ভারতীয় ফুটবল (Indian Football) ইতিহাসের অন্যতম সেরা ক্লাব ইস্টবেঙ্গল (East Bengal FC)। কিন্তু ইন্ডিয়ান সুপার লিগে গত তিন ম্যাচে হারের পর দলের অবস্থান খুবই শোচনীয়। যার ফলে শীর্ষ সাফল্যের স্বপ্নের বদলে তাদের নিদারুণ পরিস্থিতি দিন দিন আরও কঠিন হয়ে উঠছে। ঘরের মাঠে কেরালা ব্লাস্টার্সের (Kerala Blasters) বিরুদ্ধে খেলার কথা থাকলেও, দলের বর্তমান অবস্থা খুবই দুর্বল। যে কারণে কোচ অস্কার ব্রুজোও (Oscar Bruzon) পরিস্থিতির মোকাবিলা করতে কঠিন সময় পার করছেন। তবে, দলটির সমর্থকদের জন্য আশার আলো হয়ে উঠতে পারেন নতুন ফুটবলার রিচার্ড সেলিস (Richard Celis)। নতুন বিদেশি খেলোয়াড়, যিনি সম্প্রতি দলে যোগ দিয়েছেন এবং এফসি গোয়ার বিপক্ষে নজর কেড়েছেন।
গোয়াকে আটকে সুবিধা করবে বাগানকে? কী বললেন প্রীতম এবং চেন্নাই কোচ
The boss’ pre-match thoughts ahead of #EBFCKBFC. 💬
🎥 Full press conference link 👉 https://t.co/pw6NGdQ7Ij#JoyEastBengal #ISL @obruzon pic.twitter.com/1UxEO9bZJV
— East Bengal FC (@eastbengal_fc) January 24, 2025
ইস্টবেঙ্গল কি বিপদে? কেরালার বিরুদ্ধে ম্যাচে অনিশ্চিত তারকারা!
দলে আক্রমণাত্মক শক্তি হিসেবে দিমিত্রিয়স দিয়ামান্তাকস এবং ক্লেটন সিলভারা থাকলেও গোলের খরা কাটানো যাচ্ছে না। শুধু আক্রমণ নয়, পুরো দলের সামগ্রিক পারফরম্যান্সে সংকট দেখা দিয়েছে। গত তিন ম্যাচের ফলাফলে, ইস্টবেঙ্গল একেবারে দুর্বল অবস্থানে পড়ে গেছে। এর মধ্যে একাধিক চোটের আঘাতও দলের জন্য বড় ধাক্কা হয়ে দাঁড়িয়েছে। সবচেয়ে বড় ক্ষতি যে ফুটবলারের হয়েছে, তা হল আনোয়ার আলির চোট, যিনি দলের গুরুত্বপূর্ণ ডিফেন্ডার। তাঁর অনুপস্থিতি দলের পক্ষে বড় ধাক্কা ছিল।
অবশ্য, কোচ অস্কার ব্রুজো দলটির চোট সমস্যার পরও আশাবাদী। তিনি জানিয়েছেন যে, দলের বর্তমান খেলোয়াড়দের নিয়েই ভালো পারফর্ম করার লক্ষ্য নিয়ে এগোবেন। তবে, পরিস্থিতি এতটাই জটিল হয়ে দাঁড়িয়েছে যে, আর কোন অজুহাতই কার্যকর হতে পারে না। লাল-হলুদ শিবিরের লক্ষ্য ঘরের মাঠে জয়ের সারণিতে ফিরে আসা। কিন্তু তাদের জন্য এটি একটা বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে উঠছে। কেননা, কেরালা ব্লাস্টার্স তাদের প্রথম লেগের ম্যাচে হেরেছে এবং সেই ম্যাচে তারা দুর্বলতার পরিচয় দিয়েছে। এখন ইস্টবেঙ্গল ঘরের মাঠে সেই হারকে বদলাতে মরিয়া, কিন্তু দলের মানসিক অবস্থা এখনও সেই রকম দৃঢ় নয়।
