ভারতীয় ক্রিকেট কন্ট্রোল বোর্ড (BCCI) সম্পর্কিত একটি অবিশ্বাস্য সংবাদ প্রকাশ পেয়েছে, যা ক্রিকেট প্রেমীদের মাঝে তুফান তুলে দিয়েছে। বিসিসিআই-এর (BCCI) ব্যাংক ব্যালেন্স এখন ২০,৬৮৬ কোটি টাকার কোঠায় পৌঁছে গেছে, যা গত ২০১৯ সাল থেকে ১৪,৬২৭ কোটি টাকা বৃদ্ধি পেয়েছে। এই অসাধারণ আর্থিক সমৃদ্ধি ক্রিকেট জগতে বিসিসিআই-এর অপরাজey শক্তির একটি পরিচয়। তবে এই অর্থের ব্যবহার নিয়ে প্রশ্ন ও সমালোচনা উঠছে, এবং সামাজিক মাধ্যমে বিভিন্ন মতামত প্রকাশ পাচ্ছে।
বিসিসিআই-এর এই আর্থিক সাফল্যের পেছনে প্রধান ভূমিকা রয়েছে আইপিএল (ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগ) থেকে আসা রাজস্ব এবং বিভিন্ন আন্তর্জাতিক স্পনসরশিপ চুক্তি। হিন্দুস্থান টাইমস-এর একটি প্রতিবেদনে জানা গেছে যে, বিসিসিআই-এর মোট রিজার্ভ ইতিমধ্যে ৩০,০০০ কোটি টাকার কাছাকাছি, এবং এর থেকে প্রতি বছর প্রায় ১,০০০ কোটি টাকা ব্যাজার হিসেবে আসছে। এই আয়ের বৃদ্ধি প্রতি বছর ১০-১২ শতাংশ হারে চলমান, যা মিডিয়া ডিল, স্পনসরশিপ এবং ম্যাচ-দিবসের আয়ের কারণে সম্ভব হচ্ছে। বিসিসিআই-এর (BCCI) এই অর্থশক্তি এমন এক পর্যায়ে পৌঁছে গেছে যে, আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কাউন্সিল (আইসিসি) এর বেশিরভাগ ফান্ডিং এখন বিসিসিআই-এর (BCCI) ওপর নির্ভরশীল।
তবে এই বিশাল অর্থের ব্যবহার নিয়ে ক্রিকেট প্রেমীদের মনে অনেক প্রশ্ন জাগছে। সামাজিক মাধ্যমে, বিশেষ করে এক্স-এ, অনেকে মন্তব্য করছেন যে, এই অর্থটি ক্রিকেটের মৌলিক গড়নে সঠিকভাবে ব্যয় করা হচ্ছে না। একজন ব্যবহারকারী লিখেছেন, “এই অর্থটি ইনফ্রাস্ট্রাকচার, ভালো ক্যামেরা এবং অন্যান্য সুবিধার জন্য ব্যয় করা দরকার, ন loত এটি জমা থাকার কোনো মানে হয় না।” অন্য একজন বলেছেন, “২০২৩ সালের ওডিআই বিশ্বকাপে প্রতি স্টেডিয়ামের জন্য মাত্র ৫০ কোটি টাকা বরাদ্দ, এটা কি যথেষ্ট?” এই সমালোচনা থেকে মনে হচ্ছে, গ্রামীণ ক্রিকেট এবং নতুন প্রজন্মের প্রশিক্ষণে এই অর্থের ব্যবহার বাড়ানোর দাবি বাড়ছে।
একই সঙ্গে, বিসিসিআই-এর এই আর্থিক প্রভাব তাদের গ্লোবাল অবস্থানকে আরও শক্তিশালী করেছে। তারা বিশ্বের সবচেয়ে ধনী ক্রিকেট গভর্নিং বডি হিসেবে পরিচিত, এবং এর ফলে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে তাদের প্রভাবও বেড়েছে। তবে এই প্রভাবের মাঝেও তাদের পাকিস্তানের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক ক্রিকেট সিরিজে অংশ নেওয়ার ইচ্ছা নেই। ২০২৫ সালের এপ্রিলে পাহালগাঁওতে ঘটে যাওয়া সন্ত্রাসী হামলার পর এই সিদ্ধান্ত আরও দৃঢ় হয়েছে। বিসিসিআই-এর ভাইস প্রেসিডেন্ট রজৎ শুক্লা জানিয়েছেন, “দ্বিপাক্ষিক সিরিজে পাকিস্তানের সঙ্গে খেলা হবে না, তবে আইসিসি ইভেন্টে অংশ নেওয়া চলতেই থাকবে।” এই সিদ্ধান্তের পেছনে ১৯৪৭ সাল থেকে চলমান ভারত-পাকিস্তানের রাজনৈতিক ও সামরিক সংঘাত এক বড় কারণ।
সামাজিক মাধ্যমে এই বিষয়ে বিভিন্ন ধরনের মতামত প্রকাশ পাচ্ছে। কেউ কেউ মনে করছেন, বিসিসিআই-এর এই অর্থ দিয়ে দেশের গ্রামীণ ক্রিকেটে বিনিয়োগ বাড়ানো উচিত, যেখানে প্রতিভার অভাব নেই কিন্তু সুযোগের ঘাটতি রয়েছে। একজন লিখেছেন, “বিসিসিআই-এর এই অর্থ দিয়ে ১০টি আইসিসি-কে কিনে ফেলা যায়, এটা অবিশ্বাস্য!” অন্যদিকে, কিছু ব্যবহারকারী বিরোধী মনোভাব প্রকাশ করে বলছেন, “বিসিসিআই আর ভারতের প্রতিনিধিত্ব করে না, তাদের এই অর্থের ব্যবহার নিয়ে সন্দেহ হচ্ছে।”
বিসিসিআই-এর এই আর্থিক সাফল্য একদিকে গর্বের বিষয়, অন্যদিকে তাদের দায়িত্ব বাড়িয়ে দিয়েছে। ক্রিকেট প্রেমীরা এখন এই অর্থটি কীভাবে ব্যবহার করা হচ্ছে, তা নিয়ে কৌতূহলী। দেশের ক্রিকেট ইনফ্রাস্ট্রাকচার উন্নয়ন, নতুন প্রজন্মের প্রশিক্ষণ এবং খেলোয়াড়দের কল্যাণের জন্য এই অর্থ ব্যবহার হলে ভারতীয় ক্রিকেট আরও উন্নতির পথে এগোতে পারে। তবে বর্তমানে যে চিত্র দেখা যাচ্ছে, তাতে এই প্রশ্নগুলোর উত্তর দেওয়া বিসিসিআই-এর জন্য একটি বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে।