গত শনিবার যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গনে ইন্ডিয়ান সুপার লিগের (আইএসএল) দ্বিতীয় ডার্বিতে মুখোমুখি হয়েছিল ইমামি ইস্টবেঙ্গল (East Bengal FC) এবং মহামেডান স্পোর্টিং ক্লাব (Mohammedan SC)। শক্তিশালী মহামেডানের (Mohammedan SC)বিপক্ষে ইস্টবেঙ্গল (East Bengal FC) একাধিক বাধা সত্ত্বেও সম্মানজনক গোলশূন্য ড্র নিয়ে মাঠ ছাড়তে সক্ষম হয়, যা ম্যাচটি দেখার জন্য উপস্থিত থাকা হাজার হাজার সমর্থকদের আবেগ ও উত্তেজনাকে একদম তুঙ্গে নিয়ে যায়।
ম্যাচের প্রথমার্ধেই ইস্টবেঙ্গল (East Bengal FC) দলের দুই গুরুত্বপূর্ণ ফুটবলার লাল কার্ড দেখে মাঠ থেকে বেরিয়ে যাওয়ায় তারা নয়জনের দলে পরিণত হয়। এই পরিস্থিতিতে সাদা-কালো শিবিরের কাছে জয় পাওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে গেলেও ইস্টবেঙ্গল (East Bengal FC) খেলোয়াড়রা প্রবল উদ্যম ও সাহসে ম্যাচ চালিয়ে যান এবং শেষ পর্যন্ত গোলহীন অবস্থায় ম্যাচ শেষ করেন।
প্রভসুখান সিং গিলের (Prabhsukhan Singh Gill) সেভ এবং প্রতিরক্ষার দৃঢ়তা ইস্টবেঙ্গলের (East Bengal FC) এই লড়াইয়ে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। গোটা ম্যাচে তাঁর একাধিক সেভ শুধুমাত্র ইস্টবেঙ্গলকে (East Bengal FC) নিশ্চিত পরাজয়ের হাত থেকে বাঁচায়নি, বরং তাঁদের একটি মূল্যবান পয়েন্টও এনে দিয়েছে। ইস্টবেঙ্গল (East Bengal FC) সমর্থকদের মনেও তাঁর এই লড়াকু মেজাজ এক অনন্য স্থান তৈরি করেছে।
প্রভসুখান (Prabhsukhan Singh Gill) বলেন, “আমরা যখন মাঠে নয়জন ছিলাম, তখন মনে হচ্ছিল আমরা আসলে নয়জন নই। কারণ মাঠে থাকা আমাদের সমর্থকরা আমাদের ‘দশম খেলোয়াড়’ হিসেবে কাজ করেছে। পুরো ১০০ মিনিট জুড়ে তাঁরা আমাদের সমর্থন করে গেছে, আমরা খুবই ভাগ্যবান যে আমাদের এত বড় ফ্যানবেস রয়েছে। তাঁদের সমর্থনই আমাদের অনুপ্রেরণা যুগিয়েছে, যার ফলশ্রুতিতে আমরা নিজেদের সেরাটা দিতে সক্ষম হয়েছি।”
প্রথমার্ধের গোলশূন্য ড্রয়ের পরে দ্বিতীয়ার্ধের শুরু থেকেই ইস্টবেঙ্গল (East Bengal FC) আরও রক্ষণাত্মক খেলার দিকে মনোযোগ দেয়। অন্যদিকে, মহামেডান স্পোর্টিং (Mohammedan SC) ক্রমাগত আক্রমণাত্মক হয়ে উঠে আক্রমণ চালাতে থাকে। মাঝমাঠ থেকে অ্যালেক্সিস গোমেজ, লবি মানজোকি এবং ফ্রাঙ্কার নেতৃত্বে আক্রমণ শানাতে থাকলেও গোল করতে ব্যর্থ হয় সাদা-কালো দলটি।
