২০ জুন থেকে শুরু হতে চলেছে ভারতীয় দলের (Indian Cricket Team) বহু প্রতীক্ষিত ইংল্যান্ড সফর (England Tour)। পাঁচ ম্যাচের টেস্ট সিরিজ দিয়েই শুরু হবে ভারতের নতুন বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ (WTC) সাইকেল। গ্রীষ্মকালীন সফর হলেও ইংল্যান্ডের ঘরের মাঠে সুইং ও সিমের জন্য পরিচিত উইকেটে শক্তিশালী পেস আক্রমণ ছাড়া সাফল্য পাওয়া কঠিন। তাই এবারের স্কোয়াডে পেসারদের দিকে বিশেষ নজর দিতে চাইছে নির্বাচক কমিটি। সেই মতো থাকতে পারে একাধিক অভিজ্ঞ মুখ, সঙ্গে কিছু নতুন চমকও।
প্রত্যাশা মতোই দলে রাখা হতে পারে জসপ্রীত বুমরাহকে। ২০২৪-২৫ সালের বর্ডার-গাভাসকার ট্রফিতে দুর্দান্ত পারফর্ম করেছিলেন তিনি। আইপিএলে ফিরে চোট কাটিয়ে নিজের আগের ছন্দে ফিরে এসেছেন। তবে টানা পাঁচটি টেস্ট ম্যাচ খেলানো তার শরীরের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ হতে পারে, তাই তাকে রোটেশনে খেলানোর পরিকল্পনা নেওয়া হচ্ছে। দল তার উপর যথেষ্ট ভরসা রাখলেও অধিনায়কত্বের ভার সম্ভবত তার উপর দেওয়া হবে না, যাতে ওয়ার্কলোড কিছুটা কম থাকে। বুমরাহর আগুনে স্পেল ইংল্যান্ডের কন্ডিশনে ভয়ঙ্কর হয়ে উঠতে পারে প্রতিপক্ষ ব্যাটারদের জন্য।
সম্ভবত দলের দ্বিতীয় অভিজ্ঞ পেসার হিসেবে থাকবেন মহম্মদ শামি। যদিও সাম্প্রতিক সময়ে তিনি কিছুটা ছন্দ হারিয়েছেন, তবে ইংল্যান্ডের পিচে তিনি তার সুইং ও নিয়ন্ত্রিত লাইনের জন্য পরিচিত। চিকিৎসা ও পুনর্বাসনের পর তিনি পুরোপুরি ফিট বলে জানা গিয়েছে, এবং নির্বাচকরা আশা করছেন তিনি বুমরাহকে চমৎকারভাবে সহায়তা করবেন। তার অভিজ্ঞতা যে কোনও গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে বড় ভূমিকা নিতে পারে।
তৃতীয় পেসার হিসেবে দলে ফিরতে চলেছেন মহম্মদ সিরাজ। তিনি আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি থেকে বাদ পড়লেও, আইপিএল ২০২৫-এ দুর্দান্ত পারফর্ম করে আবারও নজর কেড়েছেন। তার বোলিংয়ে গতি, আগ্রাসন এবং পরিস্থিতি অনুযায়ী লাইন-লেংথ বদলানোর ক্ষমতা এই সিরিজে ভারতের জন্য বড় সম্পদ হতে পারে।
চতুর্থ পেসার হিসেবে দলে সুযোগ পেতে পারেন প্রসিদ্ধ কৃষ্ণ। যদিও তার আন্তর্জাতিক অভিজ্ঞতা সীমিত, তবুও লাল বলের ক্রিকেটে তার ধারাবাহিকতা ও উচ্চতা থেকে বল করার দক্ষতা ইংল্যান্ডের কন্ডিশনে কার্যকর হতে পারে। তিনি আইপিএল ২০২৫-এ দুর্দান্ত ফর্মে রয়েছেন এবং পার্পল ক্যাপ জয়ের দৌড়ে রয়েছেন। নির্বাচকরা তাকে হর্ষিত রানার চেয়ে বেশি অগ্রাধিকার দিচ্ছেন এই সফরের জন্য।
পঞ্চম পেসার হিসেবে দলে যেতে পারেন অলরাউন্ডার শার্দুল ঠাকুর। ব্যাট এবং বল দুই বিভাগেই অবদান রাখার ক্ষমতা তার বড় প্লাস পয়েন্ট। আগের ইংল্যান্ড সফর ও অস্ট্রেলিয়া সিরিজে গুরুত্বপূর্ণ সময়ে উইকেট নেওয়া এবং ইনিংস গঠন করে ম্যাচ ঘোরানোর দক্ষতা তার দলে জায়গা করে দিয়েছে। সঙ্গে যুক্ত হতে পারেন আরেক তরুণ অলরাউন্ডার নীতিশ কুমার রেড্ডি। তার ব্যাটিং ফর্ম নজর কেড়েছে এবং বোলিংয়েও মাঝেমধ্যে কার্যকরী হয়ে উঠেছেন। ভবিষ্যতের জন্য এই সফর তার অভিজ্ঞতা অর্জনের জায়গা হতে পারে।
সার্বিকভাবে, নির্বাচকদের পেস অ্যাটাক ভারসাম্যপূর্ণ করার চেষ্টা স্পষ্ট। অভিজ্ঞতা, ফর্ম এবং ভবিষ্যতের দিক মাথায় রেখে একটি ভারসাম্যপূর্ণ দল গঠনের লক্ষ্যেই এগোচ্ছে ভারতীয় দল। ইংল্যান্ড সফরের মতো গুরুত্বপূর্ণ চ্যালেঞ্জে প্রতিটি পেসারের ভূমিকা হতে চলেছে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এখন দেখার বিষয়, কাদের শেষমেশ মূল একাদশে জায়গা হয় এবং কে কতটা প্রভাব ফেলতে পারেন ঐতিহাসিক এই সফরে।