আইপিএলের ভ্যালুয়েশন ধাক্কা খেল, ২০২৫-এ নেমে গেল ৮.৮ বিলিয়নে

The Indian Premier League’s (IPL) valuation has fallen sharply to $8.8 billion in 2025, down from $11.2 billion in 2023. Analysts cite high costs, declining viewership, and sponsorship issues.

নয়াদিল্লি, অক্টোবর ২০২৫: ভারতের ক্রিকেটের গ্ল্যামার ব্র্যান্ড ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগ (IPL) এক বড় ধাক্কা খেল। একসময় বিশ্বের সবচেয়ে মূল্যবান ক্রিকেট লিগ হিসেবে বিবেচিত আইপিএলের সামগ্রিক ভ্যালুয়েশন কমে দাঁড়িয়েছে ৮.৮ বিলিয়ন ডলারে, যেখানে ২০২৩ সালে তা ছিল ১১.২ বিলিয়ন ডলার। মাত্র দুই বছরের মধ্যে প্রায় ২.৪ বিলিয়ন ডলার মূল্য হারানোয় ক্রিকেট মহলে আলোড়ন পড়েছে।

Advertisements

কেন কমল আইপিএলের ভ্যালু?

বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, একাধিক কারণে আইপিএলের বাজারমূল্য হ্রাস পেয়েছে।

  1. অপারেশন খরচ বেড়ে যাওয়া:

    খেলোয়াড়দের মোটা বেতন, দল চালানো এবং স্টেডিয়াম খরচ—সব মিলিয়ে ব্যয় ক্রমাগত বাড়ছে। ২০২২ সালে নতুন দুটি ফ্র্যাঞ্চাইজি যোগ হওয়ার পর এই খরচ আরও বহুগুণ বেড়েছে।

  2. দর্শকদের ক্লান্তি:

    দীর্ঘ মরশুম ও প্রায় প্রতি বছর একই ফরম্যাটে খেলা হওয়ায় দর্শকদের আগ্রহ কমতে শুরু করেছে। ২০২৫ সালের টিভি রেটিং ২০২৩-এর তুলনায় প্রায় ১৫% কমেছে, ডিজিটাল ভিউয়ারশিপও স্থির অবস্থায় রয়েছে।

  3. স্পনসরশিপ কমে যাওয়া:

    বড় বড় কোম্পানি যেমন এফএমসিজি, ই-কমার্স বা ফিনটেক সংস্থাগুলি বিজ্ঞাপনের খরচ কমিয়ে দিয়েছে। এর ফলে আইপিএলের আয়ে বড় ধাক্কা লেগেছে।

  4. আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতা:

    সৌদি আরবের নতুন টোয়েন্টি-২০ লিগ ও অস্ট্রেলিয়ার বিগ ব্যাশ আবারও বিনিয়োগকারী ও বিশ্বমানের খেলোয়াড়দের আকর্ষণ করছে। ফলে আইপিএলের একচ্ছত্র প্রভাব কিছুটা কমেছে।

  5. নিয়ন্ত্রক সমস্যা:

    বেটিং, ট্যাক্স ও খেলোয়াড়দের অতিরিক্ত চাপ নিয়ে বিতর্ক বাড়ছে। স্পনসররা তাই আরও সতর্ক হয়ে গিয়েছেন।

বিশেষজ্ঞদের মত

ক্রীড়া ব্যবসা বিশ্লেষক রমেশ বৈদ্য বলেন—

Advertisements

“আইপিএল এখনও ব্র্যান্ড হিসেবে বিশাল, কিন্তু ১১.২ বিলিয়ন থেকে ৮.৮ বিলিয়নে নেমে আসা প্রমাণ করে অতিরিক্ত বাণিজ্যিকীকরণ আর দীর্ঘ মরশুম দর্শকদের ক্লান্ত করছে। এখনই নতুনত্ব আনা না গেলে ভ্যালুয়েশন আরও কমতে পারে।”

অন্যদিকে, ফ্র্যাঞ্চাইজির কর্ণধাররা মনে করছেন, বিসিসিআইকে (BCCI) এখন দর্শক আকর্ষণের জন্য নতুন কৌশল নিতে হবে। যেমন, মরশুম ছোট করা, দেশীয় প্রতিভাদের আরও গুরুত্ব দেওয়া এবং প্রযুক্তিনির্ভর ফ্যান-এনগেজমেন্ট বাড়ানো।

সব মিলিয়ে, আইপিএল এখনও ভারতের ক্রিকেটের সবচেয়ে বড় সম্পদ হলেও, এই পতন বড় সতর্কবার্তা। আগামী কয়েক বছরে ফরম্যাট ও দর্শক-অভিজ্ঞতায় পরিবর্তন আনতে না পারলে, বিশ্বের সবচেয়ে জনপ্রিয় ক্রিকেট লিগটির ভ্যালুয়েশন আরও নীচে নেমে যেতে পারে।