ভারতীয় পেসারের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নিয়ে রাজ্য সরকারকে নোটিস দিল শীর্ষ আদালত

mohammed-shami-hasin-jahan-supreme-court-maintenance-case

নয়াদিল্লি: ভারতীয় ক্রিকেটার মহম্মদ শামির ব্যক্তিগত জীবনের আইনি অধ্যায় আবারও আলোচনায়। এবার সুপ্রিম কোর্ট তাঁর প্রাক্তন স্ত্রী হাসিন জাহানের দায়ের করা ভরণপোষণ বৃদ্ধির মামলায় শামি এবং পশ্চিমবঙ্গ সরকারকে নোটিস পাঠিয়ে জবাব চেয়েছে।শুক্রবার মামলার শুনানিতে আদালতের বেঞ্চ মৌখিকভাবে পর্যবেক্ষণ করে জানায়, কলকাতা হাইকোর্ট যে অন্তর্বর্তীকালীন ভরণপোষণ নির্ধারণ করেছিল, তা “খুবই উপযুক্ত ও যথেষ্ট”।

Advertisements

উল্লেখ্য, কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশ অনুযায়ী, শামিকে তাঁর স্ত্রী হাসিন জাহান এবং কন্যা সন্তানের জন্য প্রতি মাসে মোট ৪ লক্ষ টাকা ভরণপোষণ দিতে হবে। এর মধ্যে হাসিন জাহান পাবেন ১.৫ লক্ষ টাকা, এবং তাঁদের মেয়ে পাবেন ২.৫ লক্ষ টাকা প্রতি মাসে।

   

ক্লাব ফুটবল নিয়ে ‘বিরাট’ ঘোষণার পর অবসর নিলেন সুনীল

তবে হাসিন জাহানের দাবি, এই অর্থ বর্তমান পরিস্থিতিতে তাঁর এবং সন্তানের প্রয়োজন মেটাতে যথেষ্ট নয়। তিনি সুপ্রিম কোর্টে আবেদন করেছেন মাসিক ভরণপোষণ বৃদ্ধি করার জন্য, কারণ শামির আয় ও জীবনযাত্রার মান বর্তমানে অনেক বেশি।

সুপ্রিম কোর্টের বেঞ্চ আজ জানায়, “আমরা উভয় পক্ষের বক্তব্য শুনতে চাই। এর আগে হাইকোর্ট যে পরিমাণ অর্থ নির্ধারণ করেছিল, তা আপাতদৃষ্টিতে যথেষ্ট মনে হলেও, আবেদনকারীর যুক্তিগুলি বিবেচনায় নেওয়া হবে।” আদালত এই বিষয়ে কেন্দ্রীয় সরকার এবং পশ্চিমবঙ্গ সরকারের কাছ থেকেও মতামত চেয়েছে, যেহেতু মামলাটি নারী সুরক্ষা ও ভরণপোষণ আইনের অন্তর্ভুক্ত।

২০১৮ সালে হাসিন জাহান প্রথম মহম্মদ শামির বিরুদ্ধে গার্হস্থ্য হিংসা, প্রতারণা ও পরকীয়ার অভিযোগ আনেন। তারপর থেকেই তাঁদের বিবাহিত সম্পর্ক কার্যত ভেঙে যায়। দীর্ঘদিন ধরে আলাদা থাকছেন দু’জনেই, এবং তাঁদের মেয়ে হাসিনের হেফাজতেই রয়েছে। বিচারপ্রক্রিয়ার মধ্যে দিয়ে শামি অবশ্য সব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তিনি একাধিকবার বলেছেন, “আমি আমার দায়িত্ব থেকে কখনও পিছিয়ে আসিনি। আদালত যা রায় দেবে, আমি তা মেনে নেব।”

Advertisements

শামি বর্তমানে ভারতীয় ক্রিকেট দলের অন্যতম সিনিয়র পেসার। তাঁর আন্তর্জাতিক ম্যাচ থেকে শুরু করে বিজ্ঞাপন, স্পনসরশিপ এবং আইপিএল আয় সব মিলিয়ে তিনি উচ্চ আয়ের তালিকায় রয়েছেন। তাই হাসিন জাহানের দাবি, “আমার এবং মেয়ের জীবনযাপন তার উপার্জনের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ হওয়া উচিত।”

বিচারক বেঞ্চ আজকের পর্যবেক্ষণে বলেন, “ভরণপোষণের মূল উদ্দেশ্য হলো স্ত্রী ও সন্তানের আর্থিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করা। কিন্তু সেই অজুহাতে অযৌক্তিক পরিমাণ দাবি করা যায় না। আদালত ভারসাম্য বজায় রেখে সিদ্ধান্ত নেবে।”

মামলার পরবর্তী শুনানি আগামী কয়েক সপ্তাহের মধ্যে নির্ধারিত হতে পারে। এই মামলাটি শুধুমাত্র এক ক্রিকেটারের ব্যক্তিগত বিষয় নয়, বরং আদালতের পর্যবেক্ষণ ভবিষ্যতে বহু নারী-পুরুষের ভরণপোষণ সংক্রান্ত মামলার ক্ষেত্রে দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে পারে।

হাসিন জাহান সাংবাদিকদের বলেন, “আমি কোনো বাড়তি কিছু চাই না। শুধু ন্যায্য যা প্রাপ্য, সেটুকুই চাই। আমার মেয়ের ভবিষ্যৎ সুরক্ষিত করতে চাই।” অন্যদিকে, শামির আইনজীবী মন্তব্য করেছেন, “আমরা আদালতের প্রতি আস্থা রাখি। যেটি ন্যায়সঙ্গত মনে হবে, সেটিই মেনে নেব।”