নয়াদিল্লি: ভারত-পাকিস্তান ক্রিকেট সম্পর্কের টানাপোড়েন ফের নতুন মাত্রা পেল এশিয়া কাপ ২০২৫–এর ট্রফি বিতর্কে। ফাইনালে পাকিস্তানকে হারিয়ে এশিয়া কাপ জেতার পরও ট্রফি হাতে নিতে অস্বীকার করেছিল ভারতীয় দল। এরপর থেকেই শুরু হয়েছে কূটনৈতিক ও ক্রীড়া–রাজনৈতিক সংঘাত।
ভারতীয় ক্রিকেট নিয়ন্ত্রণ বোর্ড (BCCI) এবার আনুষ্ঠানিকভাবে এশিয়ান ক্রিকেট কাউন্সিল (ACC)-এর প্রধান মোহসিন নকভিকে ইমেল পাঠিয়ে ট্রফি ফেরত দেওয়ার দাবি জানিয়েছে। বিসিসিআই সচিব দেবজিৎ শইকিয়া জানিয়েছেন, “আমরা নকভির কাছ থেকে এখনো কোনও উত্তর পাইনি।
স্টেট গভর্নমেন্ট সিকিউরিটিজ নিলামে ১৭,০০০ কোটি সংগ্রহ করল রাজ্যগুলি, জানাল আরবিআই
যদি শীঘ্রই প্রতিক্রিয়া না আসে, তাহলে আমরা বিষয়টি আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কাউন্সিল (ICC)-এর কাছে আনুষ্ঠানিকভাবে তুলব।” তিনি আরও বলেন, “আমরা ধাপে ধাপে এগোচ্ছি। এই ট্রফি ভারতেরই প্রাপ্য, এবং সেটি ফেরত না পাওয়া পর্যন্ত আমরা বিষয়টি ছাড়ব না।”
ফাইনাল ম্যাচে পাকিস্তানকে রোমাঞ্চকর লড়াইয়ে হারানোর পর ভারতীয় দল সিদ্ধান্ত নেয় যে তারা এশিয়া কাপ ট্রফি ও পদক ACC চেয়ারম্যানের হাত থেকে নেবে না। কারণ, বিসিসিআইয়ের মতে, নকভি শুধু ACC–এর প্রধানই নন, তিনি পাকিস্তানের শাসক দলের একজন গুরুত্বপূর্ণ নেতা তাই তাঁর হাত থেকে ট্রফি নেওয়া রাজনৈতিক বার্তা পাঠাবে। এই সিদ্ধান্তে ক্ষুব্ধ হন নকভি। তিনি এরপর পোস্ট–ম্যাচ প্রেজেন্টেশন অনুষ্ঠান বাতিল করেন এবং নির্দেশ দেন যে ট্রফি ACC কর্মকর্তাদের কাছে রাখা হবে। ভারতের হাতে কোনও আনুষ্ঠানিক উপস্থাপন করা হবে না।
এই ঘটনার পর বিসিসিআই সেপ্টেম্বরের ৩০ তারিখের ACC বৈঠকে নকভির আচরণের কড়া সমালোচনা করে। বিসিসিআই–এর সহ–সভাপতি রাজীব শুক্লা বলেন, “এশিয়া কাপ ট্রফি ACC–এর সম্পত্তি, কিন্তু সেটি প্রাপ্য বিজয়ী দলের কাছে পৌঁছানোই উচিত। এই অসম্মান শুধু ভারতের নয়, গোটা ক্রিকেট সংস্কৃতির।”
বিতর্কের জেরে নকভি প্রথমে দুঃখপ্রকাশ করলেও পরে নিজের অবস্থান থেকে সরে আসেননি। তিনি বলেন, “ভারত যদি ট্রফি চায়, তাহলে তাদের অধিনায়ক সুর্যকুমার যাদবকে দুবাইয়ে ACC–এর অফিসে এসে সেটি সংগ্রহ করতে হবে।”
এই শর্তে বিসিসিআই তীব্র প্রতিক্রিয়া জানায়। সচিব দেবজিৎ শইকিয়ার কথায়, “এটা সম্পূর্ণ অযৌক্তিক। একটি ট্রফি, যা ফাইনালের দিনই বিজয়ীদের হাতে তোলা উচিত ছিল, সেটি আনতে আমাদের অধিনায়ককে দুবাই পাঠানোর কোনও অর্থ হয় না। এটি অত্যন্ত অপেশাদার এবং খেলাধুলার চেতনার পরিপন্থী।”
এই ট্রফি বিতর্ক ইতিমধ্যেই ভারত–পাক ক্রিকেট সম্পর্কের বিদ্যমান টানাপোড়েনকে আরও বাড়িয়ে তুলেছে। কূটনৈতিক পর্যবেক্ষকরা বলছেন, “ক্রিকেট বরাবরই দুই দেশের মধ্যে সম্পর্কের সূক্ষ্ম মাপকাঠি হিসেবে কাজ করে। এই ঘটনা শুধু একটি ট্রফির প্রশ্ন নয়, বরং পারস্পরিক অবিশ্বাসের প্রতিফলন।” বর্তমানে ট্রফিটি ACC–এর হেফাজতেই রয়েছে, আর ভারত আনুষ্ঠানিকভাবে তা ফেরত পেতে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কাউন্সিলের দ্বারস্থ হওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে।