নতুন বছরের শুরুতেই মুম্বই (Mumbai City FC) ম্যাচের আগে দুই বিদেশি ফুটবলারকে (Foreigners Footballer) নিয়ে সমর্থকদের সুখবর দিলেন ইস্টবেঙ্গল কোচ (East Bengal FC)। চলতি আইএসএল (ISL) মরসুমের প্রথম সাত ম্যাচে কোনো পয়েন্ট না পেয়ে লিগ পয়েন্টে বেশ কিছুটা পিছিয়ে পড়েছিল মশাল ব্রিগেড। ১৩ ম্যাচ পরেও এখন তাদের প্রধান লক্ষ্য সেরা ছয়ে পৌঁছানো। লাল-হলুদ কোচ (Coach) অস্কার ব্রুজো (Oscar Bruzon) বলেন, তারা প্রতিটি ম্যাচে পয়েন্ট অর্জন করতে চান যাতে সেরা ছয়ের দৌড়ে থাকতে পারেন।
বিজিটি শেষ, অস্তাচলের পথে এক ‘মহাতারকা’?
এখন পর্যন্ত ইস্টবেঙ্গলের দলে চারজন বিদেশি ফুটবলার রয়েছেন হিজাজি মাহের, হেক্টর ইউস্তে, গ্রিক ফরোয়ার্ড দিমিত্রিয়স দিয়ামান্তাকস এবং অধিনায়ক ক্লেন্টন সিলভা। কিন্তু স্প্যানিশ কোচ ব্রুজোর হাতে আসলে আর কোনো বিদেশি ফুটবলার নেই, কারণ ফরাসি মিডফিল্ডার মাদিহ তালাল পুরো মরশুমেই ছিটকে গিয়েছেন। তবে আশার কথা হচ্ছে, স্প্যানিশ মিডফিল্ডার সাউল ক্রেসপো চোট সারিয়ে শীঘ্রই মাঠে ফিরবেন বলে আশা করছেন কোচ। সাউল ক্রেসপো ভারত ফেরার জন্য স্পেনে গিয়েছিলেন, তবে সেখানে ভিসা সমস্যা তৈরি হওয়ায় তাঁর ফেরত আসতে কিছুটা সময় লাগছে।
দল ছাড়তে পারেন এই তারকা ডিফেন্ডার, জানুন
একজন বিদেশি ফুটবলারের ব্যাপারে ব্রুজো সমর্থকদের সুখবর দিয়েছেন। তিনি জানিয়েছেন, “মাদিহ তালালকে আর এই মরশুমে পাওয়া যাবে না। তবে তাঁর পরিবর্তে নতুন বিদেশি একজন ফুটবলারকে নেওয়া হবে, যার নাম ডার্বির আগেই ঘোষণা করা হবে।” ১১ জানুয়ারির কলকাতা ডার্বির আগে আরও এক বিদেশি ফুটবলার এসে পৌঁছানোর আশা ব্যক্ত করলেও এখনই ডার্বি ম্যাচকে গুরুত্ব দিতে নারাজ লাল-হলুদ শিবিরের হেড স্যার।
কোচ ব্রুজো অবশ্য কলকাতা ডার্বির আগে মুম্বই সিটি এফসির বিরুদ্ধে আরও একটি কঠিন ম্যাচ খেলার বিষয়টিকে গুরুত্ব দিয়েছেন। মুম্বই সিটি এফসি লিগের অন্যতম শক্তিশালী দল। ব্রুজো জানিয়ে দিয়েছেন, মুম্বই একটি দ্রুত গতির দল, যারা দুই প্রান্ত দিয়ে আক্রমণ তৈরি করতে পছন্দ করে। তিনি আরও বলেন, “আমরা জানি, মুম্বই সিটি এফসি কোথায় শক্তিশালী এবং কোথায় দুর্বল। সেই অনুযায়ী পরিকল্পনা তৈরি করা হবে, যাতে মাঠে সফল হতে পারি।”
কেরালার কাছে পরাজিত হয়ে কী বললেন ডিলমপেরিস ?
