স্বর্ণপদক তো দূরের কথা, বিশ্ব অ্যাথলেটিক চ্যাম্পিয়নশিপের মঞ্চ থেকে কোনও রকমের পদক ছাড়াই ফিরতে হচ্ছে ভারতের ‘গোল্ডেন বয়’ নীরজ চোপড়াকে (Neeraj Chopra)। টোকিও অলিম্পিকে যাঁর হাত ধরেই ইতিহাস গড়েছিল ভারত, সেই নীরজ এবার খালি হাতে ফিরলেন ঠিক সেই টোকিওর ট্র্যাক থেকেই। বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপে (World Athletics Championships 2025) এই প্রথমবার কোনও পদক না পেয়ে হতাশ করলেন ভারতের অন্যতম ভরসার নাম।
বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপের যোগ্যতা পর্বে একটি মাত্র থ্রো (Javelin Throw) করেই সরাসরি ফাইনালের টিকিট নিশ্চিত করেছিলেন নীরজ। ৮৪.৮৫ মিটার দূরত্বে ছোঁড়া সেই জ্যাভলিনই তাঁকে পৌঁছে দিয়েছিল ফাইনালের মঞ্চে। নিজের অভিজ্ঞতা ও আত্মবিশ্বাসের জোরেই দ্বিতীয় ও তৃতীয় থ্রো আর করেননি তিনি। কিন্তু ঠিক ফাইনালের দিনেই যেন খেই হারিয়ে ফেললেন দেশের এই সেরা জ্যাভলিন থ্রোয়ার।
বৃহস্পতিবার ফাইনালে প্রথম থ্রোতেই মাত্র ৮৩.৬৫ মিটার দূরত্বে থেমে যান নীরজ। দ্বিতীয়বারে খানিকটা উন্নতি হলেও থ্রো পৌঁছয় ৮৪.০৩ মিটারে দিনের তাঁর সেরা পারফরম্যান্স। তৃতীয় থ্রো ফাউল, চতুর্থ থ্রো মাত্র ৮২.৮৬ মিটার, আর পঞ্চমবার পা পিছলে লাইনের বাইরে যাওয়ার কারণে সেই থ্রো বাতিল। ষষ্ঠ ও শেষ চেষ্টার আগেই কার্যত স্পষ্ট হয়ে যায়, এবার কোনও পদক আসছে না নীরজের ঝুলিতে। ফলাফল: অষ্টম স্থান এবং গত সাত বছরের মধ্যে প্রথমবার কোনও বিশ্বচ্যাম্পিয়নশিপ থেকে খালি হাতে ফেরা।
তবে নীরজের এই হতাশার দিনেও আশার আলো দেখালেন আরেক ভারতীয়, ২৫ বছর বয়সি সচিন যাদব (Sachin Yadav)। নিজের প্রথম ফাইনালেই বাজিমাত করলেন তরুণ এই প্রতিভা। প্রথম থ্রোতেই ছুঁড়ে দিলেন ৮৬.২৭ মিটার, ব্যক্তিগত কেরিয়ারের সেরা থ্রো। এরপর ধারাবাহিকভাবে ৮৫ মিটার কাছাকাছি থ্রো করতে থাকেন তিনি। শেষপর্যন্ত চতুর্থ স্থানেই থেমে যেতে হয় তাঁকে, কিন্তু তাঁর পারফরম্যান্সে স্পষ্ট ভারতীয় জ্যাভলিন থ্রোর ভবিষ্যৎ যে মজবুত হাতেই রয়েছে।
🇮🇳Neeraj chopra finished at 8th position and sachin yadav finished at 4th position at world athletics championship.#INDIA #neerajchopa #4th pic.twitter.com/BxM1NToWv0
— freedom fighter (@gorasingh053) September 18, 2025
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বড় মঞ্চে অভিজ্ঞতার দিক থেকে অনেকটাই এগিয়ে থাকলেও এদিন নিজের ছন্দে ছিলেন না নীরজ। তবে তাঁর প্রতি আস্থা হারাচ্ছে না কেউই। আগামী অলিম্পিক এবং এশিয়ান গেমসেই ফের তাঁর কামব্যাক দেখার অপেক্ষায় ভারতীয় ক্রীড়াপ্রেমীরা।
অন্যদিকে, সচিনের এই পারফরম্যান্স অনেকটাই উচ্ছ্বাস এনে দিয়েছে ভারতীয় শিবিরে। যাঁরা এতদিন নীরজের একক আধিপত্য দেখেছেন, তাঁদের কাছে শচীন যেন এক নতুন আশার প্রতীক। সময় বলবে, ভবিষ্যতের মঞ্চে সচিন কতদূর যেতে পারেন, তবে টোকিওর ট্র্যাক এই দিনটিকে স্মরণে রাখবেই—যেখানে এক তারকার ম্লান আলোয় জন্ম নিল আরেক সম্ভাবনার।