এশিয়া কাপে ভারতের বিরুদ্ধে পরপর তিন ম্যাচে পরাজয়ের মুখ দেখার পর বড়সড় পরিবর্তনের পথে হাঁটছে পাকিস্তান ক্রিকেট দল (Pakistan)। ব্যর্থ নেতৃত্ব, বিতর্কিত আচরণ এবং মাঠ ও মাঠের বাইরের নাটকীয়তার কারণে সমালোচনার মুখে পড়েছেন পাকিস্তানের অধিনায়ক সলমন আলি আঘা। এই পরিস্থিতিতে আসন্ন শ্রীলঙ্কা সিরিজ থেকে পাকিস্তান টি-টোয়েন্টি দলের দায়িত্ব নিতে চলেছেন অভিজ্ঞ অলরাউন্ডার শাদাব খান।
ভারতের বিরুদ্ধে এশিয়া কাপে বারবার হেরে মনোবল হারিয়েছিল পাকিস্তান। তিনটি ম্যাচেই ভারতের কাছে পর্যুদস্ত হয় সলমনের দল। শুধু হারের লজ্জা নয়, পুরস্কার বিতরণীর সময়ও চূড়ান্ত বিতর্ক তৈরি করেন সলমন আলি। পুরস্কার মঞ্চে পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড (PCB) এবং এশিয়ান ক্রিকেট কাউন্সিল (ACC) চেয়ারম্যান মহসিন নকভি যখন রানার্স আপের জন্য সলমনের হাতে ৭৫ হাজার মার্কিন ডলারের চেক তুলে দেন, তখন সেই চেক রীতিমতো ছুঁড়ে ফেলে দেন পাক অধিনায়ক। মঞ্চে উপস্থিত কর্মকর্তাদের সামনেই ঘটে এই অপ্রীতিকর ঘটনা।
এতেই শেষ নয়। ভারতীয় দলও বিতর্ক এড়িয়ে যায়নি। ফাইনালে জয়ের পর ভারতীয় ক্রিকেটাররা নকভির হাত থেকে ট্রফি নিতে অস্বীকৃতি জানান। ভারতীয় ক্রিকেট কন্ট্রোল বোর্ডের (BCCI) সচিব দেবজিৎ সইকিয়া জানান, “নকভি পাকিস্তানের একজন সিনিয়র মন্ত্রী হওয়ায় আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম, তাঁর হাত থেকে ট্রফি গ্রহণ করব না।” পরে জানা যায়, মহসিন নকভি ট্রফি নিয়েই হোটেলের ঘরে ফিরে যান।
ক্রিকেট কূটনীতি নয়, মানবিকতা! ভাইরাল ভিডিয়োতে ভক্তদের মন জিতলেন বিরাট
এশিয়া কাপে পাকিস্তানের ব্যর্থতা এবং নেতার এমন আচরণের জেরে এবার নেতৃত্বে আসছে বড় পরিবর্তন। পিসিবির ঘনিষ্ঠ সূত্র অনুযায়ী, নভেম্বর মাসে শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে দ্বিপাক্ষিক টি-টোয়েন্টি সিরিজে পাকিস্তানের অধিনায়ক হিসেবে মাঠে নামবেন শাদাব খান।
ইতিমধ্যেই চোট কাটিয়ে মাঠে ফেরার প্রস্তুতি নিচ্ছেন এই অভিজ্ঞ অলরাউন্ডার। কাঁধের চোটের কারণে একাধিক সিরিজ মিস করেছিলেন তিনি। সর্বশেষ জুন মাসে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে মাঠে নেমেছিলেন। তবে এবার কোয়াদ-এ-আজম ট্রফিতে খেলার মধ্য দিয়ে নিজের ফর্ম ও ফিটনেস প্রমাণ করার পরিকল্পনায় রয়েছেন শাদাব।
৭০টি ওয়ানডে এবং ১১২টি আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেলা শাদাব পাকিস্তানের অন্যতম অভিজ্ঞ খেলোয়াড়। তাঁর প্রত্যাবর্তন শুধুমাত্র অভিজ্ঞতা নয়, নেতৃত্বেও এক নতুন দিগন্তের সূচনা করবে বলে মনে করছে ক্রিকেট মহল। অন্যদিকে সলমন আলি আঘার ভবিষ্যৎ নিয়ে তৈরি হয়েছে ধোঁয়াশা। বিতর্কিত আচরণ এবং মাঠে হতাশাজনক পারফরম্যান্সের কারণে তাঁকে হয়তো টি-টোয়েন্টি ফরম্যাট থেকে সম্পূর্ণ সরিয়ে দেওয়াও হতে পারে।
ভারত-পাক ম্যাচ মানেই আলাদা উত্তেজনা, কিন্তু এবারের এশিয়া কাপে তার চেয়েও বেশি নজরে ছিল মাঠের বাইরের নাটক। এশিয়া কাপের এই বিতর্ক এবং নেতৃত্ব বদলের ঘটনাগুলি পাকিস্তান ক্রিকেটের জন্য এক বড় শিক্ষা। নতুন করে গঠন ও পরিকল্পনার মধ্য দিয়ে ২০২৬ সালের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের জন্য প্রস্তুত হচ্ছে পাকিস্তান। শাদাব খানের নেতৃত্ব সেই পথে প্রথম পদক্ষেপ বলেই মনে করছে বিশ্লেষকরা।