আজ ১৩৪ তম ডুরান্ডের (Durand Cup 2025) শুভ সূচনা করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পূর্ব নির্ধারিত সূচি অনুযায়ী উদ্বোধনী ম্যাচেই মুখোমুখি হয়েছিল ইস্টবেঙ্গল এফসি এবং কর্নাটকের ক্লাব সাউথ ইউনাইটেড এফসি। সম্পূর্ণ সময়ের শেষে ৫-০ গোলে জিতে মরসুমের শুরু করল মশাল বাহিনী। সেই নিয়ে যথেষ্ট খুশি সমর্থকরা। উল্লেখ্য, গত ২০২৩ সালে তৎকালীন কোচ কার্লেস কুয়াদ্রাতের তত্ত্বাবধানে ইন্ডিয়ান সুপার লিগে নর্থ ইস্টের বিপক্ষে ৫-০ গোলে জিতেছিল ইস্টবেঙ্গলের সিনিয়র দল। সেই স্মৃতি উসকে দিলেন অস্কারের ব্রুজোন। দলের এই জয় নিঃসন্দেহে অনেকটাই আত্মবিশ্বাস বাড়াবে সকল ফুটবলারদের।
ম্যাচের প্রথম মিনিট থেকেই আক্রমণাত্মক ভাবে খেলা শুরু করেছিল অস্কারের ছেলেরা। যদিও এদিন তারকা স্ট্রাইকার দিমিত্রিয়সকে বাইরে রেখেই প্রথম একাদশে সাজান স্প্যানিশ কোচ। কিন্তু নজর কাড়েন দলের নয়া বিদেশি ফুটবলার মহম্মদ রশিদ। তবে ম্যাচের ১২ মিনিটের মধ্যেই জালে বল জড়িয়ে দলকে এগিয়ে দেন লালচুংনুঙ্গা। মহম্মদ রাকিপের বাড়ানো বল, সাউথ ইউনাইটেডের অধিনায়ক নয়োলের গায়ে লেগে ফিরে আসে। ডি বক্সের ভিতরে ঢুকে ফিরতি বলে শট নিয়ে গোল করতে ভুল করেননি এই ভারতীয় ডিফেন্ডার।
যুবভারতীর সবুজ গালিজায় ফুটবলে কিক মেরে ‘খেলা শুরু’র সূচনা মমতার
তারপর ২৭ মিনিটে ফের একবার ব্যবধান বাড়ানোর সুযোগ হয়েছিল অস্কারের দলের সামনে। কিন্তু বিষ্ণুর নেওয়া শট প্রতিহত করে দলকে গোল বাঁচান মিলিন্দ নেড়ি। বলাবাহুল্য, ম্যাচের অধিকাংশ সময়ে বল নিজেদের দখলে রাখতে দেখা যায় লাল-হলুদ ফুটবলারদের। তবে ৩৬ মিনিটে ঘটে বড় অঘটন। বক্সের মধ্যে শট নিতে যান এডমুনন্ড লালরিন্ডিকা। সেই সময় তাকে ফাউল করে বসেন সাউথ ইউনাইটেডের ডিফেন্ডার আব্দুল সালহা। ৩৮ মিনিটে পেনাল্টি থেকে গোল করতে কোন ভুল করেননি স্প্যানিশ তারকা সাউল ক্রেসপো। যারফলে প্রথমার্ধের শেষে ২-০ গোলের ব্যবধানে এগিয়ে যায় মশাল ব্রিগেড।
কিন্তু দ্বিতীয়ার্ধে বেশ কিছু সহজ গোলের সুযোগ হাতছাড়া করেন মহেশরা। ৬৩ মিনিটে নাওরেম মহেশ বাঁদিক থেকে শট নিলেও বল ডান পোস্টের কানা গেসে বেরিয়ে যায়। তবে ৮০ মিনিটে দিমিত্রিয়স দিয়ামান্তাকসের বাড়ানো বলে গোল করে যান বদলি হিসেবে লাল-হলুদ জার্সিতে অভিষেক ঘটানো বিপিন সিং। তারপর থেকেই মনবল ভাঙতে শুরু করেছিল প্রতিপক্ষ দলের। সেই সুযোগ কাজে লাগিয়ে ঘন ঘন আক্রমণ শানাতে থাকে ইস্টবেঙ্গল। তারপর ৮৮ মিনিটে বক্সের বাইরে ফ্রি কিক থেকে চতুর্থ গোলটি করেন দিমিত্রিয়স দিয়ামান্তাকস।
শেষ পর্যন্ত ম্যাচের নির্ধারিত সময়ে শেষ মিনিটে দূর পাল্লার শটে জয় সূচক গোলটি করেন নাওরেম মহেশ সিং। পরবর্তী ম্যাচে এই ধারাবাহিকতা বজায় রাখাই এখন অন্যতম লক্ষ্য অস্কার ব্রুজনের। প্রসঙ্গত ডুরান্ডের উদ্বোধনী ম্যাচে মশাল ব্রিগেডের সমর্থকদের ভিড় ছিল চোখে পড়ার মতো। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন রাজ্যের ক্রীড়ামন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস, মন্ত্রী সুজিত বসু ছাড়াও সেনা আধিকারিকরা। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বাংলার ছিল ঐতিহ্যবাহী বাউল গান এবং ছৌ না। হেলিকপ্টার থেকে পুষ্পবৃষ্টি করা হয়। পাশাপাশি বিভিন্ন রাজ্যের স্থানীয় নাচের অনুষ্ঠান হয়। তার মধ্যে ছিল ভাঙরা নাচ, মারাঠি নাচ, কুকরি ডান্স। এই টুর্নামেন্ট প্রসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “১৯৮৮ সাল থেকে ডুরান্ডকাপ হচ্ছে। বিশ্বের তৃতীয় প্রাচীনতম টুর্নামেন্ট। এবারের টুর্নামেন্টে বাংলার চারটি দল খেলছে। ভবিষ্যতে বাংলা থেকে আরও দল খেলবে।অন্য রাজ্যেরও দল খেলছে। উদ্বোধনী ম্যাচে ইস্টবেঙ্গল খেলছে সাউথ ইউনাডের সঙ্গে। প্রত্যেক দলকেই আমি শুভেচ্ছা জানাচ্ছি। বাংলার মানুষ সবসময় ফুটবল খেলাকে ভালোবাসে। আমরা আমাদের খেলা নিয়ে গর্বিত। আমি এই কাপ সেনাবাহিনীকে উৎস্বর্গ করছি।”