কলকাতার ফুটবল ময়দানে নতুন বিতর্কের জন্ম দিয়েছে ইস্টবেঙ্গল ক্লাব স্কুল অফ এক্সিলেন্সের (East Bengal School of Excellence) পয়েন্ট কাটার ঘটনা। নার্সারি ডিভিশনের বি গ্রুপে মার্কাস স্কোয়ারে সেন্ট্রাল ক্যালকাটা ভেটারেন্স ক্লাবের বিরুদ্ধে একটি ম্যাচে সিএমএস (ক্যালকাটা মেট্রোপলিটন সার্ভিস)-এর নিয়মবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এই ম্যাচে ইস্টবেঙ্গল ক্লাব স্কুল অফ এক্সিলেন্সের কাটা পয়েন্ট প্রতিদ্বন্দ্বী দল সেন্ট্রাল ক্যালকাটা ভেটারেন্স এসসি-কে দেওয়া হয়েছে। একইভাবে, একই কারণে মাকরদহ স্পোর্টিং ক্লাবের পয়েন্ট কেটে সেটি সালকিয়া কোচিং সেন্টারের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। এই গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে বুধবার, ৯ এপ্রিল ২০২৫-এ নার্সারি কমিটির এক বৈঠকে।
বৈঠকে নার্সারি কমিটির সদস্যদের পাশাপাশি উপস্থিত ছিলেন ভারতীয় ফুটবল অ্যাসোসিয়েশন (আইএফএ)-এর শীর্ষ কর্মকর্তারা। এর মধ্যে ছিলেন আইএফএ সভাপতি অজিত বন্দ্যোপাধ্যায়, সচিব অনির্বাণ দত্ত, কোষাধ্যক্ষ দেবাশীষ সরকার, সহ-সভাপতি সৌরভ পাল ও দিলীপ নারায়ণ সাহা। এছাড়াও সচিব রাকেশ ঝাঁ, মহম্মদ জামাল, সুদেষ্ণা মুখার্জী এবং এক্সিকিউটিভ সেক্রেটারি সুফল রঞ্জন গিরি উপস্থিত ছিলেন। এই বৈঠকে নিয়ম লঙ্ঘনের অভিযোগগুলো বিস্তারিতভাবে পর্যালোচনা করা হয় এবং সর্বসম্মতিক্রমে পয়েন্ট কাটার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
নিয়ম লঙ্ঘনের বিষয়টি ঠিক কী ছিল, তা নিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো বিবৃতি প্রকাশ করা হয়নি। তবে সূত্রের খবর, এটি সম্ভবত খেলোয়াড় নিবন্ধন বা ম্যাচ পরিচালনার ক্ষেত্রে কোনো ত্রুটির সঙ্গে সম্পর্কিত। এই ঘটনায় ইস্টবেঙ্গল ক্লাব স্কুল অফ এক্সিলেন্সের সমর্থকদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। অনেকে মনে করছেন, এই সিদ্ধান্ত ক্লাবের উঠতি প্রতিভাদের উপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে। অন্যদিকে, সেন্ট্রাল ক্যালকাটা ভেটারেন্স এসসি এবং সালকিয়া কোচিং সেন্টারের জন্য এটি একটি অপ্রত্যাশিত সুবিধা হয়ে দাঁড়িয়েছে।
ইস্টবেঙ্গল ক্লাব দীর্ঘদিন ধরে ভারতীয় ফুটবলের একটি শক্তিশালী নাম। তাদের স্কুল অফ এক্সিলেন্স প্রতিভাবান তরুণ খেলোয়াড় তৈরিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছে। এই ঘটনা ক্লাবের খ্যাতির উপর কিছুটা হলেও প্রশ্নচিহ্ন তুলেছে। অনুরাগীরা এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়েছেন এবং আইএফএ-র কাছে এর পুনর্বিবেচনার দাবি জানিয়েছেন। তবে আইএফএ কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, নিয়মবিধি সবার জন্য সমান এবং এই সিদ্ধান্ত কঠোরভাবে নিয়ম মেনেই নেওয়া হয়েছে।
এদিকে, মাকরদহ স্পোর্টিং ক্লাবের ক্ষেত্রেও একই ধরনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এই ঘটনা নার্সারি ডিভিশনের প্রতিযোগিতায় নতুন মোড় এনেছে। ফুটবল বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এই ধরনের ঘটনা ক্লাবগুলোকে আরও সতর্ক ও নিয়মানুবর্তী হতে বাধ্য করবে। বুধবারের এই বৈঠকের সিদ্ধান্ত আগামী দিনে নার্সারি ফুটবলের গতিপ্রকৃতি কীভাবে প্রভাবিত করবে, তা দেখার বিষয়।