গোলরক্ষক হিসেবে প্রভসুখান সিং গিলের (Prabhsukhan Singh Gill) এই পারফরম্যান্স শুধু ম্যাচটিকেই গুরুত্বপূর্ণ করে তোলেনি, বরং সিজনের শুরুর খারাপ সময় পার করে তিনি এখন দলের অন্যতম নির্ভরযোগ্য সদস্যে পরিণত হয়েছেন। এএফসি চ্যালেঞ্জ লিগের গ্ৰুপ পর্ব থেকেই নিজের পুরনো ছন্দে ফিরেছেন প্রভসুখান (Prabhsukhan Singh Gill) । এই ম্যাচে তাঁর অসাধারণ সেভ, সাহস এবং দৃঢ়তা তাঁকে ইস্টবেঙ্গল (East Bengal FC) দলের প্রাণভোমরায় পরিণত করেছে।
ইস্টবেঙ্গলের (East Bengal FC) এই লড়াইয়ের মানসিকতা, বিশেষ করে কম খেলোয়াড় নিয়ে খেলার সময়, দল এবং সমর্থকদের সম্পর্ককে আরও সুদৃঢ় করেছে। প্রভসুখান (Prabhsukhan Singh Gill) আরও বলেন, “এটা নিঃসন্দেহে আমাদের জন্য কঠিন সময় ছিল, কিন্তু সমর্থকদের উপস্থিতি এবং তাঁদের কণ্ঠস্বর আমাদের লড়াই চালিয়ে যেতে সাহায্য করেছে। এমন সমর্থকরা থাকলে মাঠে খেলার সময় প্রায়ই মনে হয়, আমরা একা নই। আমরা মাঠে সর্বদা তাঁদের শক্তি অনুভব করি, যা আমাদের আরও ভালো খেলতে অনুপ্রেরণা যোগায়।”
এছাড়াও, ইস্টবেঙ্গল (East Bengal FC) দলে আনোয়ার আলির মতো খেলোয়াড়দের উপস্থিতি রক্ষণভাগে দৃঢ়তা যোগাচ্ছে। তাঁর অভিজ্ঞতা এবং কৌশল প্রতিপক্ষের আক্রমণ রুখে দিতে এবং দলের রক্ষণভাগকে মজবুত রাখতে অনেকটাই সহায়ক হয়েছে। ইস্টবেঙ্গলের (East Bengal FC) এমন একটি ড্র শুধুমাত্র তাঁদের পয়েন্ট টেবিলেই সুবিধা এনে দেয়নি, বরং সমর্থকদের মনে এক প্রকার আশার সঞ্চার করেছে যে এই মরসুমে তাঁরা ইস্টবেঙ্গল (East Bengal FC) থেকে ভালো কিছু আশা করতে পারবেন।
ম্যাচ শেষে ইস্টবেঙ্গল (East Bengal FC) সমর্থকদের উল্লাস প্রমাণ করে যে, তাঁদের সমর্থন দলকে লড়াই করার শক্তি যুগিয়ে চলেছে। বহু বছর পর এক নতুন চেহারায় ইস্টবেঙ্গল (East Bengal FC) দল তাঁদের মর্যাদা রক্ষার লড়াইয়ে নামলেও সমর্থকদের সমর্থন তাঁদেরকে আরও শক্তিশালী করে তুলেছে।
এই ম্যাচে সমর্থকদের অবদান, প্রভসুখানের (Prabhsukhan Singh Gill) দুর্দান্ত পারফরম্যান্স এবং দলের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার দৃঢ়তা সব মিলিয়ে ইস্টবেঙ্গল ফু(East Bengal FC) টবল ক্লাবের একটি সফল দিন ছিল। এই ডার্বি ম্যাচের অভিজ্ঞতা এবং তাঁদের লড়াইয়ের মানসিকতা আসন্ন ম্যাচগুলিতে ইস্টবেঙ্গলের (East Bengal FC) জন্য গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে বলে আশা করা হচ্ছে।