ক্রিকেট ভক্তদের জন্য বড় খবর! ১২৮ বছরের দীর্ঘ বিরতির পর, ক্রিকেট অবশেষে অলিম্পিক গেমসে ফিরতে (Cricket Returns to Olympics) চলেছে। এই খেলাটি ২০২৮ সালে লস অ্যাঞ্জেলেস অলিম্পিকে টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে খেলা হবে। এটি ক্রিকেটের সবচেয়ে ছোট এবং রোমাঞ্চকর সংস্করণ। আন্তর্জাতিক অলিম্পিক কমিটি (আইওসি) নিশ্চিত করেছে যে পুরুষ ও মহিলা উভয় বিভাগে ৬টি করে দল অংশ নেবে। প্রতিটি দল ১৫ জন খেলোয়াড় নিয়ে আসতে পারবে। ফলে প্রতি বিভাগে মোট ৯০ জন খেলোয়াড় থাকবেন।
ক্রিকেট শেষবার অলিম্পিকে দেখা গিয়েছিল ১৯০০ সালে প্যারিসে, তাও কেবল একটি প্রদর্শনী ম্যাচ হিসেবে। এক শতাব্দীরও বেশি সময় পর, এই খেলাটি শুধু ২০২৮ সালের লস অ্যাঞ্জেলেস অলিম্পিকে নয়। ২০৩২ সালের ব্রিসবেন অলিম্পিকেও ফিরবে। এটি ক্রিকেটের বিশ্বব্যাপী জনপ্রিয়তা ও গ্রহণযোগ্যতার একটি বড় প্রমাণ।
অন্যান্য বড় টুর্নামেন্টেও ক্রিকেটের উত্থান
সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ক্রিকেট অন্যান্য বড় ক্রীড়া ইভেন্টেও জায়গা করে নিয়েছে। ২০২২ সালে বার্মিংহামে অনুষ্ঠিত কমনওয়েলথ গেমসে প্রথমবারের মতো মহিলা ক্রিকেট অন্তর্ভুক্ত হয়। সেখানে অস্ট্রেলিয়া স্বর্ণপদক জিতলেও, ভারত রৌপ্যপদক অর্জন করে। এছাড়া, ২০২৩ সালে চীনে অনুষ্ঠিত এশিয়ান গেমসে পুরুষ ও মহিলা উভয় বিভাগে ক্রিকেট অন্তর্ভুক্ত করা হয়। ভারত উভয় বিভাগেই স্বর্ণপদক জিতে নিজেদের আধিপত্য প্রমাণ করে।
অলিম্পিকে ক্রিকেটের যাত্রা
অলিম্পিকে ক্রিকেটের অন্তর্ভুক্তির যাত্রা শুরু হয়েছিল ২০২১ সালের আগস্টে। আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কাউন্সিল (আইসিসি) আনুষ্ঠানিকভাবে এই খেলাটিকে অলিম্পিকে ফিরিয়ে আনার জন্য প্রচেষ্টা শুরু করে। আইসিসি লস অ্যাঞ্জেলেস ২০২৮ (এলএ২৮) আয়োজক কমিটির সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করে। অবশেষে, ২০২৩ সালের অক্টোবরে ক্রিকেটকে অলিম্পিকের জন্য পাঁচটি নতুন খেলার একটি হিসেবে গ্রহণ করা হয়।
কেন টি-টোয়েন্টি ফরম্যাট?
টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটটি ক্রিকেটের সবচেয়ে দ্রুতগতির এবং দর্শকপ্রিয় সংস্করণ। এটি অলিম্পিকের মতো বৈশ্বিক মঞ্চে সময়সীমার মধ্যে ম্যাচ শেষ করার জন্য আদর্শ। একটি টি-টোয়েন্টি ম্যাচ সাধারণত তিন ঘণ্টার মধ্যে শেষ হয়, যা দর্শকদের জন্য উত্তেজনা এবং আয়োজকদের জন্য সুবিধা নিশ্চিত করে। এই ফরম্যাটটি বিশ্বব্যাপী ক্রিকেটের জনপ্রিয়তা বাড়াতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। বিশেষ করে নতুন প্রজন্মের মধ্যে।
ভারতের সম্ভাবনা
ভারত, ক্রিকেটের একটি পাওয়ার হাউস হিসেবে, অলিম্পিকে দারুণ সম্ভাবনা নিয়ে আসবে। এশিয়ান গেমসে পুরুষ ও মহিলা উভয় দলের সাফল্য দেখিয়েছে যে ভারতীয় ক্রিকেটাররা আন্তর্জাতিক মঞ্চে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে প্রস্তুত। লস অ্যাঞ্জেলেসে ভারতীয় দলগুলো পদক জয়ের অন্যতম দাবিদার হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
ক্রিকেটের ভবিষ্যৎ
অলিম্পিকে ক্রিকেটের প্রত্যাবর্তন এই খেলার বৈশ্বিক প্রসারে একটি মাইলফলক। আমেরিকার মতো দেশে, যেখানে ক্রিকেট এখনও মূলধারার খেলা হয়ে ওঠেনি। লস অ্যাঞ্জেলেস অলিম্পিক এটিকে জনপ্রিয় করতে সাহায্য করবে। এছাড়া, ২০৩২ সালে ব্রিসবেনে এই ধারাবাহিকতা বজায় থাকলে। ক্রিকেটের ভবিষ্যৎ আরও উজ্জ্বল হবে।