ইন্দোর, ১৯ অক্টোবর ২০২৫: আইসিসি মহিলা ক্রিকেট বিশ্বকাপ ২০২৫-এ আজ, রবিবার এক হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের সাক্ষী হতে চলেছে হোলকার স্টেডিয়াম। মুখোমুখি হবে ভারত ও ইংল্যান্ড মহিলা দল, আর এটাই দুই দলের মধ্যে ৮০তম ওয়ানডে ম্যাচ। টুর্নামেন্টে টিকে থাকার লড়াইয়ে ভারতকে যেমন জিততেই হবে, তেমনই ইংল্যান্ড চাইবে অপরাজিত ধারা বজায় রাখতে।
হরমানপ্রীত কৌরের নেতৃত্বাধীন ভারতীয় দল টুর্নামেন্টের শুরুতে দুর্দান্ত ছন্দে থাকলেও টানা দু’টি হারের ধাক্কায় এখন পয়েন্ট টেবিলে চাপে। শ্রীলঙ্কা ও পাকিস্তানের বিরুদ্ধে জিতে ভাল শুরু করেছিল, কিন্তু দক্ষিণ আফ্রিকা ও অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে শেষ মুহূর্তে ম্যাচ হাতছাড়া করেছে। বিশেষ করে অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে ৩৩১ রান তুলেও জিততে না পারা বড় ধাক্কা দিয়েছে ভারতকে। সেই ম্যাচে রেকর্ড রানচেজ করে অস্ট্রেলিয়া ইতিহাস গড়েছে। এখন ভারতের হাতে আছে মাত্র তিনটি ম্যাচ, এবং সেমিফাইনালে উঠতে হলে অন্তত দু’টিতে জয় পেতেই হবে।
অন্যদিকে, নাট সিভার-ব্রান্টের ইংল্যান্ড এখনও পর্যন্ত টুর্নামেন্টে অপরাজিত। দক্ষিণ আফ্রিকাকে ১০ উইকেটে হারিয়ে শুরু, এরপর বাংলাদেশ ও শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধেও সহজ জয়। পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ম্যাচ বৃষ্টিতে ভেসে যাওয়ায় পয়েন্ট ভাগাভাগি হয়েছে। ফলে চার ম্যাচে তাদের সংগ্রহ ৭ পয়েন্ট, যা ভারতীয় দলের থেকে স্পষ্টতই এগিয়ে।
ইতিহাসের পরিসংখ্যান বলছে, ভারত ও ইংল্যান্ড মহিলা দল এখন পর্যন্ত ৭৯ বার মুখোমুখি হয়েছে। এর মধ্যে ভারত জিতেছে ৩৬ বার, আর ইংল্যান্ড জিতেছে ৪১ বার। দু’টি ম্যাচ ফলহীন থেকেছে। অর্থাৎ ইংল্যান্ড সামান্য এগিয়ে থাকলেও ব্যবধান খুব বড় নয়।
এই লড়াইয়ে নজর থাকবে কিছু বিশেষ নামের দিকে। ভারতের হয়ে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে সবচেয়ে বেশি রান করেছেন মিতালি রাজ (২০০৫ রান)। তাঁর পরেই রয়েছেন হরমানপ্রীত কৌর (৯৫৫ রান) ও স্মৃতি মন্ধানা (৯৪২ রান)। ইংল্যান্ডের হয়ে শার্লট এডওয়ার্ডস একাই করেছেন ১১০২ রান, আর নাট সিভার-ব্রান্ট আছেন সক্রিয় ব্যাটারদের মধ্যে সেরা তালিকায়। বোলিংয়ে ভারতের কিংবদন্তি ঝুলন গোস্বামী একাই ৭৮ উইকেট নিয়েছেন ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে। ইংল্যান্ডের হয়ে সবচেয়ে সফল বোলার ক্যাথরিন সিভার-ব্রান্ট, যাঁর সংগ্রহ ৪১ উইকেট।
আজকের ইন্দোরের উইকেট সাধারণত ব্যাটিং সহায়ক। প্রচুর রান উঠতে পারে, তবে প্রথম দিকে বোলাররা সুইং কাজে লাগাতে পারলে ম্যাচে মোড় ঘুরে যেতে পারে। ভারতীয় দলের ব্যাটিং নির্ভর করবে হরমানপ্রীত ও মন্ধানার ওপর, যাঁরা ফর্মে ফিরলে যেকোনও লক্ষ্য তাড়া সম্ভব। অন্যদিকে, ইংল্যান্ড চাইবে সিভার-ব্রান্ট ও টপ অর্ডার দিয়ে বড় রান তুলতে, তারপর বোলারদের হাত ধরে ম্যাচে দাপট দেখাতে।
সব মিলিয়ে, ম্যাচটি হতে চলেছে ভাগ্য নির্ধারণী। ভারত হেরে গেলে তাদের সেমিফাইনালে ওঠার পথ কার্যত বন্ধ হয়ে যাবে। অন্যদিকে, ইংল্যান্ড জিতলে টপ ফোরের পথ আরও মসৃণ হবে। ইতিহাস, ফর্ম ও আত্মবিশ্বাসে ইংল্যান্ড এগিয়ে থাকলেও, ঘুরে দাঁড়ানোর মানসিকতা থাকলে ভারতীয় দল ম্যাচে চমক দেখাতে পারে।
📌 প্রেডিকশন: ম্যাচে সামান্য এগিয়ে ইংল্যান্ড, তবে হরমানপ্রীত-মন্ধানা জুটি ব্যাট হাতে ঝলক দেখালে ভারতও জয়ের দাবিদার।