ডার্বির রঙ লাল-হলুদ। মরসুমের প্রথম ডার্বি ( Kolkata Derby) ম্যাচ জয় করল ইস্টবেঙ্গল (East Bengal) ফুটবল ক্লাব। সূচি অনুযায়ী শনিবার বিকেলে কলকাতা ফুটবল লিগের ডার্বি ম্যাচ খেলতে নেমেছিল ময়দানের দুই প্রধান। সম্পূর্ণ সময় শেষে মোহনবাগান (Mohun Bagan) সুপার জায়ান্টের বিপক্ষে ৩-২ গোলের ব্যবধানে জয় ছিনিয়ে নিল বিনো জর্জের ছেলেরা। এদিন ইস্টবেঙ্গলের হয়ে গোল করলেন যথাক্রমে জেসিন টিকে, সায়ন ব্যানার্জি এবং ডেভিড লালহানসাঙ্গা। অন্যদিকে, বাগানের হয়ে ব্যবধান কমান লেওয়ান কাস্টানা এবং কিয়ান নাসিরি। তিন ম্যাচ পর প্রিমিয়ার ডিভিশন লিগে ফের জয় পেল ইস্টবেঙ্গল।
উল্লেখ্য, ম্যাচের শুরু থেকেই যথেষ্ট আক্রমণাত্মক মেজাজে দেখা গিয়েছিল লাল-হলুদ ফুটবলারদের। একেবারে প্রথম কোয়ার্টারে বলে সহজ সুযোগ পেয়ে গিয়েছিল মশাল ব্রিগেড। প্রতিপক্ষের রক্ষণভাগে হানা দিয়ে এডমুন্ড লালরিন্ডিকার উদ্দেশ্যে বল বাড়িয়ে দিয়েছিলেন সায়ন বন্দোপাধ্যায়। কিন্তু সেটা কাজে লাগানো সম্ভব হয়নি। তবে খুব একটা হতাশ হতে হয়নি সমর্থকদের। সেই ঘটনার মাত্র তিন মিনিট পরেই আসে প্রথম গোল। ডেভিডের বাড়ানো বল থেকে জেসিনের উদ্দেশ্যে বল বাড়িয়ে দেন সায়ন। গোলের মুখ খুলতে খুব একটা অসুবিধা হয়নি জেসিন টিকের। অনায়াসেই এগিয়ে যায় ইস্টবেঙ্গল। যদিও তার কিছুক্ষণ পরেই সমতায় ফেরার সুযোগ এসে গিয়েছিল মোহনবাগানের কাছে। কিন্তু সেটি কাজে লাগাতে পারেননি দলের ফুটবলাররা।
নির্ধারিত ৪৫ মিনিটের পর অতিরিক্ত ৫ মিনিট যুক্ত করা হয় রেফারি তরফে। সেই সময় আসে দ্বিতীয় গোল। ৫১ মিনিটের মাথায় এডমুন্ডের ডিফেন্স চেরা পাস ধরে এগিয়ে যান সায়ন। তারপর সবুজ-মেরুন গোলরক্ষক দেবপ্রতাপ ঘোষকে পরাজিত করে দ্বিতীয় গোল এনে দেন দলকে। প্রথমার্ধের শেষে এই দুইটি গোলেই এগিয়ে ছিল ইস্টবেঙ্গল। তবে দ্বিতীয়ার্ধে লড়াইয়ে ফিরে আসতে বদ্ধপরিকর ছিল মেরিনার্সরা। সেইমতো ধরে আক্রমণ ভাগে বাড়তি জোর দিতে থাকেন ডেগি কার্ডোজো। বলতে গেলে দ্বিতীয়ার্ধের একেবারে প্রথম থেকেই লড়াকু মেজাজে ধরা দিয়েছিল সুহেল আহমেদ ভাট থেকে শুরু করে দীপেন্দু বিশ্বাসরা। তারপর সুযোগ বুঝেই ৫৬ মিনিটের মাথায় দলের হয়ে ব্যবধান কমিয়ে যান লেওয়ান কাস্টানা।
এই গোল নিঃসন্দেহে আত্মবিশ্বাস বাড়িয়ে দিয়েছিল বাগান ফুটবলারদের। পরবর্তীতে প্রতি আক্রমণে উঠে কিয়ার নাসিরি দলকে সমতায় আনার পর ধীরে ধীরে ম্যাচে আধিপত্য বিস্তার করতে শুরু করেছিল মোহনবাগান। কিন্তু পাল্টা আক্রমণ করতে ছাড়েনি বিনো জর্জের ছেলেরা। ৬৯ মিনিটের মাথায় সুযোগ বুঝেই প্রতিপক্ষের গোল বক্সে হানা দিয়ে হেট করে দলকে ফের এগিয়ে দিয়ে যান ডেভিড। ডার্বি ম্যাচে গোল পাওয়ায় আনন্দে আত্মহারা হয়ে জার্সি খুলে সেলিব্রেশন করতে শুরু করেছিলেন এই ভারতীয় ফুটবলার। স্বাভাবিকভাবেই পরবর্তীতে তাকে হলুদ কার্ড দেখান ম্যাচ রেফারি। কিন্তু সেখানেই শেষ নয়। ম্যাচের একেবারে শেষের দিকে বাগান গোলরক্ষককে একা পেয়ে ও বল বলে রাখতে পারেননি ডেভিড। না হলে ব্যবধান বাড়িয়ে ম্যাচ অনায়াসেই পকেটে পুড়ে নিতে পারত লাল-হলুদ। অপরদিকে, ম্যাচের অতিরিক্ত ৭ মিনিটের মধ্যে ফের গোলের জন্য প্রাণপণ চেষ্টা করে গেলেও দেবজিত মজুমদারের হাতে বারংবার আটকে যেতে হয় বাগান ব্রিগেডকে।