শনিবারের ভর দুপুর। সাউথ সিটি আইনক্সের টিকিট কাউন্টারে দুটি যুবক জানতে চাইলেন, “দুটো ভারত-পাকিস্তান হবে?” তাদের প্রশ্ন শুনে কিছুটা অবাক হয়ে যান এক দম্পতি, যারা সিনেমা দেখার উদ্দেশ্যে মাল্টিপ্লেক্সে এসেছিলেন। তারা টিকিট কাউন্টারের ছেলেটিকে জিজ্ঞাসা করলেন, “এটা কোন সিনেমা?”
অবশ্য, এমন প্রশ্ন এখন আর অস্বাভাবিক নয়। কারণ, রবিবারের ছুটির দিন, অর্থাৎ আগামী কাল, সারা বাংলাজুড়ে পিভিআর-আইনক্সে লাইভ স্ট্রিমিং হবে ভারত-পাকিস্তান ম্যাচ। যা ভারতের ক্রিকেটপ্রেমীদের জন্য বড় এক উৎসব হতে চলেছে। আগাম টিকিট বুকিং শুরু হয়ে গিয়েছে।
এটা প্রথম নয়, এর আগেও পিভিআর-আইনক্সে ক্রিকেট ম্যাচ দেখানো হয়েছে। বিশেষত, টি-২০ বিশ্বকাপের ম্যাচগুলোর সময় মাল্টিপ্লেক্সে ক্রিকেট ম্যাচ দেখানোর প্রবণতা ছিল। কিন্তু সেই সময় একে একে সিনেমার টিকিটের তুলনায় ক্রিকেটের টিকিটের চাহিদা ছিল অনেক বেশি। রবিবারের ভারত-পাকিস্তান ম্যাচেও কিছুটা একই পরিস্থিতি হতে পারে। তবে, কয়েকটি মাল্টিপ্লেক্স কর্তৃপক্ষ জানাচ্ছেন, রবিবারের টিকিটের চাহিদা টি-২০ বিশ্বকাপের তুলনায় কম হবে।
পিভিআর-আইনক্সের এক কর্তা বলেন, “টি-২০ বিশ্বকাপের সময় টিকিটের চাহিদা বেশি ছিল কারণ, ২০ ওভারের ম্যাচটি চার ঘণ্টা ধরে মাল্টিপ্লেক্সে বসে খাওয়া-দাওয়া করে আরাম করে দেখা যায়। কিন্তু চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির ভারত-পাকিস্তান ম্যাচ ৯ ঘণ্টা ধরে চলবে। তাই অনেকে ঘরে বসে ম্যাচ দেখতেও পছন্দ করেন। সে কারণে রবিবারের টিকিটের চাহিদা টি-২০ বিশ্বকাপের মতো অতটা বেশি হবে না।”
এদিন মাল্টিপ্লেক্সে টিকিটের দাম ২৫০ টাকা থেকে ৫০০ টাকার মধ্যে পরিবর্তিত হচ্ছে। সাউথ সিটিতে একেবারে ৫০০ টাকা, আর অন্যান্য জায়গায় ৩০০ বা ৩৫০ টাকার টিকিট বিক্রি হচ্ছে। তবে, খেয়াল রাখার বিষয় হচ্ছে, এই টিকিটের সঙ্গে কোনো খাবারের সুবিধা নেই। অর্থাৎ, সিনেমার মতো বিরতির সময় খাবার কিনতে বাইরে বেরিয়ে যেতে হবে।
আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল, শহরের কিছু মাল্টিপ্লেক্সে ইংরেজি ধারাবিবরণী এবং কিছু জায়গায় হিন্দি ধারাবিবরণী থাকবে। তবে, ৯ ঘণ্টার দীর্ঘ এই ম্যাচের সময়, দর্শকদের জন্য বিরতির ব্যবস্থা থাকবে।
এদিকে, সারা বাংলাজুড়ে পিভিআর ও আইনক্সের মোট ১০টি মাল্টিপ্লেক্সে রবিবার দুপুর ১.৩০-এ একসঙ্গে ভারত-পাকিস্তান ম্যাচ দেখানো হবে। অনেকেই মনে করছেন, এতে সিনেমার ব্যবসা কিছুটা ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। কারণ, রবিবার দুপুরের শোতে সিনেমার পরিবর্তে অনেক দর্শক ক্রিকেট ম্যাচের টিকিট বুক করে ফেলবেন।
ক্রিকেটপ্রেমীদের জন্য এক ভিন্ন অভিজ্ঞতা অপেক্ষা করছে মাল্টিপ্লেক্সে। সিনেমার আসল জমজমাট সময়ে যদি ক্রিকেটের উপস্থিতি এতটা জোরালো হয়, তবে ভবিষ্যতে আরও এমন ধরনের প্রচেষ্টা বাড়তে পারে। তবে, সবকিছুর পরেও, মাল্টিপ্লেক্সের ব্যবসা কিভাবে চলবে, সেটা সময়ই বলে দেবে।