বিশ্ব ফুটবলে লিওনেল মেসির মত তারকাকে জন্ম দিয়েছেন তাঁরা। এই ক্লাবেই খেলে গিয়েছেন নেইমার থেকে ইনিয়েস্তার মত তারকা ফুটবলাররা। তবে একসময়ের সমীহ আদায় করার কাজ করলেও গতবছর পর্যন্ত যেন থমকে ছিল বার্সেলোনা ক্লাবের বিজয়রথ। তবে ব্যালন ডি অর অনুষ্ঠান শুরু হওয়ার আগেই এল ক্লাসিকোতে প্রতিপক্ষ রিয়াল মাদ্রিদকে ৪ গোলে পরাস্ত করেছে হান্সি ফ্লিকের দল (Barcelona’s saviours)। এছাড়াও বিশ্ব ফুটবলের অন্যতম প্রতিষ্ঠিত দল বায়ার্ন মিউনিখকেও হারিয়েছে তাঁরা। এই দুই জয়ের পর তারুণ্যে সুগঠিত বার্সার ভুয়সী প্রশংসা করেন প্রাক্তন বার্সা ডিফেন্ডার জেরাড পিকে।
হান্সি ফ্লিকের অধীনে বার্সার বদলে যাওয়ার পেছনে যে কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় কাজ করছে, তারুণ্যের ছোঁয়া তার অন্যতম। গত কয়েক মৌসুম ধরেই অবশ্য বার্সায় তারুণ্যের আধিপত্য দেখা যাচ্ছিল প্রবলভাবে। তাতেই সিংহভাগ সাফল্য এসেছে ক্লাবটিতে। তবে এই তরুণদের মধ্যেই বেশ কজন এখন বিভিন্ন পজিশনে বার্সাকে দারুণ দৃঢ়তা এনে দিয়েছেন। আসুন একঝলকে বিস্তারিত জানা যাক সেই তরুণদের সম্পৰ্কে (Barcelona’s saviours)।
১. লামিনে ইয়ামাল (উইঙ্গার)
গতকালই ব্যালন ডি’অরের মঞ্চে বর্ষসেরা তরুণ ফুটবলারের পুরস্কার পেয়েছেন তিনি। বয়স মাত্র ১৭ বছর হলেও এরই মধ্যে নিজেকে বিশ্বসেরা তারকাদের একজন হিসেবে প্রতিষ্ঠা করেছেন লামিনে ইয়ামাল (Lamine Yamal)। সর্বশেষ এল ক্লাসিকোতে রিয়াল মাদ্রিদ দুর্গ গুঁড়িয়ে দেওয়ার নেপথ্যেও ছিলেন তিনি। মাদ্রিদের ঘরের মাঠে গোল করার পাশাপাশি ভেঙেছেন ক্লাসিকোয় সর্বকনিষ্ঠ গোলদাতার রেকর্ডও। ইতিমধ্যে খেলার ধরন এবং ম্যাচের ওপর প্রভাবের কারণে অনেকে তাঁকে লিওনেল মেসির সঙ্গেও তুলনা করতে শুরু করেছেন। দেশের হয়েও ইউরোতে ছিলেন অনবদ্য। যে গতিতে এগোচ্ছেন তাতে ভবিষ্যতে বার্সার দিনবদলের অন্যতম সারথি হতে যাচ্ছেন লা মাসিয়া থেকে উঠে আসা এই স্প্যানিশ তারকা।
Barcelona’s youngsters delivered a stunning performance, schooling the Galácticos of Real Madrid in a dominant 4-0 victory.
