ওডিশা ম্যাচের আগে সমর্থকদের নজর কাড়লেন লাল-হলুদ গোলরক্ষক

ইস্টবেঙ্গল এফসি (East Bengal FC) এই মুহূর্তে কঠিন এক পরিস্থিতির মুখোমুখি। ইন্ডিয়ান সুপার লিগের (ISL) চলতি মরশুমে দলটি বিভিন্ন সমস্যার সম্মুখীন হলেও, নতুন কোচ (Coach)…

prabhsukhan singh gill

ইস্টবেঙ্গল এফসি (East Bengal FC) এই মুহূর্তে কঠিন এক পরিস্থিতির মুখোমুখি। ইন্ডিয়ান সুপার লিগের (ISL) চলতি মরশুমে দলটি বিভিন্ন সমস্যার সম্মুখীন হলেও, নতুন কোচ (Coach) অস্কার ব্রুজো (Oscar Bruzon) তাঁর কৌশল এবং নেতৃত্বে দলের আত্মবিশ্বাস ফিরে আনার চেষ্টা করছেন। যদিও একাধিক গুরুত্বপূর্ণ ফুটবলার (Footballer) চোটে আক্রান্ত হয়েছেন এবং কিছু গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে তাঁরা খেলতে পারছেন না, তবুও ব্রুজো তাঁর দলের মনোবল দৃঢ় রাখার ক্ষেত্রে সফল হয়েছেন।

কোচ ব্রুজোর মূল লক্ষ্য হল তাঁর দলকে সঠিক মানসিকতায় তৈরি করে ম্যাচগুলোতে জয়ী হওয়া, বিশেষ করে যখন প্রতিপক্ষ দলটি শক্তিশালী হয়ে থাকে। ওডিশা ম্যাচে নামার আগে লাল-হলুদ গোলরক্ষক প্রভসুখন গিল (Prabhsukhan Singh Gill) বিশেষ ভাবে নজর কেড়েছে সমর্থকদের।

   

ইস্টবেঙ্গলের বর্তমান পরিস্থিতি অত্যন্ত উদ্বেগজনক। সার্জিও লবেরার ওডিশা দলের বিরুদ্ধে একাধিক গুরুত্বপূর্ণ ফুটবলার চোটের কারণে মাঠে নামতে পারছেন না। সাউল ক্রেসপো, দিমিত্রিয়স দিয়ামান্তাকোস, প্রভাত লাকড়া, নন্দকুমার এবং স্প্যানিশ ডিফেন্ডার হেক্টর ইউস্তে। যেখানে এই পাঁচ ফুটবলার দলের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, তবে তাঁরা সকলেই চোটের কারণে মাঠের বাইরে রয়েছেন। এই অবস্থায় ওডিশা এফসির বিপক্ষে ম্যাচে, ব্রুজো তাঁর কোচিংয়ের কৌশলে কিছু পরিবর্তন আনতে পারেন। যেখানে মূলত ভারতীয় ফুটবলারের ওপর আস্থা রাখা হবে।

অস্কার ব্রুজো তাঁর দলের বর্তমান পরিস্থিতি সম্পর্কে বলেন, “দলের কেউ আছে, কেউ নেই সেটা ম্যাচের আগে বোঝা যাবে। আমি অযথা চাপ নিতে চাই না। আমার কাজ হল, খেলোয়াড়দের মানসিক দিক থেকে শক্ত করা। আমি কোনো অজুহাত দিতে চাই না, নেতিবাচক মনোভাব নিয়ে থাকতে পছন্দ করি না। আমি সবসময় ইতিবাচক দিকটিই দেখতে চাই।” তিনি আরও জানান, ভারতীয় ফুটবলারদের জন্য এই সময়টা নিজেদের প্রমাণ করার সবচেয়ে বড় সুযোগ হতে পারে। দলের যেসব ফুটবলার এখন মাঠে নামবেন, তাঁদের জন্য এটি একটি বিশেষ চ্যালেঞ্জ। কারণ তাঁদের পারফরম্যান্সই ইস্টবেঙ্গলের জন্য জয় নিশ্চিত করতে সাহায্য করবে।

এদিকে, ইস্টবেঙ্গলের কোচ জানিয়ে দিয়েছেন যে, দল ওডিশা এফসির বিরুদ্ধে একটি শক্তিশালী প্রতিপক্ষের সঙ্গে খেলবে। ওডিশা এফসি দলটি অত্যন্ত শক্তিশালী এবং দলের সদস্যরা—আহমেদ জাহু, মুর্তাদা ফল, দিয়েগো মৌরিসিও, এবং হুগো বুমোস—যে কোনো দলের জন্য হুমকি হয়ে উঠতে পারেন। কিন্তু ব্রুজো বিশ্বাস করেন, তাঁর দল বর্তমানে প্রস্তুত এবং তারা ধারাবাহিকতা বজায় রেখে জয়লাভ করতে সক্ষম হবে। কোচের বিশ্বাস, দলের খেলোয়াড়রা যদি সঠিক মানসিকতা নিয়ে খেলতে পারে, তবে ওডিশার মতো শক্তিশালী দলকেও হারানো সম্ভব।

ইস্টবেঙ্গলের পক্ষে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে এই মুহূর্তে পরাজয় থেকে বাঁচা। ব্রুজো জানেন, একদিকে যেমন ওডিশার মতো শক্তিশালী দলের বিরুদ্ধে খেলা একটি বড় চ্যালেঞ্জ, তেমনি এই ম্যাচের ফলাফল ইস্টবেঙ্গলের জন্য মর্যাদা রক্ষার বিষয় হয়ে দাঁড়াবে। কোচ আরও বলেন, “আমরা ছন্দে আছি, তবে এই ছন্দটা ধরে রাখতে হবে। আমাদের টেবিলের উপরের দিকে উঠতে হবে এবং তা করার জন্য তিনটি হোম ম্যাচ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।”

লাল-হলুদ গোলরক্ষক প্রভসুখন গিল শেষ তিন ম্যাচে প্রতিপক্ষের কোন গোল হজম করেনি। যা সার্জিও লোবেরার ওডিশার বিরুদ্ধে নামার আগে বিশেষ ভাবে তাৎপর্যপূর্ণ। সেক্ষেত্রে তিনি মরশুমের প্রথম তিন ম্যাচে ১২ গোল হজম করেছিলেন।

স্প্যানিশ কোচ অস্কার ব্রুজোর অধীনে ইস্টবেঙ্গল কিছুটা হলেও আত্মবিশ্বাস ফিরে পেয়েছে। ব্রুজোর নেতৃত্বে দলটি ইতিবাচক মনোভাব নিয়ে মাঠে নামবে এবং ওডিশার বিরুদ্ধে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে চায়। দলের সকল ফুটবলারদের মধ্যে নতুন একটা আবেগ এবং দৃঢ়তা তৈরি হয়েছে, যা তাদের পরবর্তী ম্যাচে সাফল্যের জন্য সহায়ক হতে পারে।

এখন ইস্টবেঙ্গলের সামনে সঠিক সময়ে সঠিক পদক্ষেপ নেওয়ার সুযোগ রয়েছে। ব্রুজোর নেতৃত্বে দল যদি চোট-আঘাতের কারণে যারা মাঠে নেই, তাদের প্রাপ্ত সুযোগগুলো সঠিকভাবে কাজে লাগাতে পারে, তবে মশাল ব্রিগেড আবারও তার পূর্বের শক্তিতে ফিরবে এবং আইএসএলে সফলতা অর্জন করবে বলে আশাবাদী দলের সমর্থকরাও।