ডব্লিউপিএলে হারের কারণ ব্যাখ্যায় ‘বিস্ফোরক’ মুম্বই ইন্ডিয়ান্স কোচ

মুম্বই ইন্ডিয়ান্সের প্রধান কোচ শার্লট এডওয়ার্ডস বলেছেন, দিল্লি ক্যাপিটালসের অধিনায়ক মেগ ল্যানিং এবং ওপেনার শাফালি ভার্মার প্রারম্ভিক উইকেটই তাঁদের দলকে মহিলা প্রিমিয়ার লিগ (WPL) ২০২৫-এর…

Mumbai Indians head coach Charlotte Edwards

short-samachar

মুম্বই ইন্ডিয়ান্সের প্রধান কোচ শার্লট এডওয়ার্ডস বলেছেন, দিল্লি ক্যাপিটালসের অধিনায়ক মেগ ল্যানিং এবং ওপেনার শাফালি ভার্মার প্রারম্ভিক উইকেটই তাঁদের দলকে মহিলা প্রিমিয়ার লিগ (WPL) ২০২৫-এর ফাইনালে জয় এনে দিয়েছে। শনিবার রাতে মুম্বইয়ের ব্রাবোর্ন স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত ফাইনালে মুম্বই ইন্ডিয়ান্স দিল্লি ক্যাপিটালসকে ৮ রানে হারিয়ে তাদের দ্বিতীয় শিরোপা জিতে নেয়। ১৫০ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে দিল্লি মাত্র ১৭ রানে ল্যানিং (১৩) এবং শাফালি (৪)-এর উইকেট হারায় এবং শেষ পর্যন্ত ১৪১/৯-এ থেমে যায়।

   

ম্যাচ-পরবর্তী সাংবাদিক সম্মেলনে এডওয়ার্ডস বলেন, “১৫০ রান আমাদের কাছে একটু কম মনে হচ্ছিল। কিন্তু ফাইনালে এই রানের মূল্য একটু বেশি হয়। শাফালি যেভাবে সাধারণত ব্যাটিং শুরু করে, সেভাবে আজ খেলতে পারেনি। আমি তখনই বুঝেছিলাম, আমাদের জয়ের সম্ভাবনা রয়েছে। যদি আমরা তাঁর উইকেট তাড়াতাড়ি নিতে পারি, তবে ম্যাচ আমাদের দিকে ঘুরে যেতে পারে।” তিনি আরও যোগ করেন, “শাফালি এবং ল্যানিংয়ের উইকেট আমাদের জন্য টার্নিং পয়েন্ট হয়ে দাঁড়ায়। এরপর আমরা চাপ ধরে রাখতে পেরেছি।”

মুম্বইয়ের বোলাররা শুরু থেকেই দিল্লির ওপর চাপ সৃষ্টি করে। শাবনিম ইসমাইল এবং ন্যাট সিভার-ব্রান্ট দ্বিতীয় ও তৃতীয় ওভারে যথাক্রমে ল্যানিং এবং শাফালিকে প্যাভিলিয়নে ফেরান। এডওয়ার্ডসের কৌশল ছিল দিল্লির শক্তিশালী ওপেনিং জুটিকে ভাঙা, এবং তাঁর পরিকল্পনা পুরোপুরি কাজে লেগেছে। শাফালি, যিনি সাধারণত আক্রমণাত্মক ব্যাটিংয়ের জন্য পরিচিত, এদিন মাত্র ৪ রানে আউট হন। ল্যানিংও তাঁর অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে দলকে টেনে তোলার আগেই ১৩ রানে ফিরে যান। এই দুই উইকেট দিল্লির মিডল অর্ডারের উপর বিরাট চাপ ফেলে, যা তারা শেষ পর্যন্ত কাটিয়ে উঠতে পারেনি।

এডওয়ার্ডস ম্যাচের পর বলেন, “আমরা জানতাম, শাফালি এবং ল্যানিংকে আটকাতে পারলে দিল্লির ব্যাটিং লাইনআপে চাপ পড়বে। আমাদের বোলাররা শুরুতে দারুণ কাজ করেছে। শাবনিম এবং ন্যাট তাদের অভিজ্ঞতা দিয়ে ম্যাচের গতিপথ বদলে দিয়েছে।” তিনি দলের সামগ্রিক পারফরম্যান্সেরও প্রশংসা করেন, বিশেষ করে অধিনায়ক হরমনপ্রীত কৌরের ব্যাটিং এবং শেষ ওভারে আমেলিয়া কেরের শান্ত মাথার বোলিংয়ের কথা উল্লেখ করেন।

মুম্বই ইন্ডিয়ান্স প্রথমে ব্যাট করে ১৪৯/৭ করে। হরমনপ্রীত (৫১) এবং সিভার-ব্রান্ট (৪৮)-এর ৮৯ রানের জুটি দলকে লড়াই করার মতো স্কোরে পৌঁছে দেয়। তবে এডওয়ার্ডস মনে করেন, ফাইনালের চাপে ১৫০ রানও যথেষ্ট ছিল। তিনি বলেন, “ফাইনালে প্রতিটি রানের মূল্য বেশি। আমাদের বোলাররা এই স্কোরকে ডিফেন্ড করার জন্য দারুণ কাজ করেছে।”

দিল্লির পক্ষে জেমিমা রড্রিগেস (৩০) এবং মারিজান ক্যাপ (৩৩) লড়াই চালিয়ে যান। শেষ ওভারে ১৪ রান প্রয়োজন হলেও কেরের নিয়ন্ত্রিত বোলিং দিল্লির জয়ের আশা শেষ করে দেয়। এডওয়ার্ডস বলেন, “শাফালি যখন আউট হল, আমি বুঝেছিলাম আমরা ম্যাচে ফিরে এসেছি। ল্যানিংয়ের উইকেট আমাদের আরও আত্মবিশ্বাস দিয়েছে। এরপর আমরা কখনও পিছনে ফিরে তাকাইনি।”

এই জয়ের মধ্য দিয়ে মুম্বই ইন্ডিয়ান্স তিন মরশুমে তাদের দ্বিতীয় ডব্লিউপিএল শিরোপা জিতেছে। এডওয়ার্ডসের কৌশল এবং দলের প্রতিটি খেলোয়াড়ের অবদান এই সাফল্যের পিছনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। তিনি বলেন, “এই জয় আমাদের দলের একতা এবং চাপের মুখে লড়ার ক্ষমতার প্রমাণ। আমি আমার খেলোয়াড়দের নিয়ে গর্বিত।”

অন্যদিকে, দিল্লি ক্যাপিটালস তৃতীয়বার ফাইনালে পৌঁছে শিরোপা জিততে ব্যর্থ হয়েছে। ল্যানিং এবং শাফালির প্রারম্ভিক বিদায় তাদের ব্যাটিংয়ে বড় ধাক্কা দেয়, যা থেকে তারা আর ফিরে আসতে পারেনি। এই হার দিল্লির জন্য একটি শিক্ষা হতে পারে যে ফাইনালে শুরু থেকে ধরে রাখা কতটা গুরুত্বপূর্ণ।