২০২৬ সালের মহিলা প্রিমিয়ার লিগ (WPL)-এর আগে ফ্র্যাঞ্চাইজিগুলি নিজেদের দল সাজাতে ব্যস্ত। ইতিমধ্যেই প্রকাশ্যে এসেছে সম্ভাব্য ধরে রাখা (retention) খেলোয়াড়দের তালিকা, যেখানে ভারতের চার তারকা ক্রিকেটার হরমনপ্রীত কৌর, স্মৃতি মান্ধানা, জেমিমা রদ্রিগেজ এবং রিচা ঘোষ রয়েছেন শীর্ষে। এই চারজনই তাঁদের নিজ নিজ ফ্র্যাঞ্চাইজির অপরিহার্য অংশ হিসেবে থেকে যাওয়ার সম্ভাবনা প্রবল।
ESPNCricinfo-র রিপোর্ট অনুযায়ী, অস্ট্রেলিয়ার অধিনায়ক মেগ ল্যানিং (দিল্লি ক্যাপিটালস), উইকেটকিপার ব্যাটার অ্যালিসা হিলি (ইউপি ওয়ারিয়র্স) এবং নিউজিল্যান্ডের অলরাউন্ডার অ্যামেলিয়া কের (মুম্বাই ইন্ডিয়ান্স) তাঁদের ফ্র্যাঞ্চাইজিগুলি দ্বারা মুক্তি পাওয়ার পর নিলাম পুলে যোগ দিতে পারেন। এর পাশাপাশি, বিশ্বকাপজয়ী অলরাউন্ডার দীপ্তি শর্মাকেও UP ওয়ারিয়র্স থেকে ছেড়ে দেওয়া হতে পারে বলে জানা গেছে, যদিও তিনিই এই বছর হিলির অনুপস্থিতিতে দলের নেতৃত্বে ছিলেন।
দুটি ফ্র্যাঞ্চাইজি—বর্তমান চ্যাম্পিয়ন মুম্বাই ইন্ডিয়ান্স (MI) এবং দিল্লি ক্যাপিটালস (DC)— সর্বাধিক পাঁচজন খেলোয়াড় ধরে রেখেছে, যা WPL-এর নির্ধারিত সর্বোচ্চ সীমা। রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু (RCB) চারজন, গুজরাট জায়ান্টস (GG) দুইজন এবং ইউপি ওয়ারিয়র্স (UPW) মাত্র একজন খেলোয়াড় ধরে রেখেছে।
ESPNCricinfo-র প্রকাশিত সম্ভাব্য রিটেইন তালিকা অনুযায়ী দলগুলির কাঠামো এইরকম হতে পারে—
দিল্লি ক্যাপিটালস: অ্যানাবেল সাদারল্যান্ড, মারিজান ক্যাপ, জেমিমা রদ্রিগেজ, শেফালি ভার্মা, নিকি প্রসাদ
মুম্বাই ইন্ডিয়ান্স: হরমনপ্রীত কৌর, ন্যাট সাইভার-ব্রান্ট, অমানজোত কৌর, জি কমালিনী, হেইলি ম্যাথিউস
রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু: স্মৃতি মান্ধানা, এলিস পেরি, রিচা ঘোষ, শ্রেয়ঙ্কা পাতিল
গুজরাট জায়ান্টস: অ্যাশলে গার্ডনার, বেথ মুনি
ইউপি ওয়ারিয়র্স: শ্বেতা শেহরাওয়াত
WPL রিটেনশন নিয়ম অনুযায়ী, প্রতিটি দল সর্বাধিক তিনজন ক্যাপড ভারতীয়, দুইজন বিদেশি এবং দুইজন আনক্যাপড খেলোয়াড় ধরে রাখতে পারে। যদি কোনও ফ্র্যাঞ্চাইজি পাঁচজন খেলোয়াড় ধরে রাখে, তবে তাদের মধ্যে অন্তত একজন আনক্যাপড ভারতীয় খেলোয়াড় থাকা বাধ্যতামূলক।
২০২৬ সালের জন্য WPL প্রথমবারের মতো “রাইট টু ম্যাচ” (RTM) সুবিধা চালু করেছে, যার মাধ্যমে দলগুলি তাদের আগের মরশুমের প্রাক্তন খেলোয়াড়দের নিলামে ফিরিয়ে আনতে পারবে। প্রতিটি ফ্র্যাঞ্চাইজিকে ১৫ কোটি টাকার বাজেট দেওয়া হয়েছে, এবং নিলামটি অনুষ্ঠিত হবে ২৭ নভেম্বর, নয়াদিল্লিতে।
WPL রিটেনশন স্ল্যাবের দামও নির্ধারণ করা হয়েছে—
- প্লেয়ার ১: ₹৩.৫ কোটি
- প্লেয়ার ২: ₹২.৫ কোটি
- প্লেয়ার ৩: ₹১.৭৫ কোটি
- প্লেয়ার ৪: ₹১ কোটি
- প্লেয়ার ৫: ₹৫০ লক্ষ
এই হিসেবে, যদি কোনও ফ্র্যাঞ্চাইজি পাঁচজন খেলোয়াড় ধরে রাখে, তাহলে তাদের নিলাম তহবিল থেকে মোট ₹৯.২৫ কোটি কেটে নেওয়া হবে। চারজনের ক্ষেত্রে ₹৮.৭৫ কোটি, তিনজনের জন্য ₹৭.৭৫ কোটি, দুইজনের জন্য ₹৬ কোটি এবং একজনের জন্য ₹৩.৫ কোটি।
এতে বোঝা যাচ্ছে, দিল্লি ক্যাপিটালস এবং মুম্বাই ইন্ডিয়ান্সের হাতে দল গঠনের জন্য থাকবে প্রায় ₹৫.৭৫ কোটি টাকা। তারা ১৬ থেকে ১৮ জন খেলোয়াড়ের স্কোয়াড গঠন করতে পারবে, তবে আরটিএম ব্যবহারের সুযোগ পাবে না।
অন্যদিকে, ইউপি ওয়ারিয়র্সের হাতে থাকবে সর্বাধিক ₹১৪.৫ কোটি এবং চারটি আরটিএম। গুজরাট জায়ান্টসের থাকবে ₹৯ কোটি এবং তিনটি আরটিএম (শুধুমাত্র ভারতীয় খেলোয়াড়দের জন্য)। রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরুর হাতে থাকবে ₹৬.২৫ কোটি এবং একটি আরটিএম সুবিধা।
বিশেষজ্ঞদের মতে, এবারের নিলামে ভারতীয় তরুণ ক্রিকেটারদের ওপরই নজর থাকবে ফ্র্যাঞ্চাইজিগুলির। পাশাপাশি, মেগ ল্যানিং, অ্যালিসা হিলি, অ্যামেলিয়া কেরের মতো অভিজ্ঞ বিদেশি তারকাদের নিলাম পুলে ফেরায় প্রতিযোগিতা আরও তীব্র হতে চলেছে।


