শুভাশিষ ঘোষ, জামশেদপুর থেকে: ২৩ জুলাই কলকাতার (Kolkata) যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গনে বলে কিক অফ করে ১৩৪ টম ডুরান্ড কাপের (Durand Cup 2025) শুভ সূচনা করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। প্রথম ম্যাচেই মুখোমুখি হয়েছিল বাংলার শতাব্দী প্রাচীন দল ইস্টবেঙ্গল (East Bengal) এবং কর্ণাটকের থেকে সাউথ ইউনাইটেড এফসি। টুর্নামেন্টের দ্বিতীয় দিনে নিজেদের অভিযান শুরু করবে জামশেদপুর এফসি (Jamshedpur FC)। প্রতিপক্ষ নেপালের ত্রিভুবন আর্মি (Tribhuwan Army)। এদিনের ম্যাচ অনুষ্ঠিত হবে জেআরডি টাটা কমপ্লেক্স স্টেডিয়ামে (JRD Tata Complex Stadium)। খেলা শুরু হওয়ার আগে থাকছে বিশেষ জমকালো অনুষ্ঠান, যা দর্শকদের মনে চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে।

এদিন অনুষ্ঠানের সূচনা হবে বিকেল ৪:৩০ মিনিটে। উপস্থিত থাকবেন ঝাড়খণ্ডের (Jharkhand) মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত সোরেন (Hemant Soren)। অনুষ্ঠানে থাকছে বর্ণময় সংস্কৃতি, অসামান্য সামরিক কুশলতা ও ঐতিহ্যের এক সংমিশ্রণ, যা দেশপ্রেমকে জাগিয়ে তুলবে এবং গর্বের অনুভূতিতে ভরিয়ে তুলবে উপস্থিত দর্শকদের।

জামশেদপুরে অনুষ্ঠানের সূচনা হবে পাইক নৃত্য দিয়ে, যা ঝাড়খণ্ড ও ওডিশার এক ঐতিহ্যবাহী যুদ্ধনৃত্য। স্থানীয় শিল্পীদের মনোমুগ্ধকর পরিবেশনায় এই নৃত্য প্রাচীন ইতিহাস ও বীরত্বকে জীবন্ত করে তুলবে মঞ্চে। এরপর মঞ্চে আসবে নেপালের ঐতিহ্যবাহী খুকরি নৃত্য। এক্ষেত্রে যা শৃঙ্খলা ও সাহসিকতার প্রতীক। এই নৃত্যের প্রতিটি ভঙ্গিমায় ফুটে উঠবে সাহসী যোদ্ধার আত্মা।
জমকালো মঞ্চের বাইরেও নজর কাড়বে আকাশের দিকে তাকানো হাজার হাজার চোখ। আর্মি অ্যাভিয়েশন উইং (AAW) দ্বারা পরিচালিত মাইক্রোলাইট এয়ার ডিসপ্লে হবে এক অভূতপূর্ব অভিজ্ঞতা। আকাশে ঘূর্ণায়মান ক্ষীণাকৃতি বিমানগুলো তাদের অনবদ্য স্টান্ট দিয়ে দর্শকদের মুগ্ধ করে তুলবে।

এরপর মঞ্চে আসবে ঝুমুর নৃত্য, যা দক্ষিণ ঝাড়খণ্ড ও বাংলার পুরুলিয়া অঞ্চলের এক আনন্দময় লোকনৃত্য। উৎসবের আবহে ছন্দে ছন্দে উঠে আসবে গ্রামবাংলার প্রাণ। নৃত্য পরিবেশন করবেন স্থানীয় বরণীয় লোকশিল্পীরা, যারা তাদের জীবনযাত্রার প্রতিফলন ঘটাবেন এই নৃত্যের মাধ্যমে। এরপর থাকবে ভারতের প্রাচীনতম মার্শাল আর্ট কালারিপয়াট্টু। কেরালার এই ঐতিহ্যবাহী যুদ্ধশিল্প হাজার বছরের পুরনো এক ইতিহাস বহন করে, যা প্রদর্শন করবে নিখুঁত দেহনিয়ন্ত্রণ ও শৃঙ্খলার এক আশ্চর্য মিলন।
এই অনন্য অনুষ্ঠান শুধু এক খেলার সূচনা নয়। বরং এক গর্ব, ঐতিহ্য ও সংস্কৃতির সম্মিলিত উদযাপন। যারা স্টেডিয়ামে উপস্থিত থাকবেন, তারা প্রত্যক্ষ করবেন এক বিশেষ মুহূর্তের যা শুধুই খেলা নয়, এক রূপকথার মতো অভিজ্ঞতা।