বাংলাদেশি ক্রিকেটারদের জন্য আইপিএল (IPL 2026) যেন গত কয়েক বছর ধরে এক অদৃশ্য দেওয়াল তুলে রেখেছে। নিলামের তালিকায় নাম থাকলেও দল পায় না, এ দৃশ্য নতুন নয় সাকিব আল হাসান, মুস্তাফিজ়ুর রহমানদের জন্য। সুযোগ এলে আবার পুরো মরশুম খেলার অনুমতি মেলে কি না, তা নিয়েও অনিশ্চয়তা। এর মাঝেই মিনি নিলামের আগে নিজের দর বাড়াতে যেন নতুন বার্তা দিলেন মুস্তাফিজ়ুর রহমান।
অবসর ভেঙে ২২ গজে প্রত্যাবর্তনের ঘোষণা ওপার বাংলার ক্রিকেটারের
১৬ ডিসেম্বর বসতে চলেছে আইপিএল মিনি নিলাম। সেখানে বাংলাদেশের দুই তারকা শাকিব আল হাসান (বেস প্রাইস ১ কোটি) ও মুস্তাফিজ়ুর রহমান (বেস প্রাইস ২ কোটি) নাম লিখিয়েছেন। গত মরশুমে এ দু’জনই নিলাম টেবিলে থাকলেও কোনও দলে জায়গা পাননি। শাকিবের নাম দ্বিতীয় রাউন্ডেও ডাকেনি কেউ। পরে বদলি প্লেয়ার হিসেবে সুযোগ পান শুধু মুস্তাফিজ়ুর, দিল্লি ক্যাপিটালসের সঙ্গে।
এ বার তবে গল্পটা একটু অন্যরকম। নিলামের ঠিক আগে সৌদি আরবে আয়োজিত ILT20-তে মুস্তাফিজ়ুর দেখাচ্ছেন তাঁর পুরনো রূপের ঝলক। দিল্লি ক্যাপিটালসের হয়ে দুই ম্যাচে চার উইকেট, আর আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে তাঁর ডট-বোলিং।
গালফ জায়ান্টসের বিরুদ্ধে প্রথম ম্যাচেই মুস্তাফিজ়ুর যেন জানিয়ে দেন, তিনি আছেন এবং দারুণ ছন্দে আছেন। চার ওভার বোল করে মাত্র ২৬ রান দিয়ে দুই উইকেট। সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য—১৩টি ডট বল। পরের ম্যাচে আবু ধাবি নাইট রাইডার্সের বিরুদ্ধে আরও ধারালো কাটার-কারুকাজ। তিন ওভারে ২২ রান দিয়ে দুই উইকেট, সঙ্গে ১১টি ডট।
অর্থাৎ, দুই ম্যাচে মোট ৪২ বলের মধ্যে ২৪টিতেই ব্যাটসম্যান রানই করতে পারেননি। টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে যে কোনও বোলারের জন্য অসাধারণ পরিসংখ্যান।
ডট বলের পাশাপাশি মুস্তাফিজ়ুরের আরেক বড় শক্তি, তিনি পাওয়ারপ্লে ও ডেথ, দুই পর্যায়েই কার্যকর। কাটার, লোফ্টেড স্লোয়ার, উইকেটমুখী লাইন, সবই ফিরে এসেছে পরিচিত ছন্দে। ফলে বহু ফ্র্যাঞ্চাইজি চোখ রাখবে তাঁর দিকে, এমনটাই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
কিন্তু প্রশ্ন রয়ে যায়, আইপিএলে পুরো মরশুম খেলতে পারবেন তো? অতীতে প্রায় প্রতিটি আইপিএল সিজনে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড আন্তর্জাতিক সিরিজ ঠাসা করে রেখেছে। আবার NOC-ও দেওয়া হয় সীমিত সময়ের জন্য। এর ফলে ফ্র্যাঞ্চাইজিরা বাংলাদেশি খেলোয়াড় কিনতে সাহস পায় না। এই বছরও যদি একই পরিস্থিতি তৈরি হয়, তবে ক্ষতিগ্রস্ত হবেন মুস্তাফিজ়ুর-শাকিবরা।

