রঞ্জি ট্রফির (Ranjit Trophy) এই ম্যাচের কোনো গুরুত্ব ছিল না দুটো দলের কাছেই, তবু খুশি কোচ আব্দুল মোনায়েম (Abdul Monayem)। কেন তা তিনি নিজেই জানিয়েছেন।
বলেছেন, ‘বাংলার এই ম্যাচের গুরুত্ব না থাকলেও আমার কাছে সবচেয়ে আনন্দের বিষয় ছিল আমাদের ইস্টবেঙ্গল (East Bengal) দলের দুই জোরে বোলার—সুমিত মহান্ত (এই ম্যাচেই ডেবিউ করল) আর দুর্দান্ত ফর্মে থাকা সুরজ জয়সওয়াল—উইকেটগুলো পাচ্ছিল! একসময় বেঙ্গল ৮০ রানে ৬ উইকেট ফেলে দিলেও, পরে একটু এলোমেলো বোলিং করল, তাই পাঞ্জাবের রানটা ১৯১ পর্যন্ত পৌঁছে গেল। অনমোল মালহোত্রাকে ওইভাবে ফ্রি খেলতে না দিয়ে বরং আউট করার চেষ্টা করলে মনে হয় অধিনায়ক অনুষ্টুপ মজুমদার ভালো করতেন! তৃতীয় পেসার মোহাম্মদ কাইফকেও নিজের ছন্দে মনে হলো না। দ্বিতীয় ইনিংসে বেঙ্গলকে ভুগতে হতে পারে!
আর একটা জিনিস না বলে পারছি না—বেঙ্গল যে কোয়ালিফাই করতে পারল না, সেটা নিয়ে কিন্তু কারও মধ্যেই কোনো আক্ষেপ দেখলাম না! এই ট্রফিগুলোই কিন্তু একটা স্টেট অ্যাসোসিয়েশনের কাছে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হওয়া উচিত। গত কয়েক বছরে বেঙ্গল ম্যানেজমেন্টের মধ্যে এই ব্যাপারে উদাসীনতা স্পষ্ট!
ঋদ্ধিমান সাহা ত্রিপুরা থেকে ফিরে এসে বেঙ্গলের হয়ে শেষ ম্যাচটা খেলছে! সৌরভ গাঙ্গুলীর এটা একটা ভালো পদক্ষেপ বলা যেতে পারে। আজ সকালে কিছুক্ষণ অভিষেক পোরেলের জায়গায় কিপিং করলেন, দুটো ক্যাচও নিলেন! আমাদের KCC (Kolkata Club Cricket)-এর তরফ থেকে অনেক শুভেচ্ছা!
আমার কাছে সবচেয়ে বড় পাওয়া সুমিত মহান্তর অসাধারণ ডেবিউ! মোহনবাগান থেকে যখন গতবার আমাদের ইস্ট বেঙ্গলে সাইন করল, তখন হোয়াইট বল ক্রিকেটে ওকে বেশি খেলাতে পারিনি। কিন্তু একবার ‘এ’ গ্রুপ লিগের খেলা শুরু হওয়ার পর তার পুরো অন্য রূপ দেখলাম—লম্বা, অদ্ভুত একটা লেংথে বল করে ব্যাটসম্যানদের নাজেহাল করে দিচ্ছিল!
আমি তখনই বুঝেছিলাম, এই ছেলে বড় মঞ্চের জন্য তৈরি! নেটেও অভিষেক দাস (পেস বোলিং যে সবচেয়ে ভালো খেলে) রোজ বলত—“দাদা, ওকে খেলা খুব কঠিন! ওকে বেঙ্গল রঞ্জি ট্রফিতে খেলালেই উইকেট বার করবে!”
আজ সুমিতকে দেখে এত ভালো লাগল! যদিও ডেবিউ ম্যাচের একটু চাপ ছিল, নাহলে আরও আগেই পাঞ্জাবকে অলআউট করে দিত! তবু ৪ উইকেট নিয়ে অসাধারণ ডেবিউ! ২য় ইনিংসে হয়তো আরও ভয়ংকর হয়ে উঠতে পারে’
তাঁর কথায়, ‘আমি ক্লাব কোচিং করছি ২০ বছর ধরে, আর প্রায় প্রতি বছরই আমার ক্লাবের একটা-দুটো ছেলে বেঙ্গল রঞ্জি দলে ডেবিউ বা কামব্যাক করছে! এটা সত্যি আমার কাছে অন্যরকম অনুভূতি! সেই মোহনবাগান কোচিং এর সময় শিলিগুড়ির ছেলে দেবব্রত দাস দিয়ে শুরু হয়েছিল, আর বছরের পর বছর আমার ক্লাব কোচিং এর ছেলেদের বড় মঞ্চে খেলতে দেখা—এটাই আমার কাছে সবচেয়ে বড় পাওয়া।’