ফ্লিকের মাস্টারস্ট্রোকেই রিয়ালকে দুরমুশ করে ৪ গোল বার্সার, হতাশ আনচেলত্তি

বেশ কিছুদিন আগেই বার্নাব্যুতে বরুসিয়া ডর্টমুন্ডকে পিছিয়ে পরেও ৫-২ গোলে হারিয়েছিল মাদ্রিদ। মাত্র কয়েক দিনের ব্যবধানে ডর্টমুন্ডেরই দেশের এক ভদ্রলোক আনচেলত্তি দলকে বুঝিয়ে দিলেন মুদ্রার…

Barcelona Thrash Rivals to Secure Six-Point Lead at Top of La Liga

বেশ কিছুদিন আগেই বার্নাব্যুতে বরুসিয়া ডর্টমুন্ডকে পিছিয়ে পরেও ৫-২ গোলে হারিয়েছিল মাদ্রিদ। মাত্র কয়েক দিনের ব্যবধানে ডর্টমুন্ডেরই দেশের এক ভদ্রলোক আনচেলত্তি দলকে বুঝিয়ে দিলেন মুদ্রার একপিঠ শুধু দেখলেই হয় না, অপরপিঠও সমানভাবে পর্যবেক্ষণ করা প্রযোজ্য। এদিন পূর্ব ডর্টমুন্ডের তারকা লেভানডস্কির দাপটেই ৪-০ গোলে রিয়ালকে হারিয়ে প্রথম এল ক্লাসিকো জিতে নিল বার্সেলোনা (Barcelona)। লেভানডস্কির সাথে এদিন গোল করলেন ইয়ামাল এবং রাফিনিয়া।

ফুটবল বরাবরই অনিশ্চয়তার খেলা। এদিন বার্নাব্যুতে জিতে সেকথা আরও একবার প্রমাণ করল বার্সা। তবে জয়ের নেপথ্যে লেভানডস্কি বা ইয়ামালের পাশাপাশি হ্যান্সি ফ্লিকের অবদানও সমানভাবে উল্লেখ্য। এদিন তাঁর নির্দেশেই প্রথমার্ধে বার্সা পাতল অফসাইডের ফাঁদ। তাতে আটকে কিংবা লটকে জেরবার হলো রিয়ালের আক্রমণভাগ। এমনকি আজ ক্লাসিকোয় অভিষেক হওয়া এমবাপেও ফ্লিকের হাইলাইন ডিফেন্সে পাতা অফসাইডের ফাঁদে একবারও গোল পাননি। বিরতি শেষে ম্যাচের ৫৬ মিনিটের পর থেকে রাতটা উল্টো রিয়ালের জন্যই বিভীষিকাময় হতে শুরু করল! ৫৬ মিনিটের মধ্যে ২-০ গোলে এগিয়ে যাওয়ার পর ৮৪ মিনিটের মধ্যে সেটাই ৪-০।

   

ক্লাসিকোয় ৪-০ গোলের এই জয় বার্সার জন্য যে শুধু জয় নয়, চিরপ্রতিদ্বন্দ্বীদের ঘরে, তাঁদেরই দর্শকদের সামনে নাস্তানাবুদ করার আনন্দও। সোনায় সোহাগা হিসেবে যোগ হতে পারে, ক্লাসিকোর এক অর্ধে প্রতিপক্ষের মাঠে ৬৫ বছর পর ৪ গোল করার গৌরবও। ১৯৫৯ সালের ৭ জুন ক্লাসিকোয় এই বার্সাই করেছিল ৪ গোল, মাঠও এই বার্নাব্যু এবং সেই দ্বিতীয়ার্ধেই।

প্রথমার্ধ গোলশূন্য কাটার পর জোড়া গোল করেন রবার্ট লেভানডস্কি। ৫৪ থেকে ৫৬, এই তিন মিনিটের ঝড়ে লেভার কাছে ২-০ গোলে পিছিয়ে পড়েছিল রিয়াল। এরপর ৭৭ মিনিটে লামিনে ইয়ামাল ও ৮৪ মিনিটে অধিনায়ক রাফিনিয়ার গোলে আনন্দের ষোলোকলা যেন পূর্ণ হয় বার্সার।

তবে বার্সার গোলকিপার ইনাকি পেনার দৃঢ়তার কথাও বলতে হবে। ওয়ান টু ওয়ানে এমবাপের তিনটি শট রুখেও দিয়ে ম্যাচের মোড় ঘুরিয়ে দেন তিনি। এর মধ্যে অন্তত দুটি শট থেকে গোল হতেই পারত। পেনার দৃঢ়তার কথায় অবশ্য বার্সার পুরো দলের দৃঢ়তার প্রসঙ্গও চলে আসে। আর এর সাথেই ভেঙ্গে যায় ফরাসি তারকার বার্সাকে হারানোর স্বপ্ন।

দ্বিতীয়ার্ধ শুরুর পরপরই কার্লো আনচেলত্তির রক্ষণও কয়েক মুহূর্তের জন্য হাইলাইন ডিফেন্সে উঠে গিয়েছিল। সেই সুযোগে ৫৪ মিনিটে লেভাকে থ্রু পাস দেন ২১ বছর বয়সী ডিফেন্সিভ মিডফিল্ডার মার্ক কাসাদো। রিয়াল গোলকিপার আন্দ্রেই লুনিনকে একা পেয়ে গোল করতে অসুবিধা হয়নি লেভার। মাঝে এক মিনিট পরই বাঁ প্রান্ত থেকে আসা ক্রসে দুর্দান্ত হেডে আবারও গোল করেন পোলিশ তারকা। এবারও পাসদাতা এক ২১ বছর বয়সী, আলেহান্দ্রো বালদে। ১১ ম্যাচে ১৪ গোল করা লেভা লিগে এবার এখন পর্যন্ত সর্বোচ্চ গোলদাতাও। মৌসুমে করলেন ১৭তম গোল।

এরপর ৭৭ মিনিটে লামিনে ইয়ামালের ডান পায়ের শটে স্কোর লাইন আরও পাল্টে যায়। এগিয়ে যায় বার্সেলোনাও। রাফিনিয়ার পাস পেয়ে ডান প্রান্ত থেকে গোল করেন বার্সা তারকা। ৭ মিনিট পরই লব করে রিয়ালের কফিনে শেষ পেরেকটি পুঁতে দেন রাফিনিয়া।

প্রসঙ্গত উল্লেখ্য যে, ১১ ম্যাচে ১০ জয়ে মোট ৩০ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে ফ্লিকের বার্সা। সমান ম্যাচে ৭ জয় ও ৩ ড্রয়ে মোট ২৪ পয়েন্ট নিয়ে দুইয়ে রিয়াল। এছাড়াও আনসু ফাতির রেকর্ড ভেঙে ক্লাসিকোর ইতিহাসে ১৭ বছর ১০৫ দিন বয়সী ইয়ামাল এখন সর্বকনিষ্ঠ গোলদাতা। তবে এই ম্যাচের বিভীষিকা ভেঙ্গে পরবর্তী ম্যাচে কতটা ঘুরে দাঁড়ান ভিনি – মদ্রিচরা সেটাই এখন দেখার বিষয়।