নকআউটের স্বপ্ন অধরা হতেই পদত্যাগের ইচ্ছা প্রকাশ লাল-হলুদ কোচের

east-bengal-cricket-crisis-jc-mukherjee-t20-tournament-analysis

কলকাতার স্থানীয় ক্লাব ক্রিকেটে বহু বছর পর এমন দুর্দিন দেখছে ইস্টবেঙ্গল (East Bengal)। জেসি মুখার্জি টি-টোয়েন্টি টুর্নামেন্টে এক সময়ের শক্তিশালী লাল–হলুদ শিবির এখন পুরোপুরি চাপে। আট ম্যাচের ছ’টাতেই হার, আর গ্রুপে অবস্থান একদম তলানিতে। এগারো দলের মধ্যে আটটি দল নকআউটে যাবে, সেখানে ইস্টবেঙ্গলের এগোনোর সম্ভাবনা এখন ক্ষীণাতিক্ষীণ। শুধু নিজেদের বাকি দুই ম্যাচে জয়ই যথেষ্ট নয়, দেখে থাকতে হবে অন্য দলের ফলও।

Advertisements

ভারতের ব্যটিং ব্যর্থতায় দায়ী বিরাট-রোহিত! বিশ্লেষণে ভারতীয় কিংবদন্তি স্পিনার

   

পরিস্থিতি আরও কঠিন হয়ে ওঠে রবিবার। এরিয়ান ক্লাবের বিরুদ্ধে লজ্জাজনক হার যেন চূড়ান্ত ধাক্কা। প্রথমে ব্যাট করে এরিয়ান তোলে ১৭২/৯। বিশাল ভাটির ঝোড়ো ৫৪ রানের ইনিংস ছিল তাঁদের ভিত্তি। কিন্তু জয়ের তাড়া করতে নেমে ইস্টবেঙ্গল দুর্দান্ত শুরু করেছিল। ওপেনিং পার্টনারশিপে মাত্র ১৫.২ ওভারে ১৩২ রান। ঋতম পোড়েলের ৭৭ ও অরিন্দম ঘোষের ৬৬ রানের পর মনে হচ্ছিল ম্যাচ তো প্রায় পকেটে!

২৮ বলে দরকার ছিল মাত্র ৩৫ রান। হাতে ছিল নয়টি উইকেট—ক্রিকেটের যে কোনও ফরম্যাটেই সহজ সমীকরণ। কিন্তু সেখান থেকেই ম্যাচ বেরিয়ে যায় হাতের বাইরে। একের পর এক উইকেট পতন, চাপ সামলাতে ব্যর্থ ব্যাটাররা, আর অবিশ্বাস্যভাবে আট রানে হারের তিক্ত স্বাদ। এই হারের পর পুরো দল হতাশায় বিধ্বস্ত। কোচ সৈকত মুখোপাধ্যায় এমনকি দায়িত্ব ছাড়ার ইচ্ছাও প্রকাশ করেন। যদিও আপাতত তাঁকে দায়িত্বে রাখা হয়েছে।

ইস্টবেঙ্গলের যখন অন্ধকার সময়, ঠিক তখনই চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী মোহনবাগান দুর্দান্ত ধারায়। নয় ম্যাচের মধ্যে আটটিতে জয়, ফলে গ্রুপের শীর্ষে সবুজ–মেরুন। এদিন তপন মেমোরিয়ালের বিরুদ্ধে জয়ও ছিল খুব সহজ। প্রথমে ব্যাট করে মোহনবাগান তোলে ১৬৮/৯। অনুষ্টুপ মজুমদারের ৬৬ রানের ইনিংস ছিল ব্যাটিংয়ের স্তম্ভ। রান তাড়ায় নেমে তপন তুলতে পারে মাত্র ১৫২/৮। জেসল কারিয়ার চার উইকেট ম্যাচে মোড় ঘুরিয়ে দেয়।

Advertisements

ভবানীপুর বনাম শ্যামবাজার

ভবানীপুর তোলে টুর্নামেন্টের অন্যতম বড় স্কোর ২৪৬/৭। অখিলের ৩৫ বলে ৭৬, অভিষেকের ৫১ ও তৌফিক উদ্দিনের ১৯ বলে ৪৩ রান ক্যারিশমাটিক ব্যাটিংয়ের নিদর্শন। জবাবে শ্যামবাজার গুটিয়ে যায় মাত্র ৮৯ রানে।

মহামেডান বনাম টাউন ক্লাব

মহামেডানের ১৯৮/৪-এ বড় ভূমিকা অভিষেক বোসের ৫৬ ও অভিজিৎ সিংয়ের ২৪ বলে ৫৪*। বিপক্ষে শুভম সরকারের অপরাজিত ৭৮-ও বাঁচাতে পারেনি টাউনকে। মহামেডান জেতে নয় রানে।

কালীঘাট বনাম বড়িশা

ঠাণ্ডা মাথায় খেলে চার উইকেটে ম্যাচ পকেটে পুরেছে কালীঘাট।

ইস্টবেঙ্গলের সামনে এখন সমীকরণ কঠিন। দুটি ম্যাচে জিততেই হবে, সঙ্গে চাই ভাগ্যের মদত। অন্যদিকে মোহনবাগান ধরাছোঁয়ার বাইরে, ছন্দে টইটম্বুর। চিরপ্রতিদ্বন্দ্বীদের এমন বিপরীত যাত্রাপথ কলকাতা ক্রিকেটে নতুন করে গল্প তৈরি করছে। একদিকে পতনের খাদের কিনারা, অন্যদিকে শীর্ষে পৃষ্ঠপোষকতার বাতাস। সামনে আসে আরও নাটকীয় মোড়? এখন নজর সেদিকেই।