Rising stars like Lamine Yamal and Alejandro Balde played crucial roles, with Yamal scoring and creating constant pressure, while Balde’s attacking runs… pic.twitter.com/9YhNN74K5w
— Oh So Super 🗞️ (@OhSoSuper) October 26, 2024
২. পাউ কুবারসি (সেন্টার ব্যাক)
সান্তিয়াগো বার্নাব্যুতে রিয়ালকে অফসাইডের ফাঁদে আটকে দেওয়ায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছিলেন বার্সা সেন্টারব্যাক পাউ কুবারসি। বয়স মাত্র ১৭ বছর হলেও রক্ষণে এরই মধ্যে দারুণ পরিপক্বতা দেখাচ্ছেন তিনি। এছাড়াও বার্সার কোচ হ্যান্সি ফ্লিকেরও অন্যতম ভরসার পাত্র তিনি। সদ্য এল ক্লাসিকোয় বিশেষত ফরাসি তারকা কিলিয়ান এমবাপ্পেকে অফসাইডে বোতলবন্দী করে রাখার ক্ষেত্রে কুবারসি দারুণ বুদ্ধিমত্তার পরিচয় দিয়েছেন। এছাড়া বায়ার্ন মিউনিখের বিরুদ্ধের ম্যাচেও ছিলেন প্রবলভাবে স্বচ্ছল। সব মিলিয়ে সমস্তকিছু বিচার করে দেখলেও তিনিও হর্তে পারেন বার্সার আগামীর সম্ভাবনা।
৩. ফেরমিন লোপেজ (মিডফিল্ডার)
বায়ার্নের বিরুদ্ধে ম্যাচে সেভাবে পারফর্ম করতে না পারায় এল ক্লাসিকোয় প্রথম একাদশে জায়গা পাওয়া নিয়ে সংশয়ে ছিলেন। কিন্তু ফ্লিক তাঁর ওপর ভরসা করেই তাঁকে শুরু থেকেই মাঠে নামান। নেমেই পেদ্রি ও কাসাদোকে নিয়ে মাঝমাঠ দারুনভাবে সামলেছেন তিনি। গোটা ম্যাচের পুরোভাগে খেলতে না পারলেও যেকোনো চ্যালেঞ্জ নেওয়ার সক্ষমতা যে তাঁর আছে, সেটা বুঝিয়ে দিয়েছেন লোপেজ। এছাড়াও ম্যান টু ম্যান মার্কিরংয়েও বেশ দক্ষতা দেখিয়েছেন লোপেজ। যে কারণেই আগামী দিনে জাভি-ইনিয়েস্তার জায়গাটি নিতে পারার সম্ভাবনা রয়েছে তাঁর।
সিএসকে থেকে আরসিবি, জেনে নিন আইপিএলের দলগুলি কোন কোন খেলোয়াড়কে ধরে রাখবে?
৪. মার্ক কাসাদো (মিডফিল্ডার)
২১ বছর বয়সী এই মিডফিল্ডার প্রতিনিয়ত মুগ্ধতা ছড়াচ্ছেন বার্সার হয়ে। ক্লাসিকোয় রাফিনিয়ার গোলে সহায়তাও করেছিলেন কাসাদো। জাভি হার্নান্দেজের অধীনে সেভাবে মূল্যায়িত না হলেও ফ্লিক এসেই কাসাদোকে সামনে নিয়ে আসেন। তাঁর খেলার ধরনের সাথে অনেকেই মিল পেয়েছেন বুস্কেতসের। তাই নিজের অনন্য পারফরম্যান্সের দৌলতে আগামী দিনে বার্সার স্বপ্নের কান্ডারি হয়ে উঠতাই পারেন তিনি।
সিএসকে থেকে আরসিবি, জেনে নিন আইপিএলের দলগুলি কোন কোন খেলোয়াড়কে ধরে রাখবে?
৫. পেদ্রি (মিডফিল্ডার)
জাভির অধীনে খেলতে শুরু করার পর থেকেই নিজেকে অন্যভাবে মেলে ধরতে থাকেন পেদ্রি। এখন পেদ্রিকে ছাড়া বার্সা দল যেন কল্পনাতীত। বার্সার মিডফিল্ডের ছন্দ তৈরির মূল কাজটা এখন তাঁর হাতেই। বয়স মাত্র ২১ হলেও, বল পায়ে পেলে মনে হয় অনেক অভিজ্ঞ একজন খেলোয়াড়। বার্সেলোনায় অভিষেকের পর থেকেই দলকে সহায়তা করার জন্য অনেক ম্যাচে দুর্দান্ত অবদান রেখেছেন তিনি। যদিও প্রথমদিকে তাঁকে নিয়ে কিছু শঙ্কা ছিল, অনেকেই সন্দেহ করেছিলেন তিনি কতদূর সফল হবেন। তবে নিজের পারফরম্যান্স দিয়েই সকল প্রশ্নের জবাব দিয়েছেন পেদ্রি। যেমন রিয়ালের বিপক্ষে ম্যাচে তাঁর চেয়ে বেশি পাস আর কেউ সম্পন্ন করতে পারেনি—৫৮টি পাসের মধ্যে ৫৩টিই নিখুঁতভাবে সম্পন্ন করেন তিনি।