বাঙালি ডিফেন্ডারকে আইএসএলে রেজিস্টার করাল মশালবাহিনী

বর্তমানে ইমামি ইস্টবেঙ্গলের (East Bengal) পরিস্থিতি বেশ চ্যালেঞ্জিং। গত কয়েক সপ্তাহ ধরে চোটের সমস্যায় জর্জরিত এই দলটি নতুন কোচ অস্কার ব্রুজনের অধীনে কিছুটা ঘুরে দাঁড়ালেও…

East Bengal

বর্তমানে ইমামি ইস্টবেঙ্গলের (East Bengal) পরিস্থিতি বেশ চ্যালেঞ্জিং। গত কয়েক সপ্তাহ ধরে চোটের সমস্যায় জর্জরিত এই দলটি নতুন কোচ অস্কার ব্রুজনের অধীনে কিছুটা ঘুরে দাঁড়ালেও ময়দানের এই প্রধান এখনও খারাপ সময়ের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে। গত সিজনে বেশ কিছু দুর্দান্ত পারফরম্যান্সের পর, এই মরসুমের শুরুটা বেশ খারাপ ছিল ইস্টবেঙ্গলের। তবে ধীরে ধীরে দলটি নিজেদের ছন্দে ফিরতে শুরু করেছিল। কিন্তু বর্তমানে লাল-হলুদ শিবির চোট এবং একাধিক অনাকাঙ্খিত পরিস্থিতির কারণে আবারও নাজেহাল অবস্থায় পড়েছে।

ইস্টবেঙ্গলের জন্য সবচেয়ে বড় ধাক্কা আসে ফরাসি মিডফিল্ডার মাদিহ তালালের ইনজুরির কারণে। এসিএল (এ্যান্টিরিওর ক্রুশিয়েট লিগামেন্ট) চোটের জন্য এই মরসুমে আর মাঠে নামতে পারবেন না মাদিহ। ফলে তার অভাব এই দলটি অনুভব করছে, বিশেষত যখন দলটি নিজেদের মাঝামাঝি মাঠের শক্তি বাড়াতে চাচ্ছিল। এই চোটের ফলে মশাল ব্রিগেড আরও একটা বড় সমস্যায় পড়েছে, কারণ তালাল ছিলেন দলের গুরুত্বপূর্ণ এক সদস্য। এমন পরিস্থিতিতে দলটি আরও কয়েকটি ফুটবলারকে সাইন করার চেষ্টা করছে।

   

এছাড়াও চোটের সমস্যায় রয়েছেন সাউল ক্রেসপো, প্রভাত লাকরা, আনোয়ার আলি এবং মার্ক জোথানপুইয়া। ফলে দলের প্রথম একাদশ সাজাতে গিয়ে কোচ ব্রুজন কঠিন সিদ্ধান্তের সম্মুখীন হচ্ছেন। দলের গুরুত্বপূর্ণ খেলোয়াড়দের অনুপস্থিতি যেমন কলকাতা ডার্বি ম্যাচের মতো বড় ম্যাচগুলির জন্য চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে, তেমনি এতে দলের মানসিকতার ওপরও প্রভাব পড়তে পারে।

এমন পরিস্থিতিতে, গত কয়েকদিনে বেশ কিছু নতুন খেলোয়াড় সই করানোর দিকে নজর দিয়েছে ইস্টবেঙ্গল। আর সেই তালিকায় একটি বড় নাম হলো বাঙালি ডিফেন্ডার মনোতোষ চাকলাদার। তিনি যে একেবারে নতুন কোনো নাম নন, তা বলা যায়। চলতি মরসুমের শুরুতে লেসলি ক্লডিয়াস সরণির দলের হয়ে প্রিমিয়ার ডিভিশন লিগে ভালো খেলার মাধ্যমে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছেন এই ডিফেন্ডার। তাঁর খেলা লক্ষ্য করেছে ইস্টবেঙ্গল ম্যানেজমেন্ট এবং তাঁকে আইএসএলে রেজিস্টার করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে তারা।

