জয়ের হ্যাটট্রিক করে ডুরান্ড কাপের গ্রুপ পর্ব শেষ করল ইস্টবেঙ্গল ফুটবল ক্লাব (East Bengal FC)। নির্ধারিত সূচি অনুসারে রবিবার সন্ধ্যায় কিশোর ভারতী ক্রীড়াঙ্গনে গ্রুপের তৃতীয় অর্থাৎ শেষ ম্যাচ খেলতে নেমেছিল অস্কার ব্রুজোর ছেলেরা। পূর্ণ সময়ের শেষে ৬-১ গোলের ব্যবধানে জয় সুনিশ্চিত করল মশাল ব্রিগেড। এদিন দলের হয়ে গোল করলেন যথাক্রমে হামিদ আহদাদ, বিপিন সিং, আনোয়ার আলি, মহম্মদ রশিদ, সাউল ক্রেসপো এবং ডেভিড লালহানসাঙ্গা। অন্যদিকে, বায়ুসেনা দলের হয়ে একটি মাত্র গোল করে ব্যবধান কমিয়েছিলেন আমন। তবে শেষ পর্যন্ত বড় ব্যবধানেই পরাজিত হতে হল ময়দানের এই প্রধানের কাছে।
এদিন নিয়ম রক্ষার ম্যাচ হলেও প্রথম থেকেই যথেষ্ট দাপুটের সাথে খেলতে দেখা গিয়েছিল ইস্টবেঙ্গল ফুটবলারদের। আসলে কোয়ার্টার ফাইনালের আগে দলকে আরও ভালো করে দেখি নেওয়ার সুযোগ ছিল অস্কারের কাছে। সেটিকে পুরো দস্তুর কাজে লাগালেন এই স্প্যানিশ কোচ। দলের নতুন তারকা ফরোয়ার্ড হামিদকে প্রথম থেকেই রেখেছিলেন দলের মধ্যে। খুব একটা হতাশ করেননি এই মরোক্কান তারকা। ৭ মিনিটের মাথায় অনবদ্য হেডে বল জালে জড়িয়ে দিয়েছিলেন হামিদ আহদাদ। তারপর সময় এগোনোর সাথে সাথেই আরও আক্রমনাত্মক হয়ে উঠতে শুরু করেছিল লাল-হলুদ শিবির। কিন্তু প্রতিপক্ষের গোলরক্ষকের সক্রিয়তায় গোলের মুখ খোলা কিছুটা হলেও যেন কঠিন হয়ে গিয়েছিল ফুটবলারদের কাছে।
সুযোগ বুঝে পাল্টা আক্রমণ শানাতে ছাড়েনি বায়ুসেনার এই দলটি। তবে ২৬ মিনিটের মাথায় উইং থেকে বল নিয়ে এয়ার ফোর্সের রক্ষণভাগে ঢুকে পড়েছিলেন বিপিন সিং। তারপর ইনস্টেপে প্রতিপক্ষের এক ডিফেন্ডারকে কাটিয়ে সইয়া চলে গিয়েছিলেন গোলরক্ষকের সামনে। আটকানোর চেষ্টা করেও সে সংখ্যা করতে পারেননি। সেকেন্ড পোষ্টের কর্নার থেকে বল গোলে ঠেলে দেন সমর্থকদের প্রিয় বিপিন বাবু। তবে ৩৬ মিনিটের মাথায় লাল-হলুদের ডিফেন্ডারদের নজর এড়িয়ে জোরালো হেড করেন এয়ার ফোর্সের আমন। প্রভসুখান সিং বল আটকানোর চেষ্টা করলেও পরাস্ত হন শেষ পর্যন্ত। প্রথমার্ধের শেষে ২-১ গোলের ব্যবধানে নিয়ে গিয়ে থাকে ইস্টবেঙ্গল।
তবে দ্বিতীয়ার্ধ থেকে আক্রমণে আরও জোর বাড়াতে শুরু করে হামিদরা। একাধিকবার গোলের সুযোগ পেয়েছিলেন এই বিদেশি ফরোয়ার্ড। কিন্তু বল গোলে ঢোকাতে সক্ষম থাকেনি তিনি। গত ম্যাচের মত এই ম্যাচেও গোটা মাঠ দাপিয়ে খেলেন ব্রাজিলিয়ান তারকা মিগুয়েল ফিগুয়েরা। বেশ কিছু সুযোগ আসলেও গোলের খরা যেন কিছুতেই কাটছে না এই বিদেশির। কিন্তু নিজে গোল না পেলেও তার ভাসানো বল থেকেই দক্ষ হেডের মধ্য দিয়ে গোল করে যান জাতীয় দলের ডিফেন্ডার আনোয়ার আলি। সেই গোলের মাত্রা মিনিট চারেক পরেই প্রতিপক্ষের রক্ষণভাগ থেকে আশা বলে দূরপাল্লার শট নেন প্যালেস্টাইনের তারকা ফুটবলার মহাম্মদ রশিদ। প্রথম পোষ্টের কর্নার থেকে বল চলে যায় গোলের মধ্যে ।
তারপর ৮৫ মিনিটের মাথায় এয়ার ফোর্সের রক্ষণভাগে ঢুকে বল গোলে ঠেলে দিয়ে যান বদলি হয়ে আসা সাউল ক্রেসপো। নির্ধারিত নব্বই মিনিটের পর অতিরিক্ত ৪ মিনিটের মধ্যেই চলে আসে দলের ষষ্ঠ গোল। ৯১ মিনিটের মাথায় গোল পান ডেভিড। শেষ পর্যন্ত পাঁচটি গোলের ব্যবধানে সুনিশ্চিত করে রশিদরা।