আইলিগের এই মিডফিল্ডারের দিকে নজর চার হেভিওয়েট ক্লাবের
মাদিহ তালাল, যিনি মরসুমের মাঝপথে চোটে পড়ে বাইরে চলে গিয়েছিলেন। তাঁর জায়গায় ইস্টবেঙ্গল সেলিস নামক নতুন বিদেশি খেলোয়াড়কে দলে নিয়েছে। সেলিস গত ম্যাচে তাঁর অভিষেক করেছিলেন এবং যদিও তার পারফরম্যান্স ছিল একেবারে ভালো না, তবুও তাঁর উপস্থিতি দলের আক্রমণাত্মক শক্তি বৃদ্ধি করেছে। সেলিস চেষ্টা করছেন নতুন পরিবেশের সঙ্গে মানিয়ে নিতে, এবং তার প্রমাণ পাওয়া যাচ্ছে তার খেলায়। যদিও প্রথম ম্যাচে জয়ের মুখ দেখা যায়নি, তবে সেলিসের খেলা সমর্থকদের আশার আলো জ্বালিয়েছে। তার উচ্চতর মানের ফুটবল দক্ষতা ও মাঠে উপস্থিতি দলের জন্য এক নতুন সম্ভাবনা সৃষ্টি করেছে। এখন দেখার বিষয়, সেলিস নিজের ফর্ম ধরে রাখতে পারেন কিনা এবং দলের শক্তি আরও বাড়াতে পারেন কিনা।
একদিকে কোচ অস্কারের পক্ষে দলের জন্য নতুন রণনীতি তৈরি করা কঠিন হয়ে উঠেছে। অন্যদিকে দলের প্রত্যেকটা খেলোয়াড় নিজেদের দায়িত্ব বুঝে খেলার চেষ্টা করছেন। গোলের সংকটে থাকা ইস্টবেঙ্গল যদি সত্যিই ঘুরে দাঁড়াতে চায়, তবে তাদের নিজেদের শক্তির ওপর বিশ্বাস রাখতে হবে। ক্লেটন সিলভারা এবং দিমিত্রিয়স দিয়ামান্তাকসকে আরও কার্যকরী হয়ে উঠতে হবে। শুধু আক্রমণ নয়, মাঝমাঠে শক্তি বাড়ানোও একান্ত জরুরি। যদি তারা সঠিকভাবে ম্যাচে মনোযোগী হতে পারে এবং প্রতিপক্ষের রক্ষণভাগে চাপ সৃষ্টি করতে পারে, তবে ইস্টবেঙ্গল আবার সাফল্যের পথে হাঁটতে সক্ষম হবে।
ইস্টবেঙ্গল ম্যাচে জ্বলে উঠতে পারেন এই ভারতীয় তারকা
ঘরের মাঠে ফিরতে হলে আরও কঠিন সংগ্রাম করতে হবে ইস্টবেঙ্গলকে। তবে, কোচ অস্কারের বিশ্বাস ও দলের সামর্থ্য নিয়ে তার আশাবাদী মনোভাব দলের ভিতরে ইতিবাচক পরিবর্তন আনতে পারে। খেলোয়াড়দের কাছে কোচের বার্তা স্পষ্ট এখন সময় তাদের সামর্থ্যকে নতুন করে প্রমাণ করার, দলকে জয়ের পথে ফিরিয়ে আনতে হবে।
এখন ইস্টবেঙ্গলের জন্য বড় পরীক্ষা অপেক্ষা করছে। ঘরের মাঠে কেরালা ব্লাস্টার্সের বিপক্ষে বদলা নেওয়ার সুযোগ সামনে। তবে তাদের জন্য জয় নিশ্চিত করা কিছুটা কঠিন হয়ে উঠছে চোট সমস্যা ও আক্রমণাত্মক দক্ষতার অভাবে। সেলিসের ভূমিকা দলের জন্য গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠতে পারে। এক কথায়, এখন ইস্টবেঙ্গলকে নিজেদের শক্তির ওপর বিশ্বাস রেখে জয় অর্জন করতে হবে, তবে চ্যালেঞ্জগুলি কম নয়।