ইস্টবেঙ্গল কোচ স্বীকার করেছেন যে, মুম্বই সিটি এফসিকে হারানো তাদের জন্য সহজ হবে না। তবে দলের দুর্বলতা ধরতে পারলে তারা জয় নিশ্চিত করতে পারেন। ব্রুজো বলেন, “যে দলগুলো দ্রুত ট্রানজিশন করতে পারে, তাদের বিরুদ্ধে আমাদের সমস্যা বেশি হয়। তাদের আক্রমণগুলো অনেকটাই ভার্টিকাল ফুটবলে তৈরি হয়, তাই আমাদের সেগুলো ব্লক করে আটকে রাখতে হবে।”
ইস্টবেঙ্গল কোচের কথায়, তাদের লক্ষ্য সেরা ছয়ে পৌঁছানো হলেও, এখন পর্যন্ত ১৩ ম্যাচে ১৪ পয়েন্ট সংগ্রহ করা হয়েছে, এবং তাদের ১১টি ম্যাচ বাকি আছে। এর মধ্যে পাঁচটি ম্যাচ তারা খেলবে এই মাসেই, যার মধ্যে মুম্বই সিটি এফসির বিরুদ্ধে হোম ম্যাচও রয়েছে। যদি তারা এসব ম্যাচে পয়েন্ট হারায়, তবে সেরা ছয়ের দৌড়ে থাকার সুযোগ প্রায় শূন্য হয়ে যাবে। তাই কোচ জানিয়েছেন, “আমরা যদি এ মাসে পয়েন্ট না পাই, তাহলে আমাদের কোন আশা থাকবে না।”
এই ভারতীয় গোলরক্ষকের দিকে নজর দুই ফুটবল ক্লাবের
কোচ অস্কার ব্রুজো আরও বলেছেন, “প্রথম সাতটি ম্যাচে পয়েন্ট না পাওয়ার কারণে আমাদের অনেক পিছিয়ে যেতে হয়েছে। এখন আমাদের লক্ষ্য সেরা ছয়ে পৌঁছানো, কিন্তু সে জন্য আমাদের অনেক কিছু মেনে চলতে হবে। কোচিং, ফুটবলারদের পারফরম্যান্স, চোট-আঘাত এবং রেফারিং সবকিছুর ওপর নির্ভর করবে আমাদের পারফরম্যান্স। আমরা এখন প্রতিটি ম্যাচে পয়েন্ট অর্জন করতে চাই, এবং আমরা গত কয়েকটি ম্যাচে যেভাবে খেলেছি, সেভাবেই খেলতে চাই।”
ইস্টবেঙ্গল কোচ আরও বলেছেন, যদি তারা সেরা ছয়ে পৌঁছাতে না পারে, তবুও তাদের জন্য এটি কোনো পরাজয় হবে না। কারণ, খুব খারাপ শুরু হওয়ার পরও তারা ভালোভাবে ঘুরে দাঁড়িয়েছে। কোচের মতে, “যদি সেরা ছয়ে না পৌঁছাই, তবে কি আমরা ব্যর্থ হয়ে যাব? মনে হয় না। কারণ, শুরুর দিকে আমাদের অবস্থান ছিল খারাপ, কিন্তু আমরা পরবর্তীতে দারুণভাবে ফিরে এসেছি। আমাদের সমর্থকদের বুঝতে হবে, আমরা যদি লক্ষ্যে পৌঁছাতে না পারি, তবুও আমাদের দলের সংগ্রাম এবং লড়াইয়ের জন্য গর্বিত হওয়া উচিত।”
পাঞ্জাবকে হারিয়ে পয়েন্ট টেবিলের কিছুটা উপরে কেরালা ব্লাস্টার্স
এটি স্পষ্ট যে, ইস্টবেঙ্গলের দল এখনও উন্নতির প্রক্রিয়ায় রয়েছে এবং কোচ ব্রুজো দলের জন্য আরও ভাল কাজ করার পরিকল্পনা করছেন। “এখন আমাদের দল নতুনভাবে তৈরি হচ্ছে। কিছু সমস্যা ও বাধা রয়েছে, যা আমরা দূর করতে চাই। ২০২৫ সালে আমরা পয়েন্ট টেবলে আরও ভাল জায়গায় যেতে চাই। তবে, এইসব লক্ষ্য অর্জন করতে আমাদের ফুটবলারদের ওপর চাপ প্রয়োগ করা উচিত হবে না,” বলেন কোচ ব্রুজো।