Dwayne Smith on Sachin: সচিন সম্পর্কে ‘বিস্ফোরক’ মন্তব্য প্রাক্তন ওয়েস্ট ইন্ডিজ ব্যাটারের

প্রাক্তন ওয়েস্ট ইন্ডিজ ক্রিকেটার ডোয়াইন স্মিথ (Dwayne Smith ) সম্প্রতি অতীতের স্মৃতির পাতা উল্টে মুম্বই ইন্ডিয়ান্সে ‘মাস্টার ব্লাস্টার’ সচিন তেন্ডুলকারের (Sachin Tendulkar) সঙ্গে কাটানো সময়ের…

Dwayne Smith Reveals What Made Sachin Tendulka

প্রাক্তন ওয়েস্ট ইন্ডিজ ক্রিকেটার ডোয়াইন স্মিথ (Dwayne Smith ) সম্প্রতি অতীতের স্মৃতির পাতা উল্টে মুম্বই ইন্ডিয়ান্সে ‘মাস্টার ব্লাস্টার’ সচিন তেন্ডুলকারের (Sachin Tendulkar) সঙ্গে কাটানো সময়ের কথা মনে করেছেন। প্রায় এক দশক আগের ঘটনাগুলোর কথা বলতে গিয়ে ৪১ বছর বয়সী এই ক্রিকেটার প্রকাশ করেছেন, কী কারণে সচিনকে তিনি “মহান” মনে করেন। ২০১৩ সালের চ্যাম্পিয়ন্স লিগ টি-টোয়েন্টিতে (এখন বন্ধ হয়ে যাওয়া একটি টুর্নামেন্ট) স্মিথ সচিনের সঙ্গে মুম্বই ইন্ডিয়ান্সের হয়ে ওপেনিং করতেন। সেই সময়ের অভিজ্ঞতা শেয়ার করতে গিয়ে তিনি বলেছেন, সচিনের প্রস্তুতি ও জ্ঞান ভাগ করে নেওয়ার মানসিকতাই তাঁকে অনন্য করে তুলেছিল।

সচিনের সঙ্গে সময় কাটানোর স্মৃতি
ডোয়াইন স্মিথ আইএমএল-এর একটি প্রেস রিলিজে উদ্ধৃত হয়ে বলেছেন, “যখন আমি মুম্বই ইন্ডিয়ান্সে ছিলাম, আমি সবসময় সচিনের আশেপাশে থাকার চেষ্টা করতাম। আমি তাঁর সঙ্গে ওপেনিং করার সময় জানতে চাইতাম, আমি যার সঙ্গে খেলছি, তিনি কেমন মানুষ। আমি যার সঙ্গে মাঠে নামছি, তাঁকে বুঝতে চাইতাম।” তিনি আরও বলেন, “আমি তাঁর সঙ্গে থাকতাম, প্রশ্ন করতাম। তিনি খুবই সহযোগী ছিলেন। দলের সবার সঙ্গে তাঁর ব্যবহার অসাধারণ ছিল। তিনি সবসময় নিজের জ্ঞান ভাগ করে দিতেন। এটাই দেখায় তিনি কেন এত মহান ছিলেন—তাঁর ক্রিকেটের জন্য প্রস্তুতি অসাধারণ ছিল।”

kolkata24x7-sports-News

   

স্মিথের কথায় ফুটে উঠেছে সচিনের সরলতা ও দলের প্রতি তাঁর অবদান। তিনি সবসময় তরুণ খেলোয়াড়দের সঙ্গে অভিজ্ঞতা শেয়ার করতেন, যা তাঁর মহানত্বের একটি বড় কারণ।

Also Read | স্মিথদের বিপক্ষে অনিশ্চিত কিউই ম্যাচের ‘নায়ক’, ইঙ্গিত হিটম্যানের!

সচিনের সঙ্গে মাঠে নামা: এক স্বপ্নপূরণ
স্মিথ সচিনের সঙ্গে মাঠে ওপেনিং করার অভিজ্ঞতাকে “স্বপ্নপূরণ” বলে বর্ণনা করেছেন। তিনি বলেন, “তাঁর সঙ্গে খেলা খুব সহজ ছিল। আইপিএল-এর প্রথম বছরে তাঁর সঙ্গে ব্যাট করার কথা মনে আছে। তিনি আমাকে বলেছিলেন, বল সোজা খেলতে এবং কাট বা পুল না করতে। কিন্তু তিনি নিজে উল্টোটা করছিলেন! তারপর তিনি আমার কাছে এসে হেসে বললেন, ‘আমি যা বলি তাই করো, আমি যা করি তা নয়।’ এই কথাটা আমার মনে গেঁথে গেছে।”

তিনি আরও যোগ করেন, “যখন আমি মুম্বইতে ফিরে তাঁর সঙ্গে ওপেনিং করি, তখন মনে হয়েছিল এটা আমার একটা স্বপ্ন। ক্রিকেটের একজন মহান ব্যক্তির সঙ্গে মাঠে নামা সবসময়ই বিশেষ। আমি সবসময় তাঁর পিছনে হাঁটতাম, কারণ তিনি মহান মানুষ।” স্মিথের এই কথায় সচিনের প্রতি তাঁর শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা স্পষ্ট।

