ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড (BCCI) জুনিয়র স্তরে বয়স জালিয়াতির অভিযোগের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নিয়েছে। আইপিএল ২০২৫-এর তারকা বৈভব সূর্যবংশীর বিরুদ্ধে বয়স জালিয়াতির অভিযোগ ওঠার পর বিসিসিআই জুনিয়র ক্রিকেটারদের জন্য অতিরিক্ত হাড় পরীক্ষার নিয়ম চালু করেছে। রাজস্থান রয়্যালসের এই তরুণ ক্রিকেটার, যিনি মাত্র ১৩ বছর ২৮৮ দিন বয়সে আইপিএল নিলামে ১.১ কোটি টাকায় চুক্তিবদ্ধ হয়ে সবচেয়ে কম বয়সী খেলোয়াড় হিসেবে রেকর্ড গড়েছিলেন, তিনি বিতর্কের কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হন। অভিযোগ উঠেছিল যে বৈভবের বয়স ১৫ বছর বলা হলেও তিনি আসলে ১৩ বছরের। এই বিতর্ক আরও তীব্র হয় যখন তিনি আইপিএলে রেকর্ড সেঞ্চুরি করেন এবং সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি পুরনো ভিডিও ভাইরাল হয়। ভিডিওতে বৈভব নাকি ভিন্ন জন্মতারিখ উল্লেখ করেছেন। যদিও ভিডিওটির সত্যতা যাচাই করা হয়নি, বিসিসিআই এই ঘটনায় কঠোর পদক্ষেপ নিয়েছে।
বিসিসিআই-এর নতুন নিয়ম অনুযায়ী, আন্ডার-১৬ স্তরের খেলোয়াড়দের বয়স নির্ধারণের জন্য টিডব্লিউ৩ পদ্ধতির মাধ্যমে হাড় পরীক্ষা করা হবে। পূর্ববর্তী নিয়মে, বয়স নির্ধারণের পর একটি ‘১ ফ্যাক্টর’ যোগ করা হতো, যার ফলে অনেক খেলোয়াড় সামান্য বয়সের হিসেবে অযোগ্য হয়ে যেত। নতুন নিয়মে, যদি কোনো খেলোয়াড় গত মৌসুমে এই ‘১ ফ্যাক্টর’-এর কারণে অযোগ্য হয়ে থাকেন, তবে পরবর্তী মৌসুমে তাকে আরেকটি হাড় পরীক্ষার মাধ্যমে যোগ্যতা নির্ধারণের সুযোগ দেওয়া হবে।
বিসিসিআই-এর একটি সূত্র জানিয়েছে, “এই পদক্ষেপের লক্ষ্য হলো খেলোয়াড়ের সঠিক বয়স নির্ধারণ করা এবং নিশ্চিত করা যে কোনো খেলোয়াড় শুধুমাত্র গাণিতিক হিসেবের কারণে একটি মৌসুম খেলার সুযোগ হারাবে না।” এই নিয়ম অনুযায়ী, পুরুষ খেলোয়াড়দের জন্য হাড়ের বয়স ১৬.৪ বছর বা তার কম এবং মহিলা খেলোয়াড়দের জন্য ১৪.৯ বছর বা তার কম হতে হবে। উদাহরণস্বরূপ, ২০২৫/২৬ মৌসুমে একজন পুরুষ আন্ডার-১৬ খেলোয়াড়ের হাড়ের বয়স ১৫.৪ বছর হয়, তবে পরবর্তী মৌসুমে (২০২৬/২৭) তার হাড়ের বয়স ১৬.৪ বছর ধরে নেওয়া হবে, এবং তিনি টুর্নামেন্টে অংশ নিতে পারবেন।
এই নিয়মের মাধ্যমে বিসিসিআই নিশ্চিত করতে চায় যে বয়স জালিয়াতি রোধ করার পাশাপাশি প্রকৃত প্রতিভারা সুযোগ থেকে বঞ্চিত না হয়। এটি জুনিয়র ক্রিকেটে স্বচ্ছতা ও ন্যায্যতা নিশ্চিত করার একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ।