যে, সাময়িক ছুটি নিয়ে দলের অন্যান্য বিদেশি ফুটবলাররা দেশে ফিরে গিয়েছিলেন, কিন্তু এখন শোনা যাচ্ছে যে, নয়া সপ্তাহের মধ্যেই তারা শহরে ফিরে আসবেন। এই নিয়ে নতুন তথ্য প্রকাশ হয়েছে, যেখানে বিশেষ সূত্র মারফত জানা গেছে, সোমবারের মধ্যে শহরে ফিরে আসবেন ইস্টবেঙ্গলের ফরাসি মিডফিল্ডার মাদিহ তালাল (Madih Talal)। এর পর সাময়িক বিশ্রামের পরই দলের সঙ্গে অনুশীলনে যোগ দেবেন তিনি। মাদিহ তালালকে দলের মধ্যে ফিরতে দেখে দলের খেলোয়াড়দের মধ্যে নতুন আশা তৈরি হয়েছে। ইতিমধ্যেই দলের সমর্থকরা মাদিহ তালালের ফিরে আসাকে সাদরে গ্রহণ করেছে এবং তাদের বিশ্বাস, এই অভিজ্ঞ মিডফিল্ডারের উপস্থিতি ইস্টবেঙ্গলের খেলায় ব্যাপক ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে।
তালাল এই মৌসুমে ইস্টবেঙ্গলের মাঝমাঠের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ফুটবলার হয়ে উঠেছেন। যদিও আইএসএল-এর মঞ্চে ইস্টবেঙ্গল এখনও পর্যন্ত জয়ের দেখা পায়নি, তবে এএফসি চ্যালেঞ্জ লিগে তার দুর্দান্ত পারফরম্যান্স দলের জন্য গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। তাঁর উপস্থিতিতে দলের মাঝমাঠ অনেকটাই সচল হয়েছে এবং আক্রমণভাগে কার্যকরী হয়ে উঠেছে। বিশেষ করে, দলের ফরোয়ার্ডরা আগের তুলনায় অনেক বেশি সুযোগ পাচ্ছেন তাঁর দুর্দান্ত পাসিং ও কৌশলগত চিন্তাভাবনার কারণে।
এখন, সামনে আসন্ন নর্থইস্ট ইউনাইটেড ম্যাচে মাদিহ তালালের ভূমিকা আরও বেশি গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠতে চলেছে। কোচ অস্কার ব্রুজন এই ম্যাচে তালালের উপরই বাড়তি ভরসা রাখছেন, কারণ ইস্টবেঙ্গলের সামনে যে কঠিন চ্যালেঞ্জ অপেক্ষা করছে, তাতে তিনি যদি এক্ষেত্রে দৃঢ় ভূমিকা নেন, তবে মশাল ব্রিগেডের জয় নিশ্চিত হওয়া সম্ভব। বর্তমানে, ইস্টবেঙ্গল চারপাশে এক বড় ধরনের সংকটের মধ্যে রয়েছে। আইএসএল-এ এখনও পর্যন্ত তাদের ছয়টি ম্যাচের মধ্যে সবকটি ম্যাচেই পরাজিত হতে হয়েছে।
দলের এই বিপর্যয়ের পর, কোচ ব্রুজন এরই মধ্যে প্রস্তুতি নিচ্ছেন আগামী ম্যাচের জন্য। যেহেতু এই ম্যাচটি তাদের টুর্নামেন্টের টপ সিক্সে থাকার জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ, তাই ইস্টবেঙ্গলকে জয় পেতেই হবে। তাঁদের লক্ষ্য একটাই—নর্থইস্ট ইউনাইটেডকে পরাজিত করে ঘরের মাঠে একটা বড় জয় তুলে নেওয়া। ইতিমধ্যেই দলের অনুশীলন চলছে, তবে সকলের নজর মাদিহ তালালের ফিরে আসার দিকে।
এরই মধ্যে, লাল-হলুদ শিবিরের হেডস্যার অস্কার ব্রুজন দলকে সম্পূর্ণ নতুন ভাবে তৈরি করতে চাইছেন, যাতে ম্যাচের মধ্যে নিজেদের সেরা পারফরম্যান্স দেখানো সম্ভব হয়। দলগত ভাবে টিম স্পিরিট ও সমন্বয় গড়ে তোলার জন্য তিনি প্রতিনিয়ত খেলোয়াড়দের অনুপ্রাণিত করছেন এবং তাদের মানসিকভাবে প্রস্তুত করছেন। তিনি জানেন, এই ম্যাচে জয় ছাড়া কিছুই ভাবা সম্ভব নয়, কারণ পরবর্তী সময়ে যদি দল এই পরিস্থিতি কাটিয়ে না উঠতে পারে, তবে আইএসএল টুর্নামেন্টের চলতি মৌসুমে তাদের অবস্থান আরও খারাপ হতে পারে।
এছাড়াও, ইস্টবেঙ্গলের সমর্থকদের কাছ থেকে বড় ধরনের সমর্থনও মিলছে, বিশেষ করে যারা দীর্ঘদিন ধরে দলটির পাশে দাঁড়িয়েছেন। দলের দুর্দশা ও পরাজয়ের মধ্যে সমর্থকদের উৎসাহ এবং আশাবাদ দলের জন্য এক বড় ধরনের শক্তি হয়ে উঠেছে। সমর্থকদের একমাত্র প্রত্যাশা হল, তারা শিগগিরই নিজেদের প্রিয় দলের জয় দেখতে চান, এবং সেটা যদি মাদিহ তালালের সমর্থন মেলে, তাহলে তা আরও নিশ্চিত হবে।এই পরিস্থিতিতে, ২৯ নভেম্বরের ম্যাচটি ইস্টবেঙ্গল ফ্যানদের জন্য শুধু একটি খেলা নয়, বরং দলের ভবিষ্যতের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এক মুহূর্ত।