সচিনের পরামর্শ ও প্রস্তুতি
স্মিথের বর্ণনায় সচিনের ক্রিকেটের প্রতি নিষ্ঠা ও প্রস্তুতির একটি চিত্র ফুটে উঠেছে। তিনি যেভাবে খেলার জন্য নিজেকে প্রস্তুত করতেন, তা তাঁকে অন্যদের থেকে আলাদা করে দিয়েছিল। স্মিথ বলেন, “তিনি যেভাবে ক্রিকেটের জন্য প্রস্তুতি নিতেন, তা থেকেই বোঝা যায় তিনি কেন এত বড় ক্রিকেটার হয়েছিলেন। তিনি সবসময় দলের খেলোয়াড়দের সঙ্গে নিজের অভিজ্ঞতা ভাগ করতেন।” সচিনের এই গুণ তাঁকে শুধু মাঠে নয়, মাঠের বাইরেও সবার কাছে প্রিয় করে তুলেছিল।

২০১৩ সালে চ্যাম্পিয়ন্স লিগ টি-টোয়েন্টিতে স্মিথ ও সচিনের জুটি মুম্বই ইন্ডিয়ান্সের জন্য গুরুত্বপূর্ণ ছিল। স্মিথের মতে, সচিনের পরামর্শ ও দিকনির্দেশনা তাঁর খেলার ধরনে ইতিবাচক প্রভাব ফেলেছিল। তিনি সচিনের কাছ থেকে শিখেছিলেন কীভাবে পরিস্থিতি অনুযায়ী খেলতে হয় এবং নিজেকে মানিয়ে নিতে হয়।

সচিনের ক্রিকেটীয় উত্তরাধিকার
সচিন তেন্ডুলকার ভারতীয় ক্রিকেটের এক কিংবদন্তি। ১৯৮৯ সালে অভিষেকের পর থেকে ২০১৩ সালে অবসর নেওয়া পর্যন্ত তিনি ১০০টি আন্তর্জাতিক শতরান করেছেন, যা বিশ্ব রেকর্ড। ওডিআই-তে তাঁর ১৮,৪২৬ রান এবং টেস্টে ১৫,৯২১ রান তাঁকে ক্রিকেট ইতিহাসের শ্রেষ্ঠ ব্যাটসম্যানদের একজন করে তুলেছে। মুম্বই ইন্ডিয়ান্সের হয়ে আইপিএল-এ তিনি দলকে ২০১৩ সালে শিরোপা জিততে সাহায্য করেছিলেন। স্মিথের মতো তরুণ ক্রিকেটারদের তিনি যেভাবে পথ দেখিয়েছেন, তা তাঁর উত্তরাধিকারের একটি বড় অংশ।

ডোয়াইন স্মিথের ক্যারিয়ার
ডোয়াইন স্মিথ ওয়েস্ট ইন্ডিজের হয়ে ১০টি টেস্ট, ১০৫টি ওডিআই এবং ৩৩টি টি-টোয়েন্টি খেলেছেন। তিনি একজন আক্রমণাত্মক ওপেনার এবং দরকারে মিডিয়াম পেস বোলার হিসেবে দলের জন্য অবদান রেখেছেন। আইপিএল-এ মুম্বই ইন্ডিয়ান্স ছাড়াও তিনি চেন্নাই সুপার কিংস ও ডেকান চার্জার্সের হয়ে খেলেছেন। সচিনের সঙ্গে তাঁর সময় তাঁর ক্যারিয়ারের একটি উল্লেখযোগ্য অংশ।

সচিনের প্রভাব
স্মিথের বর্ণনা থেকে স্পষ্ট যে, সচিন শুধু একজন ক্রিকেটারই ছিলেন না, তিনি একজন পরামর্শদাতাও ছিলেন। তাঁর পরামর্শ, “আমি যা বলি তাই করো, আমি যা করি তা নয়,” স্মিথের মনে গভীর ছাপ ফেলেছে। এটি সচিনের হাস্যরস এবং সরলতার একটি দিক উন্মোচন করে। তিনি তরুণ ক্রিকেটারদের শুধু খেলার কৌশলই শেখাননি, তাদের মানসিকভাবে শক্তিশালী হতেও সাহায্য করেছেন।ডোয়াইন স্মিথের এই স্মৃতিচারণে সচিন তেন্ডুলকারের মহানত্বের একটি নতুন দিক উঠে এসেছে। তাঁর প্রস্তুতি, জ্ঞান ভাগ করে নেওয়ার মানসিকতা এবং সরলতা তাঁকে শুধু মাঠে নয়, মাঠের বাইরেও একজন কিংবদন্তি করে তুলেছে। স্মিথের জন্য সচিনের সঙ্গে মাঠে নামা এক স্বপ্নপূরণ ছিল, আর এই গল্প ক্রিকেটপ্রেমীদের কাছে সচিনের প্রভাবের একটি প্রমাণ। তাঁর মতো ক্রিকেটারের সঙ্গে খেলার অভিজ্ঞতা যে কোনো খেলোয়াড়ের জন্য স্মরণীয় থেকে যায়।