monotosh chakladar really comes to east bengal

মনোতোষ চাকলাদার, কলকাতা ময়দানের পরিচিত একটি নাম। এই ডিফেন্ডার প্রিমিয়ার ডিভিশন লিগে একাধিক ম্যাচে সেরাটা দিয়েছেন। তাঁর দৃঢ় রক্ষণভাগ, জোরালো ট্যাকল এবং সঠিক পজিশনিং তাকে ময়দানের অন্যতম প্রতিভাবান ডিফেন্ডারে পরিণত করেছে। এমন পরিস্থিতিতে, লাল-হলুদ তাঁকে আইএসএলে নথিভুক্ত করার মাধ্যমে নিজেদের রক্ষণভাগ শক্তিশালী করার সুযোগ পাচ্ছে। এখন, প্রশ্ন হলো, তিনি আইএসএলে কতটা সফল হতে পারেন?

এতদিনে, মনোতোষ চাকলাদারের দক্ষতা সকলের নজরে এসেছে। বিশেষত কলকাতা ময়দানের প্রিমিয়ার ডিভিশন লিগে তাঁর পারফরম্যান্স প্রশংসিত হয়েছে। তিনি ছিলেন একটি দলের অমূল্য অংশ এবং প্রতিপক্ষের আক্রমণ রুখতে নিয়মিত ভূমিকা পালন করেছেন। তিনি ইস্টবেঙ্গলে যোগদান করার পরেও দলটি তার সেরাটা দিয়ে মাঠে নামার চেষ্টা করবে।

এই পরিস্থিতিতে, ইস্টবেঙ্গলের সামনে আরও একটি বড় চ্যালেঞ্জ রয়েছে। চলতি আইএসএল মরসুমে ইস্টবেঙ্গলের জন্য প্রথম ধাক্কা আসে গত ম্যাচে মুম্বাই সিটি এফসির বিরুদ্ধে খেলতে গিয়ে। ওই ম্যাচে দলটির অন্যতম ভরসাযোগ্য ডিফেন্ডার আনোয়ার আলি চোটে পড়েন, এবং তাকে হুইলচেয়ারে করে মাঠ ছাড়তে হয়। আনোয়ার আলির অভাব ইস্টবেঙ্গলের জন্য বড় ধাক্কা, কারণ তিনি দলের গুরুত্বপূর্ণ সদস্য। এর ফলস্বরূপ, দলের রক্ষণভাগে একাধিক পরিবর্তন আনা প্রয়োজন হতে পারে।

এখন দেখার বিষয় হলো, মনোতোষ চাকলাদার ইস্টবেঙ্গলে যোগ দেওয়ার পর কেমন পারফরম্যান্স উপহার দেন। তিনি যদি নিজের প্রমাণ দিতে সক্ষম হন, তবে শীঘ্রই আইএসএলে অভিষেকের পথে তিনি এগিয়ে যেতে পারেন। তাঁর সাথে ইস্টবেঙ্গলের রক্ষণভাগ আরও শক্তিশালী হবে এবং দলের জন্য এটি একটি ইতিবাচক পরিবর্তন হতে পারে।

এদিকে, ময়দানের এই প্রধান আগামী ম্যাচে শক্তিশালী মোহনবাগান সুপার জায়ান্টের বিপক্ষে লড়বে, যা দলের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই ম্যাচের ফলাফলে দলের ভবিষ্যত নির্ভর করছে, এবং দলের ম্যানেজমেন্ট ও কোচের জন্য এই ম্যাচ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

মনোতোষ চাকলাদার এবং অন্য নতুন খেলোয়াড়দের সঠিকভাবে মাঠে নামাতে পারলে, ইস্টবেঙ্গল হয়তো তাদের চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী মোহনবাগানের বিরুদ্ধে ভালো ফলাফল অর্জন করতে সক্ষম হবে। তবে, বর্তমান পরিস্থিতি এবং খেলোয়াড়দের চোট মাথায় রেখে কোচ ব্রুজনের জন্য ম্যাচটিকে জয়ীভাবে শেষ করা সহজ কাজ হবে না। এখন, সবাই তাকিয়ে আছেন ইস্টবেঙ্গলের নতুন এই ডিফেন্ডারের ওপর, এবং আশা করছেন, তিনি দলের জন্য একটি বড় শক্তি হয়ে উঠবেন।