ফের বিপাকে লাল-হলুদ শিবির। কার্লোসের গমনে ‘অভিভাবকহীন’ ক্লাবে নতুন কোচকে আনলেও, দলের অন্যতম তারকা ফুটবলার আনোয়ার আলিকে ঘিরে সমস্যার জট যেন কাটছে না। প্রতিপক্ষ মোহনবাগানের পর ভারতীয় ফুটবলে একটি বড়ো ঘটনা হিসেবে এবার দিল্লি এফসি আনোয়ার আলি মামলার বিষয়ে (Delhi FC Anwar Ali Case) দিল্লি হাইকোর্টে একটি নতুন আবেদন দায়ের করেছে। ক্লাবের দাবি, অল ইন্ডিয়া ফুটবল ফেডারেশনের (এআইএফএফ) প্লেয়ার স্ট্যাটাস কমিটি (PSC) ফেডারেশনের পুরানো সংবিধান অনুযায়ী আইনি বাধ্যবাধকতা পূরণ করছে না। আবেদন অনুসারে, পুরানো নিয়মে PSC-তে কমপক্ষে দুইজন আইনি অভিজ্ঞ সদস্য থাকা বাধ্যতামূলক ছিল, যা বর্তমানে মেনে চলা হচ্ছে না।
দিল্লির করা এই মামলার কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছেন ভারতের উদীয়মান ফুটবল প্রতিভা আনোয়ার আলি। ২০১৯ সালে হৃদরোগের কারণে তাঁর ফুটবল কেরিয়ার বাধাগ্রস্ত হয়। শারীরিক সমস্যার মধ্যেও অন্বর খেলা চালিয়ে যাওয়ার জন্য লড়াই করেন এবং সফলভাবে মাঠে ফিরে আসেন, যেখানে দিল্লি এফসি তাঁকে সমর্থন করে। তবে খেলোয়াড়ের দলবদল এবং চুক্তিগত সমস্যা নিয়ে এই মুহূর্তে তাঁকে নিয়ে অনেক বিতর্ক উঠেছে, যা শেষপর্যন্ত তাঁকে আইনি লড়াইয়ের দিকে নিয়ে যায়।
UPDATE: Delhi FC has now filed a fresh case in the Delhi High Court regarding Anwar Ali Saga, claiming AIFF’s PSC doesn’t have 2 members with legal experience as per the AIFF’s old constitution. #IndianFootball #JoyEastBengal
– @KhelNow | @7negiashish pic.twitter.com/8zkeFEiWd6— Tᴏʀᴄʜ Bᴇᴀʀᴇʀs 🔴🟡 (@TORCH__BEARERS) October 16, 2024
শুরুটা যদিও হয়েছিল দলবদলের সময় আনোয়ারেরবা ইস্টবেঙ্গলে প্রবেশকে ঘিরে। নিয়ম না মেনে পাঞ্জাব তারকাকে সই করানোয় আর্থিক জরিমানার মুখে পড়তে হয়েছিল ইস্টবেঙ্গল ও আনোয়ারকে। লোন ডিল ভাঙার জন্য আদালতে মামলা দায়ের করে প্রায় ১৩ কোটি টাকা লাভের মুখে ছিল মোহনবাগান সুপার জায়েন্টস। তবে শেষমেশ কয়েক সপ্তাহ আগে প্লেয়ার স্ট্যাটাস কমিটির তরফে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত জানানো হলেও পরবর্তীতে সেটিকে চ্যালেন্জ জানিয়ে দিল্লি হাইকোর্টে দ্বারস্থ হয় ইস্টবেঙ্গল। তারপর আবার নতুন করে খতিয়ে দেখার নির্দেশ দেওয়া হয় পিএসসিকে। সেই অনুযায়ী গত কয়েকদিন আগেই ফের নো অবজেকশন সার্টিফিকেট পান আনোয়ার আলি।
এরপর এবার এই মর্মে মাঠে নামে দিল্লি এফসি। তাঁদের নতুন মামলার ভিত্তি হলো এআইএফএফ-এর পিএস সি তাদের পুরানো সংবিধানের আইনি প্রয়োজনীয়তা পূরণ করছে না। ক্লাবের অভিযোগ, পিএস সি -তে দুইজন আইনি অভিজ্ঞ সদস্যের অন্তর্ভুক্তি বাধ্যতামূলক ছিল, যা বর্তমানে নেই।
পিএস সি -এর সিদ্ধান্তের বৈধতা নিয়ে দিল্লি এফসি প্রশ্ন তুলেছে, বিশেষত অন্বর আলির মামলা সংক্রান্ত বিষয়ে। দিল্লি এফসি আদালতের হস্তক্ষেপ চাইছে, যাতে পিএস সি -এর গঠন সংবিধান অনুযায়ী হয় এবং এটি আনোয়ার আলির মতো মামলাগুলির পূর্ববর্তী সিদ্ধান্তকে প্রশ্নবানে বিদ্ধ করতে পারে।
এই আইনি চ্যালেঞ্জ এআইএফএফ-এর শাসন ব্যবস্থা এবং কার্যক্রম নিয়ে নতুন আলোচনার জন্ম দিয়েছে। আদালত যদি দিল্লি এফসি-এর পক্ষে রায় দেয়, তবে ফেডারেশনের বিভিন্ন কমিটির কার্যপ্রণালীতে বড়ো পরিবর্তন আসতে পারে, বিশেষ করে খেলোয়াড়দের বিষয়গুলি নিয়ে পরিচালনার ক্ষেত্রে। এটি ভবিষ্যতের দলবদল এবং খেলোয়াড়দের চুক্তির স্থিতিশীলতার ওপর প্রভাব ফেলতে পারে।
তবে দিল্লি হাইকোর্টের এই আবেদন পর্যালোচনা করার কথা রয়েছে, এবং বিশেষজ্ঞরা বলছেন যে, এই মামলাটি ভারতীয় ফুটবলের শাসন ব্যবস্থার জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ নজির হতে পারে। এখনও পর্যন্ত এআইএফএফ বা আনোয়ার আলি (Anwar Ali) এই নতুন আইনি পদক্ষেপ সম্পর্কে কোনো মন্তব্য করেনি। তবে আদালতের রায়ের প্রভাব অনেক দূরদর্শী হতে পারে এবং এআইএফএফ-এর প্রশাসনিক কাঠামো এবং খেলোয়াড়দের বিষয়গুলি পরিচালনার উপায় পুনর্গঠন করতে পারে।
Anwar Ali: আনোয়ার গোটা দেশের, অভিনবভাবে তাঁর যোগদান ইস্টবেঙ্গলে
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য যে, আনোয়ার আলি মামলায় দিল্লি এফসি-এর দিল্লি হাইকোর্টের (Delhi FC Anwar Ali Case) দ্বারস্থ হওয়া এআইএফএফ-এর পুরানো সংবিধান অনুযায়ী PSC-এর গঠন নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তুলেছে। এই আইনি কার্যক্রম শুধুমাত্র অন্বর আলির ভবিষ্যত নির্ধারণ করবে না, বরং ভবিষ্যতে এআইএফএফ কীভাবে খেলোয়াড়দের বিষয়গুলি পরিচালনা করবে তা পরিবর্তন করতে পারে।