আইপিএল ২০২৫ আসন্ন। প্রতিটি ফ্র্যাঞ্চাইজি এখন রিটেনশন, রিলিজ, ট্রেড এবং মিনির নিলামের প্রস্তুতিতে ব্যস্ত। ঠিক সেই সময়েই লখনউ সুপার জায়ান্টস (LSG) ঘোষণা করল একটি গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত—দলে যুক্ত হলেন অস্ট্রেলিয়ার অভিজ্ঞ ক্রিকেট প্রশাসক ও কোচ টম মুডি। দলীয় মালিক ড. সঞ্জীব গোয়েঙ্কা নিজেই জানিয়েছেন যে রিটেনশন বৈঠক ও কৌশলগত প্রস্তুতি ইতিমধ্যেই শুরু হয়ে গেছে।
মুডির যোগদানকে কেন্দ্র করে ইতিমধ্যেই নতুন উন্মাদনা ছড়িয়েছে সমর্থকদের মধ্যে। কারণ, টম মুডি আইপিএলে বহুবার সাফল্যের কারিগর হিসেবে পরিচিত—বিশেষ করে সানরাইজার্স হায়দরাবাদের সঙ্গে তাঁর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা এখনও ভারতীয় ক্রিকেটমহলে স্মরণীয়।
⭐ কেন টম মুডির যোগদান এত গুরুত্বপূর্ণ?
টম মুডির রয়েছে–
দশকের পর দশক আন্তর্জাতিক অভিজ্ঞতা
ফ্র্যাঞ্চাইজি ক্রিকেটে সফল কৌশল প্রয়োগের রেকর্ড
যুব ক্রিকেটারদের গড়ে তোলার দক্ষতা
বহু লিগে দল গঠন ও ব্যাকরুম বিশ্লেষণের অভিজ্ঞতা
এই কারণেই LSG–র প্রস্তুতিপর্বে তাঁর উপস্থিতি দলের ম্যাচপ্ল্যানিং, ব্যালান্স, রিটেনশন এবং নিলাম কৌশলকে আরও শাণিত করবে।
ড. সঞ্জীব গোয়েঙ্কা এক্স (টুইটার)-এ লিখেছেন—
“টম মুডির কৌশলগত অভিজ্ঞতা আমাদের দলের জন্য বিশাল সম্পদ। আসন্ন মৌসুমের প্রস্তুতিতে তাঁর দিশা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হবে।”
🔥 রিটেনশন আলোচনায় ছিলেন পন্থ, ল্যাঙ্গার ও ভরত অরুণ
এই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন ভারতীয় তারকা উইকেটকিপার–ব্যাটার ঋষভ পন্থ, LSG–র প্রধান কোচ জাস্টিন ল্যাঙ্গার, এবং অভিজ্ঞ বোলিং কোচ ভরত অরুণ।
বৈঠকে আলোচনা হয়েছে—
✔ কোন ক্রিকেটারদের রিটেন করা হবে
✔ বিদেশি স্লট কাদের জন্য রাখা হবে
✔ কোন এলাকায় ব্যাকআপ দরকার
✔ ফাস্ট বোলিং ইউনিট এবং ফিনিশার বিভাগে সুযোগ
পন্থের উপস্থিতি খুব অর্থবহ, কারণ তিনি দেশের অন্যতম বড় ক্রিকেট ব্র্যান্ড, এবং তাঁর মতামত T20 ফরম্যাটে ফিনিশিং ও স্ট্র্যাটেজি বুঝতে দারুণ কার্যকর।
জাস্টিন ল্যাঙ্গার যেহেতু কঠোর শৃঙ্খলা ও ধারাবাহিকতা পছন্দ করেন, তাই দলীয় রিটেনশন তালিকা হবে চিন্তাভাবনা করেই।
ভরত অরুণের নজর বিশেষত—
ফাস্ট বোলারদের ফিটনেস
