ইস্টবেঙ্গল এফসির (East Bengal FC) সামনে আজকের ম্যাচটি একেবারে বড় চ্যালেঞ্জ। আইএসএলের (ISL) মঞ্চে ১৭ ডিসেম্বর পঞ্জাব এফসির (Punjab FC) বিরুদ্ধে খেলতে নামবে তারা, যেটি তাদের জন্য একটি সুযোগ হয়ে দাঁড়াতে পারে যেহেতু তারা গত ম্যাচে ওডিশা এফসির বিরুদ্ধে ২-১ গোলে হেরে গিয়েছিল। এই হারের পর মশাল ব্রিগেডকে এখন ঘুরে দাঁড়ানোর জন্য এক কঠিন পরীক্ষার সম্মুখীন হতে হবে। তাদের লক্ষ্য একটি নতুন শুরুর দিকে এগিয়ে যাওয়া, আর এই ম্যাচে কামব্যাক করার জন্য যথেষ্ট আত্মবিশ্বাস এবং দৃঢ়তা প্রয়োজন।
ইস্টবেঙ্গল এফসি গত কয়েকদিন ধরে কিছুটা অস্বস্তিতে ছিল। আইএসএলে তাদের সাম্প্রতিক পারফরম্যান্সে একসময় কিছু আশা দেখা গেলেও, পরবর্তীতে সেই আশা অনেকটা ধোঁয়াশা হয়ে গেছে। সাত ম্যাচের একটি জয়হীন রান কাটানোর পর যখন তারা পরপর দুটি ম্যাচে জয় লাভ করেছিল, তখন মনে হয়েছিল দলের মধ্যে কিছুটা পরিবর্তন আসছে। তবে, ওডিশা এফসির বিপক্ষে হারের পর সেই পরিবর্তনের সম্ভাবনা কিছুটা ম্লান হয়ে গেছে। প্রথম গোল করার পরও শেষ পর্যন্ত ম্যাচে জিততে না পারা, দলের মধ্যে কিছু গুরুতর সমস্যার ইঙ্গিত দেয়।
এখন ইস্টবেঙ্গলের সামনে বড় চ্যালেঞ্জ হচ্ছে দলের গুরুত্বপূর্ণ খেলোয়াড়দের চোট এবং শাস্তি। একদিকে, ফরাসি মিডফিল্ডার মাদিহ তালাল গত ম্যাচে গোড়ালিতে গুরুতর চোট পান এবং মাঠ থেকে বাইরে চলে যান। অন্যদিকে, মিডফিল্ডার জিকসন সিংয়ের লাল কার্ডের কারণে তিনি আগামী ম্যাচে খেলতে পারবেন না। এই দুই গুরুত্বপূর্ণ খেলোয়াড়ের অনুপস্থিতি দলের ভারসাম্যকে বিপর্যস্ত করে দিয়েছে।
এরপর, লাল-হলুদ কোচ অস্কার ব্রুজোর সামনে আরও একটি বড় সমস্যা এসে দাঁড়িয়েছে। মাঝমাঠের সেরা খেলোয়াড়দের মধ্যে সাউল ক্রেসপো হ্যামস্ট্রিংয়ের চোটের কারণে অন্তত দুই সপ্তাহের জন্য মাঠের বাইরে। ফলে, দলের মধ্যমাঠের পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়ে গেছে। এই অবস্থায়, কোচ ব্রুজোকে নতুনভাবে দল সাজানোর এবং খেলোয়াড়দের নিয়ে সঠিক সিদ্ধান্ত নেওয়ার একটি বড় চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হতে হবে।
অন্যদিকে, পঞ্জাব এফসির পারফরম্যান্সও বেশ নজরকাড়া। তারা এই মরশুমে ইন্ডিয়ান সুপার লিগে তাদের প্রথম বছরেই শক্তিশালী দল হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেছে। যদিও তারা গত পাঁচ ম্যাচের মধ্যে তিনটি হেরে গেছে, তবে তাদের বর্তমান অবস্থান লিগ টেবিলের পঞ্চম স্থানে, যেখানে তারা ১৮ পয়েন্ট সংগ্রহ করেছে। তাদের রেকর্ডে মোট ১০ ম্যাচে ৬টি জয় রয়েছে, যা তাদের প্রতিপক্ষ হিসেবে একটি শক্তিশালী অবস্থান নিশ্চিত করেছে। জামশেদপুরের বিরুদ্ধে তাদের ২-১ গোলে হারার পর তারা মাঠে ফিরতে মরিয়া হবে।
ইস্টবেঙ্গল এই ম্যাচে পঞ্জাবকে হটাতে চায়, তবে তাদের সামনে কিছু গুরুতর সমস্যা রয়েছে। দলের মধ্যমাঠের খেলার জন্য সঠিক সমন্বয় প্রয়োজন এবং কোচ ব্রুজোর সামনে একাধিক প্রশ্ন রয়েছে। আক্রমণাত্মক ফুটবলের পাশাপাশি দলের রক্ষণকে আরও শক্তিশালী করতে হবে, বিশেষ করে যেহেতু তাদের অন্যতম মূল রক্ষণভাগে কোনো পরিবর্তন আসবে কিনা, তা এখন স্পষ্ট নয়।
এছাড়া, কোচ ব্রুজোর জন্য অন্যতম বড় চ্যালেঞ্জ হল, মাঝমাঠের জন্য নতুন করে খেলোয়াড় নির্বাচন করা। সৌভিক চক্রবর্তীর সঙ্গে কে খেলবেন, এ প্রশ্নও খুব গুরুত্বপূর্ণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। আনোয়ার আলি মাঝমাঠে কিছুটা ভূমিকা রাখতে পারেন, তবে তাঁর উপস্থিতি দলের রক্ষণে কী প্রভাব ফেলবে, তা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে।
ইস্টবেঙ্গল যদি পঞ্জাবকে হারাতে চায়, তবে তাদের প্রতিপক্ষের শক্তিশালী আক্রমণভাগের বিরুদ্ধে নিজেদের রক্ষা করতে হবে। পাশাপাশি, তাদের আক্রমণাত্মক কৌশলেও আরও জোর দিতে হবে যাতে পঞ্জাবের রক্ষণকে চ্যালেঞ্জ করতে পারে। এই ম্যাচে জয় তাদের আত্মবিশ্বাস ফিরে পেতে সাহায্য করবে, কিন্তু এর জন্য কঠোর পরিশ্রম এবং ভালো দলগঠন প্রয়োজন।