প্রতীক্ষা শেষ। বিশ্বকাপ (World Cup) শুরু। গোটা ব্রাজিল জুড়ে এই সময় কীরকম উন্মাদনা, তা চোখ বন্ধ করলেই অনুভব করতে পারি। বিশ্বকাপ এলেই মনে পড়ে যায় ছোটবেলার কথা। গোটা বিশ্বকাপ জুড়েই উৎসবের আমেজে আমরা মেতে থাকতাম।সময়ের সঙ্গে এখন অনেক কিছু বদলে গিয়েছে। টেকনলজির দিক থেকে আমরা আরও আধুনিক হয়েছি।
কিন্তু বিশ্বকাপ ঘিরে সেই উন্মাদনা আরও বেড়েছে বই কমেনি সেটা কাতার বিশ্বকাপের দিকে চোখ রাখলেই পরিষ্কার হয়ে যাবে। একজন ব্রাজিলীয় (Brazil) হিসেবে আমি অবশ্যই চাই কাতারে বিশ্বকাপ হাতে উঠুক নেমারদের। ধারেভারে শক্তিতে সেলেকাওরা এবারের বিশ্বকাপে অন্যতম ফেভারিট। কিন্তু একমাত্র নয়। ব্রাজিল ছাড়াও আর্জেন্টিনা, স্পেন এমনকি পর্তুগালেরও বিশ্বচ্যাম্পিয়ন হওয়ার ক্ষমতা রয়েছে।
রাশিয়া বিশ্বকাপের চেয়েও কাতারের বিশ্বকাপের আকর্ষণ অনেক বেশি। কারণ, সবকিছু ঠিক থাকলে এটাই হয়তো শেষ বিশ্বকাপ হতে চলেছে মেসি, রোনাল্ডোর। খুব ভুল না করলে নেমারেরও। তাই বিশ্বফুটবলের এই তিন সেরা নক্ষত্রই চাইবে বিশ্বকাপটা নিজেদের ট্রফি ক্যাবিনেটে সাজিয়ে রাখতে। একজন ফুটবল অনুরাগী হিসেবে বিশ্বকাপে মেসি, নেমার, রোনাল্ডোদের খেলা চাক্ষুষ করতে পারছি, এরজন্য নিজেকে ভাগ্যবান বলে মনে হয়। শেষ বিশ্বকাপে তাদের কাছ থেকে বাড়তি কিছু স্পেশাল মুহূর্ত দেখতে পাব, সেই আশা নিয়েই খেলা দেখব।অনেকেই সম্ভাব্য চ্যাম্পিয়ন হিসেবে ব্রাজিলকেই দেখছে। নেইমার একা নয়, ব্রাজিলের এই দলটায় তারকার ছড়াছড়ি। কিন্তু খেলাটার নাম যে ফুটবল, অনিশ্চয়তায় ভরা। অনেক হিসাব উলটে যেতে পারে। একান্তই যদি ব্রাজিল না পারে।
তখন কী হবে? সেক্ষেত্রে চাইব, বিশ্বকাপ উঠুক মেসির হাতে। শুনে চমকাতে পারেন, কিন্তু আমার মতে এই মুহূর্তে লাতিন আমেরিকার সেরা দল আর্জেন্টিনা। কেন? কারণ কোপা আমেরিকা জয়ী হিসেবে ওরা বিশ্বকাপে খেলতে নামবে। ধারাবাহিকতাও আর্জেন্টিনার স্বপক্ষে কথা বলছে। আর অবশ্যই ফ্যাক্টর মেসি। দীর্ঘ কেরিয়ারে অনেক সাফল্য মেসি অর্জন করেছে, শুধু বিশ্বকাপটা বাদে। আমার বিশ্বাস, নিজের শেষ বিশ্বকাপে ও নিজেকে উজাড় করে দেবে। আর মেসির জন্য বিশ্বকাপ জিততে চাইবে ওর সতীর্থরা।
শেষ বিশ্বকাপটা স্মরণীয় করে রাখতে চাইবে রোনাল্ডোও। বাকি দু’জনের তুলনায় অনেক চাপমুক্ত অবস্থায় বিশ্বকাপ খেলতে নামবে সিআর সেভেন। কারণ এই পর্তুগাল মোটেই রোনাল্ডো নির্ভর নয়। এটা ওর জন্য যতটা অ্যাডভান্টেজ, বিপক্ষের জন্য ততটাই আতঙ্কের। চারবছর আগের পর্তুগালের সঙ্গে এই পর্তুগালের আকাশপাতাল তফাত। এই পর্তুগালে রোনাল্ডোর সহযোগী যোদ্ধা হিসেবে ব্রুনো ফার্নান্ডেজ, বার্নার্ডো সিলভা, জোয়াও ক্যানসেলোর মতো মুখ রয়েছে, যারা একক দক্ষতায় ম্যাচের রং বদলে দেওয়ার ক্ষমতা রাখে। তাই এই পর্তুগালকে হিসেবের বাইরে রাখলে ঠকতে হবে। আর অবশ্যই বলব ফ্রান্সের কথা। চোট আঘাত সমস্যায় গতবারের চ্যাম্পিয়নদের শক্তিক্ষয় হয়েছে ঠিকই। কিন্তু ভুলে যাবেন না, ফ্রান্স টিমে একটা কিলিয়ান এমবাপে আছেন। ওর জন্যই ফ্রান্সকে কাপ-জয়ের দৌড়ে বাইরে রাখতে পারছি না।