ইডেন গার্ডেন্সে উত্তেজনায় ঠাসা বাংলা বনাম উত্তরাখণ্ড ম্যাচে (Ranji Trophy 2025) দ্বিতীয় দিনের খেলা শেষে স্বস্তিতে বাংলা শিবির। প্রথম ইনিংসে ৬ উইকেটে ২৭৪ রান করে ৬১ রানে এগিয়ে তারা। এই ইনিংসের নায়ক দু’জন। একজন অভিজ্ঞ সুদীপ চট্টোপাধ্যায়, দুর্ভাগ্যবশত সেঞ্চুরি থেকে মাত্র দু’রান দূরে থেমে যান। অপরজন তরুণ সুমন্ত গুপ্ত, ধৈর্য আর দায়িত্বে ভর করে এখনও অপরাজিত ৮২ রানে।
প্রথম দিনের শেষে উত্তরাখণ্ড ২১৩ রানে অলআউট হওয়ার পর বাংলা ইনিংস শুরুতেই ধাক্কা খায়। অভিমন্যু ঈশ্বরণ শূন্য রানে ফিরে যান। এরপর দায়িত্ব কাঁধে তুলে নেন সুদীপ চট্টোপাধ্যায়। একপ্রান্ত আগলে রেখে, তিনি টেস্ট মেজাজে দলকে টেনে তোলেন। ২৬৪ বলে ৯৮ রান, ১২ বাউন্ডারি বিপর্যয়ের মুখে বাংলা দলের ভিত গড়ে তোলার এক দুর্দান্ত নিদর্শন।
কিন্তু সুদীপের ইনিংসের সবচেয়ে বড় দুঃখ, সেঞ্চুরি ছোঁয়ার ঠিক আগে আত্মঘাতী শট খেলে আউট হয়ে যাওয়া। এদিনও ম্যাচ দেখতে ইডেনে উপস্থিত সিএবি সভাপতি সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ও বিস্মিত হন তার আউটে। ছক্কা মারতে গিয়ে আউট হওয়াটা যে একেবারেই প্রয়োজন ছিল না, তা বুঝিয়ে দেন তিনি। তবু সুদীপের লড়াইয়ের প্রশংসায় পঞ্চমুখ সৌরভ।
সুদীপ আউট হলেও ম্যাচে বাংলা ছিল কারণ সুমন্ত গুপ্ত ক্রিজে ছিলেন। অভিজ্ঞ অনুষ্টুপ মজুমদার (৩৫), সুদীপ ঘরামি (১৫), অভিষেক পোড়েল (২১) প্রয়োজনীয় সময় দাঁড়িয়ে যেতে পারেননি। তবে সুমন্ত সাহস, ধৈর্য ও ক্লাস মিলিয়ে এক অনবদ্য ইনিংস খেলছেন। দিনের শেষে তিনি ৮২ রানে অপরাজিত, তাঁর ব্যাটে এখনও বাংলার সেঞ্চুরির আশা বেঁচে।
উত্তরাখণ্ডের হয়ে একমাত্র নজরকাড়া পারফরমার দেবেন্দ্র বোড়া। বাংলা ইনিংসের ছয়টি উইকেটের মধ্যে চারটিই তার দখলে। বিশেষ করে অনুষ্টুপ মজুমদারের এলবিডব্লিউ সিদ্ধান্ত নিয়ে কিছুটা বিতর্ক থাকলেও, বোড়ার ধারাবাহিক চাপ বাংলা ব্যাটারদের বারবার চিন্তায় ফেলেছে।
দিনের শেষে বাংলার কোচ লক্ষ্মীরতন শুক্লা আশাবাদী। তাঁর বক্তব্য, “আরও দেড়শো রান তুলতে পারলে ম্যাচ ঘুরিয়ে দেওয়া সম্ভব। উইকেটে বোলারদের যথেষ্ট পরিশ্রম করতে হবে, কিন্তু আমরা অলআউট ঝাঁপাব। সুদীপ অসাধারণ খেলেছে, সুমন্ত এখনও সেট। ছেলেরা যেভাবে খেলছে, আমি খুশি।”
এই মুহূর্তে তিন পয়েন্ট বাংলার একপ্রকার পকেটে। তবে ম্যাচ জিততে হলে বোলারদের দিতে হবে সেরাটা। ইডেনের উইকেটে শেষ দুই দিনে স্পিনার ও পেসারদের যৌথ প্রচেষ্টা ছাড়া জয় আসা কঠিন।