ইস্টবেঙ্গল (East Bengal) ক্লাবের খো খো দলের জন্য একটি ঐতিহাসিক মুহূর্ত হয়ে থাকবে এই দিনটি। শিলিগুড়িতে অনুষ্ঠিত ৬৬ তম সিনিয়র রাজ্য খো খো চ্যাম্পিয়নশিপে প্রথমবারের মতো পুরোদস্তুর একটি টিম গঠন করে চ্যাম্পিয়ন হল ইস্টবেঙ্গল ক্লাবের মহিলা দল। ফাইনালে তারা হুগলি জেলা দলকে ১ পয়েন্টের ব্যবধানে পরাজিত করে শিরোপা জয় করেছে। এটি এই দলের প্রথম বড় সাফল্য, যা তাদের খেলার মান এবং প্রস্তুতির সাক্ষ্য।
ফাইনাল ম্যাচটি ছিল অত্যন্ত উত্তেজনাপূর্ণ এবং দুই দলের মধ্যে তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতা। ইস্টবেঙ্গল দলের খেলোয়াড়রা, যারা দীর্ঘদিন ধরে একে অপরের সঙ্গে খেলছেন, তাদের মধ্যে দৃঢ় সমন্বয় এবং দলীয় মনোভাবই এই শিরোপা অর্জনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। এই জয়ের পেছনে দলের কোচের প্রশিক্ষণ, খেলার কৌশল এবং মানসিক প্রস্তুতিও ছিল অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। দলের সকল সদস্যের কঠোর পরিশ্রম এবং একাগ্রতা তাদের জয় এনে দিয়েছে।
ইস্টবেঙ্গল ক্লাবের মহিলা খো খো দলের অধিনায়ক ম্যাচ শেষে সাংবাদিকদের বলেন, “আমরা খুবই খুশি যে প্রথমবারের মতো শিরোপা জিতলাম। আমাদের কঠোর পরিশ্রমের ফল আমরা পেলাম। আমি আমার সহকর্মীদের ধন্যবাদ জানাই, এবং আমাদের কোচের সমর্থন ছাড়া এই জয় সম্ভব হত না।”
চ্যাম্পিয়ন ইস্টবেঙ্গল ক্লাবের পুরুষ খো খো টিম
এছাড়া, ইস্টবেঙ্গল ক্লাবের পুরুষ খো খো দলও চ্যাম্পিয়নশিপে জয়ী হয়ে ইতিহাস তৈরি করেছে। শিলিগুড়িতে অনুষ্ঠিত একই ৬৬ তম সিনিয়র রাজ্য খো খো চ্যাম্পিয়নশিপে তারা প্রথমবারের মতো পূর্ণাঙ্গ টিম হিসেবে অংশ নিয়ে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে। ফাইনালে তারা শক্তিশালী পশ্চিমবঙ্গ পুলিশকে পরাজিত করে শিরোপা লাভ করেছে। এই জয় ইস্টবেঙ্গল ক্লাবের পুরুষ খো খো দলের জন্য এক নতুন মাইলফলক।
ফাইনাল ম্যাচে ইস্টবেঙ্গল পুরুষ দল দুর্দান্ত খেলা প্রদর্শন করে এবং শেষ পর্যন্ত চ্যাম্পিয়ন হয়। এই জয়ের জন্য দলের খেলোয়াড়রা বিশেষভাবে প্রশংসিত হয়েছেন। ম্যাচের শেষ মুহূর্তে একেবারে নাটকীয়ভাবে ম্যাচের ফলাফল নির্ধারিত হয়। তবে শেষ পর্যন্ত ইস্টবেঙ্গল নিজেদের সেরাটা দিয়ে প্রতিপক্ষকে পরাজিত করে শিরোপা তুলে নেয়। এই জয়ে দলের খেলার মান এবং প্রস্তুতির দারুণ অভ্যন্তরীণ ঐক্য স্পষ্ট হয়েছে।
পুরুষ দলের অধিনায়কও ম্যাচের পর একি রকম উচ্ছ্বসিত হয়ে বলেন, “আমরা জানতাম যে ফাইনালে কঠিন প্রতিদ্বন্দ্বিতার মুখোমুখি হতে হবে, তবে আমাদের দৃঢ় মনোভাব এবং দলের সমন্বয় আমাদের জিততে সাহায্য করেছে। আমাদের কোচের দিকনির্দেশনা এবং পরামর্শ ছাড়া এই জয় সম্ভব ছিল না।”
ইস্টবেঙ্গল ক্লাবের এই সাফল্য
ইস্টবেঙ্গল ক্লাবের মহিলা এবং পুরুষ খো খো দলের একই আসরে শিরোপা জয় ক্লাবের ইতিহাসে একটি অনন্য অর্জন। দুই দলের শিরোপা জয় প্রমাণ করে যে ইস্টবেঙ্গল শুধুমাত্র ফুটবল বা হকি নয়, বরং অন্যান্য খেলাতেও শক্তিশালী এবং চ্যাম্পিয়ন হওয়ার সক্ষমতা রাখে। এই সাফল্যটি কেবল ক্লাবের খেলোয়াড়দের কঠোর পরিশ্রমের ফল নয়, বরং ক্লাব কর্তৃপক্ষ এবং কোচিং স্টাফদেরও সহযোগিতার ফল।
এই জয়কে কেন্দ্র করে ইস্টবেঙ্গল ক্লাবের সমর্থকরা আনন্দিত। তারা দলটির সাফল্যে গর্বিত এবং আশা করছেন যে, ভবিষ্যতেও এই ধরনের অর্জন তাদের জন্য অপেক্ষা করছে। খো খো খেলায় এই সাফল্য ইস্টবেঙ্গল ক্লাবের জন্য এক নতুন দিগন্ত উন্মোচন করেছে, এবং এটি অন্যান্য প্রতিযোগিতাতেও তাদের শক্তি আরও বৃদ্ধি করবে।
এই অর্জন, যা মহিলা এবং পুরুষ দলের সমানভাবে সম্মানজনক, ইস্টবেঙ্গল ক্লাবের জন্য নতুন একটি যুগের সূচনা করেছে। এতে শুধুমাত্র ক্লাবের গৌরব বৃদ্ধি পাবে না, বরং বাংলার খেলার জগতেও একটি নতুন মাইলফলক তৈরি হবে।