জয়ের ধারা অব্যাহত লাল-হলুদের। বুধবার সন্ধ্যায় সল্টলেকে যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গনে ডুরান্ড কাপের দ্বিতীয় ম্যাচ খেলছে নেমেছিল ইস্টবেঙ্গল (East Bengal) ফুটবল ক্লাব। যেখানে লড়াই করতে হয়েছিল আইলিগের ক্লাব নামধারী এফসির সঙ্গে। পূর্ণ সময় শেষে ১-০ গোলের ব্যবধানে এই ম্যাচে জয় ছিনিয়ে নিল অস্কার ব্রুজোর ছেলেরা। এদিন নিজের প্রথম ম্যাচেই গোল করেন মরোক্কান তারকা হামিদ আহদাদ। এছাড়াও গোটা ম্যাচ জুড়ে দাপিয়ে খেললেন ব্রাজিলিয়ান তারকা মিগুয়েল ফিগুয়েরা। গোটা ম্যাচ জুড়ে একাধিকবার গোলের সুযোগ এসেছিল এই ফুটবলারের কাছে। কিন্তু ভাগ্য সুপ্রসন্ন থাকেনি। না হলে অনায়াসেই বড় ব্যবধানে ম্যাচ জিততে পারত ইস্টবেঙ্গল।
এই জয়ের ফলে নকআউট নিশ্চিত হয়ে গেল মশাল ব্রিগেডের। গত ম্যাচে সাউথ ইউনাইটেডের বিপক্ষে বিরাট বড় ব্যবধানে জয় আসার ফলে স্বাভাবিকভাবেই ব্যাপক আত্মবিশ্বাস নিয়ে মাঠে খেলতে নেমেছিল মহম্মদ রশিদরা। প্রথম থেকেই এদিন চার বিদেশি ফুটবলারকে মাঠে রেখে ম্যাচ শুরু করেছিল লাল-হলুদ শিবির। সাউল ক্রেসপো থেকে শুরু করে দিমিত্রিওস ডায়মান্তাকস ও মহম্মদ রশিদ সহ এদিন দলে আনা হয়েছিল ব্রাজিলিয়ান তারকা মিগুয়েল ফিগুয়েরাকে। প্রথম থেকেই তার ঝাঁঝালো আক্রমণ মন জয় করতে শুরু করেছিল দলের সমর্থকদের। ম্যাচের প্রথম কোয়ার্টারের মধ্যেই দূরপাল্লার শট নিয়ে গোল তুলে নিতে চেয়েছিলেন এই ফুটবলার।

কিন্তু প্রতিপক্ষের পোস্টের উপর দিয়ে চলে যায় সেই বল। তারপর ম্যাচের বয়স যত বেড়েছে আর ও সক্রিয় হয়ে উঠতে দেখা গিয়েছিল এই ব্রাজিলিয়ানকে। দুর্দান্ত হেডের পাশাপাশি আরও একাধিকবার শট নিয়েছিলেন মিগুয়েল ফিগুয়েরা। কিন্তু পোস্টে প্রতিহত হয়েছে একাধিকবার। এছাড়াও ম্যাচের প্রায় মিনিট দশেকের মাথায় বিপিনের ক্রস থেকে গোলের মুখ খোলার সুযোগ এসে গিয়েছিল গ্ৰীক ফরোয়ার্ড দিমিত্রিওস দিয়ামান্তাকোসের কাছে। কিন্তু ঠান্ডা মাথায় পরিস্থিতি সামাল দিয়েছিলেন নামধারীর গোলরক্ষক নীরজ কুমার। তারপর ২১ মিনিটের মাথায় দূরপাল্লা শট নিয়েছিলেন মিগুয়েল ফিগুয়েরা। কিন্তু পোস্টে লেগে বল ফিরে আসে মাঠের মধ্যে। তারপর প্রথমার্ধের একেবারে শেষের দিকে তাঁকে ফাউল করার জন্য পেনাল্টির ও আবেদন করতে দেখা গিয়েছিল এই বিদেশি ফুটবলারকে।
কিন্তু তাতে কর্ণপাত করেননি ম্যাচ রেফারি।স্বাভাবিকভাবেই গোলশূন্য ফলাফল প্রথমার্ধ শেষ করেছিল নাওরেম মহেশ সিংরা। তবে দ্বিতীয়ার্ধে আরও আক্রমণাত্মক হয়ে উঠতে শুরু করেছিল ইস্টবেঙ্গল। বিপিন সিং থেকে শুরু করে নাওরেম মহেশ সিং এবং সাউল ক্রেসপোর সক্রিয়তায় বারংবার প্রতিপক্ষের রক্ষণভাগে চাপ সৃষ্টি করতে শুরু করেছিল কলকাতা ময়দানের এই প্রধান। তবে গোলের মুখ খুলতে গিয়ে হিমশিম খেতে হচ্ছিল অস্কার ব্রুজোর ছেলেদের। তারপর আসে সেই মাহেন্দ্রক্ষণ। ৬১ মিনিটের মাথায় গ্ৰীক ফরোয়ার্ডকে তুলে ১৭ নম্বর জার্সিধারী ফরোয়ার্ড হামিদ আহদাদকে মাঠে নামান কোচ।
তারপর আর বেশিক্ষণ অপেক্ষা করতে হয়নি। মাত্র মিনিট ছয়েক পরেই মিগুয়েল ফিগুয়েরার ভাসানো কর্নার থেকে হেড করে বল গোলে ঠেলে দেন এই মরোক্কান তারকা। যারফলে ১-০ গোলের ব্যবধানে এগিয়ে যায় ইস্টবেঙ্গল। তারপর ৭০ মিনিটের মাথায় মার্তন্ড রায়নাকে তুলে এডমুন্ড লালরিন্ডিকাকে মাঠে নামান লাল-হলুদ কোচ। তাঁর আসার পর থেকেই আক্রমণে আরও ঝাঁঝ বাড়িয়েছিল এই ফুটবল দল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত গোলের সংখ্যা বাড়ানো সম্ভব হয়নি। পরবর্তীতে খেলোয়াড় বদল করে আর্জেন্টাইন তারকা কেভিন সিবিলে, নন্দকুমার ও সৌভিক চক্রবর্তীকে মাঠে নামিয়ে দেখে নেন কোচ। তাঁদের সক্রিয়তায় ও প্রধান বাড়ানোর বেশ কয়েকবার সুযোগ এসেছিল এই প্রধানের কাছে। কিন্তু তা সম্ভব হয়নি। নির্ধারিত ৯০ মিনিটের পর অতিরিক্ত ৫ মিনিট সময় যুক্ত করা হয়েছিল ম্যাচ রেফারির তরফে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত একটি গোলের ব্যবধানেই আসে জয়।