নৈহাটির বঙ্কিমাঞ্জলি স্টেডিয়াম যেন শুক্রবার পরিণত হয়েছিল ইস্টবেঙ্গল (East Bengal) মহোৎসবে। কলকাতা লিগের (CFL 2025) নতুন মরসুমে যেভাবে যাত্রা শুরু করল লাল-হলুদ, তা নিঃসন্দেহে প্রতিপক্ষদের জন্য হুঁশিয়ারি সংকেত। মেসারার্স ক্লাবকে (Measurers Club) কার্যত ছিন্নভিন্ন করে ৭-১ গোলে জয় ছিনিয়ে নিল বিনো জর্জের ছেলেরা। এই ম্যাচের পারফরম্যান্স দেখে বোঝা গেল ইস্টবেঙ্গল নিজেদের ঘরোয়া আধিপত্য ফেরত নিতে মরিয়া।
ম্যাচের শুরুর থেকেই ইস্টবেঙ্গলের দাপট ছিল চোখে পড়ার মতো। প্রথমার্ধেই ৩-০ গোলের লিড, আর দ্বিতীয়ার্ধে তা রূপ নেয় একতরফা গোলের উৎসবে। ২৩ মিনিটে গোলের সূচনা করেন মনোতোষ মাজি। এরপর ৩৩ মিনিটে ব্যবধান বাড়ান সায়ন বন্দ্যোপাধ্যায়। দলের মাঝমাঠে এবং আক্রমণভাগে দারুণ সংযোগ তৈরি করেন সায়ন। ৩৭ মিনিটে গুইতে আরও একটি গোল যোগ করে ব্যবধান বাড়িয়ে দেন।
প্রথমার্ধে মেসারার্স ক্লাবের একটি শট বারে লেগে ফিরে আসে। তবে সেখান থেকেই বোঝা যাচ্ছিল, এদিন ভাগ্যও মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে মেসারার্সের দিক থেকে।
দ্বিতীয়ার্ধ শুরু হতেই ইস্টবেঙ্গলের ঝাঁঝ আরও বাড়ে। ৪৯ মিনিটে তন্ময় দাস দলের চতুর্থ গোল করেন। তাঁর নিচু শট গোলকিপারের হাতের ফাঁক গলে জালে প্রবেশ করে। এরপর নেমে আসেন বদলি খেলোয়াড় জেসিন টিকে। যেন অন্য গ্রহের ফুটবলার! ৬৩ ও ৬৫ মিনিটে পরপর দুই গোল করে দলের স্কোরলাইনে জোড়া গোল যোগ করেন। দ্বিতীয় গোলটি ছিল নজরকাড়া বিপক্ষের একাধিক ডিফেন্ডারকে কাটিয়ে অসাধারণ স্ট্রাইক।
৬৯ মিনিটে মেসারার্সের হয়ে একমাত্র গোলটি করেন অ্যান্ডি জাখারি। যদিও সেই গোল কেবল ব্যবধান কমানোর কাজে এসেছিল। এরপর ইস্টবেঙ্গলের শটের পর শট বাঁচাতে গিয়ে কার্যত একাই লড়াই চালিয়ে যান মেসারার্স গোলকিপার লাইমুজাম কেন সিং। তবুও শেষ রক্ষা হয়নি। ম্যাচের একেবারে শেষ মুহূর্তে দূরপাল্লার একটি অসাধারণ শটে গোল করেন সুমন দে। স্কোরবোর্ড তখন ৭-১।
ম্যাচ শেষে ইস্টবেঙ্গলের সহকারী কোচ অর্চিষ্মান বিশ্বাস বলেন, “জেসিন যেভাবে খেলেছে, তার অবশ্যই ভারতীয় দলের সুযোগ পাওয়া উচিত। ওর মধ্যে বড় মঞ্চে খেলার ক্ষমতা রয়েছে।”
প্রথম ম্যাচেই দলের পারফরম্যান্স কোচিং স্টাফ এবং সমর্থকদের মনে আশার আলো জাগাচ্ছে। বহুদিন পর কলকাতা লিগে এতটা আগ্রাসী রূপে দেখা গেল লাল-হলুদ বাহিনীকে। গত মরসুমে কলকাতা লিগে কারা চ্যাম্পিয়ন তা এখনও আদালতের বিচারাধীন। তবে নতুন সিজনের ইস্টবেঙ্গল যেভাবে শুরু করল, তাতে তারা যেন বার্তা দিল—‘আমরাই সত্যিকারের চ্যাম্পিয়ন’।
লিগের প্রথম ম্যাচেই ৭-১ জয়, সেই সঙ্গে একাধিক খেলোয়াড়ের দারুণ ফর্ম, ইস্টবেঙ্গলের সামনে এবার কলকাতা লিগে ফের রাজত্ব কায়েম করার সুবর্ণ সুযোগ। এক ম্যাচে সাত গোল করে যে দল যাত্রা শুরু করে, তাদের প্রতি প্রতিপক্ষদের সতর্ক হওয়াই ভাল।
East Bengal starts CFL 2025 Campaign with dominant 7-1 win over Measurers Club
