ইস্টবেঙ্গল (East Bengal) ক্লাবের ভবিষ্যত্ নিয়ে রয়েছে বহু প্রশ্ন। আপাতত দলবদলের বাহাজের পুরো দমে নেমেছেন ক্লাব কর্তারা। ইভান গঞ্জালেজকে নিশ্চিত করে চমক দিয়েছে দল। আরও এক নামকরা বিদেশির সঙ্গে কথা চলছে বলে জানা গিয়েছে। বেশ কিছু তরুণ ভারতীয় ফুটবলারকেও ক্লাব চূড়ান্ত করেছে। কিন্তু এই ফুটবলারদের হেডস্যার (East Bengal Coach) কে হবেন সেটা এখনও স্পষ্ট নয়।
বিগত কয়েক মরশুমে কোচ সমস্যায় পড়েছিল ইস্টবেঙ্গল। কোচের বায়োডাটা ভালো হলেও ফলাফলে তার প্রভাব পড়েনি। ফলত নামীদামি ফুটবলার সই করালেই যে ক্লাবের পারফরম্যান্স উন্নতি হবে এমনটা বলা যাচ্ছে না। যাঁরা দীর্ঘ দিন ফুটবলের সঙ্গে যুক্ত কিংবা ফুটবল সম্পর্কে ওয়াকিবহাল তাঁরা জানেন যে স্কোয়াড এবং কোচ, এই দুইয়ের মধ্যে তালমেল ঠিকঠাক না হলে কাঙ্ক্ষিত সাফল্য পাওয়া মুশকিল।
এখনও পর্যন্ত যা গতিবিধি তাতে কোচ নিয়োগ করার আগেই হয়তো একটা প্রাথমিক দল গঠন সম্পন্ন হয়ে যাবে। আগামী দিনেও দলবদলের বাজারে ইস্টবেঙ্গল ক্লাব কর্তাদের সক্রিয় থাকার সম্ভাবনা প্রবল। তাই চমক এখনও বাকি আছে।
ইন্ডিয়ান সুপার লিগে অভিষেকের বছরেও এরকমই একটা পরিস্হিতি তৈরি হয়েছিল। কোচ আসার আগে ফুটবলার নিশ্চিত করে ফেলেছিল ম্যানেজমেন্ট। পরে নিয়ে আসা হয়েছিল রবি ফাউলারকে। ফাউলার ইংলিশ ঘরানার ফুটবলে আস্থা রেখে কোচিং করিয়েছিলেন। এবং ব্যর্থ হয়েছিল। স্কোয়াডে যে ফুটবলাররা ছিলেন তাঁরা কোচের প্রশিক্ষণ মতো হয়তো খেলতে পারেননি। যার ফল এখন লেখা রয়েছে রেকর্ড খাতায়।
গত মরশুমে মানলো দিয়াজ প্রায় একই অভিযোগ তুলেছিলেন। স্কোয়াডে যাঁরা ছিলেন তাঁদের গুণগত মান, পারফরম্যান্স একেবারেই তাঁর পছন্দ ছিল না। গত মরশুমে বহু নাটকের পর ইন্ডিয়ান সুপার লিগে দল নামিয়েছিল এসসি ইস্টবেঙ্গল। ভারতীয় ফুটবলে নবাগত বিদেশি, লোনে নেওয়া ফুটবলার, অল্প পরীক্ষিত ফুটবলার নিয়ে দল গড়া হয়েছিল। এ ক্ষেত্রেও কোচের সঙ্গে ফুটবলারদের তালমেল ঠিক ছিল না। ফলে যা হওয়ার তাই হয়েছে।
ইস্টবেঙ্গলের ক্রাইসিস কোচ নামে পরিচিত হয়েছেন মারিও রিভেরা। দল যখন বিপদে পড়ে তখন তাঁর ডাক পড়ে। আগে থেকে তৈরি থাকা দল নিয়ে কাজ চালাতে হয়েছে তাঁকে।
ওপরে আলোচিত তিন কোচ যে ব্যর্থ এ কথা বলা হয়তো ঠিক না। কারণ তিনজনের কেউ-ই নিজেদের পছন্দ মতো দল হাতে পাননি। পরিসংখ্যান অনুযায়ী তাঁরা ব্যর্থ, কিন্তু সফল হওয়ার জন্য কোচের পাশাপাশি টিম বন্ডিং জরুরি। যেটা গত কয়েক মরশুমে লাল হলুদ শিবিরে খুব একটা ছিল না বলে ফুটবল অভিজ্ঞদের অনেকে মনে করেন।
ইস্টবেঙ্গলে কোচ নিয়োগের আগে দল গঠনের প্রবণতা এই প্রথম নয়। আগেও এমন হয়েছে। ইন্ডিয়ান সুপার লিগ খেলার আগে কলকাতা ফুটবল লিগ, আই লিগের একাধিক মরশুমে কোচের আগে ফুটবলার নিশ্চিত হওয়ার উদাহরণ কলকাতা ময়দানে নতুন নয়। ঘরোয়া লিগে সফলতা এলেও দল হোঁচট খেয়েছে জাতীয় স্তরে। আই লিগে চূড়ান্ত সফলতা না এলেও ইস্টবেঙ্গলের পারফরম্যান্স ভালো ছিল। একাধিকবার টুর্নামেন্ট সেরা হওয়ার মতো জায়গায় চলে গিয়েছিল দল। এবার পরিস্থিতি অনেকটাই আলাদা। ঘুরে দাঁড়ানো ছাড়া দ্বিতীয় কোনো উপায় আর নেই।