পাওয়ারপ্লে বোলিং
ডেথ-ওভার পরিকল্পনা
যা T20 ক্রিকেটে সাফল্যের অন্যতম মূল স্তম্ভ।
⚙️ রিটেনশন তালিকা কী হতে পারে? (প্রাথমিক ধারণা)
যদিও ফ্র্যাঞ্চাইজি এখনও কোনো নাম ঘোষণা করেনি, তবে অভ্যন্তরীণ সূত্র বলছে—LSG যে ক’জনকে ধরে রাখতে চায় তারা হল:
কেএল রাহুল (ক্যাপ্টেন)
নিকোলাস পুরান (মিডল অর্ডার ফিনিশার)
রবি বিষ্ণোই (ইমপ্যাক্ট লেগ-স্পিনার)
কৃষ্ণাপ্পা গণেশ্বর বা মায়ার্স (অলরাউন্ডার)
মার্ক উড বা নবীন–উল–হক (ফাস্ট বোলিং কোর)
চমক থাকতে পারে ইয়াংস্টার বিভাগে—বিশেষত দেবদত্ত পাডিক্কাল, অয়ুশ বাদোনি বা যুব ফাস্ট বোলারদের মধ্যে।
🏏 গত দুই মৌসুমে লখনউর পারফরম্যান্স
লখনউ সুপার জায়ান্টস তাদের প্রথম দুটি মৌসুমেই প্লে-অফ খেলেছে। তবে এলিমিনেটরের পর আর এগোতে পারেনি।
দলের প্রধান সমস্যা ছিল—
ডেথ বোলিংয়ে ধারাবাহিকতা
টপ অর্ডারে স্লো স্টার্ট
মিডল-অর্ডারে ফিনিশিং সমস্যা
টম মুডির অভিজ্ঞতা এবং ভরত অরুণের টেকনিক্যাল দক্ষতা এই সমস্যাগুলো কাটাতে সাহায্য করতে পারে বলে মনে করছে ক্রিকেটমহল।
🎯 ২০২৫ আইপিএলে LSG–র তিনটি বড় লক্ষ্য
শক্তিশালী ভারতীয় কোর তৈরি
যেহেতু আইপিএলে ভারতীয় ক্রিকেটারদের ভূমিকা অনেক গুরুত্বপূর্ণ, তাই ক্লাব অভ্যন্তরীণ ব্যাটার–বোলারদের ধরে রাখতে আগ্রহী LSG।
মিডল অর্ডার শক্ত করা
২০২৪ সালে মিডল অর্ডার বেশ কয়েকবার ভেঙে পড়েছিল। এই দুর্বলতা দূর করতে মুডি ও ল্যাঙ্গার ব্যাটারদের মূল্যায়ন করছেন।
বোলিং ইউনিটকে আরও তীক্ষ্ণ করা
ডেথ ওভার বোলিং – LSG–র ‘অ্যাকিলিস হিল’। এই জায়গায় বড় পরিবর্তন আনা হতে পারে।
🎙️ সমর্থকদের উচ্ছ্বাস
LSG সমর্থকরা বলছেন,
“টম মুডি মানেই স্মার্ট দলগঠন। রাহুল–ল্যাঙ্গার–মুডি কম্বো আইপিএলে বড় কিছু করে দেখাতে পারে।”
আরেকজন সমর্থক লিখেছেন,
“পুরান ও রাহুলের সঙ্গে টম মুডির কৌশল মানে টপ–৪ নিশ্চিত।”
টম মুডির যোগদান এবং রিটেনশন বৈঠকে পন্থ, ল্যাঙ্গার ও ভরত অরুণের উপস্থিতি স্পষ্টভাবে ইঙ্গিত দিচ্ছে—লখনউ সুপার জায়ান্টস আগামী মৌসুমে বড় পরিকল্পনা নিয়ে মাঠে নামছে।
নতুন কৌশল, উন্নত দলগঠন এবং আরও আক্রমণাত্মক টি২০ ভাবনার ওপর জোর দিচ্ছে ফ্র্যাঞ্চাইজি।
ফলাফল কী হবে তা পরবর্তী আইপিএলেই জানা যাবে, তবে একটি জিনিস নিশ্চিত—লখনউ এ বছর আগের চেয়ে আরও শক্তিশালী ভাবে মাঠে নামছে।


